নারায়ণগঞ্জ মেইল: আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নমনীয়তায় নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা বিশৃঙ্খলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রায় সময়ই নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ঝটিকা করছে। সর্বশেষ গত শনিবার গভীর রাতে কাশীপুরের ভোলাইল এলাকায় মশাল মিছিল করছে গডফাদার শামীম ওসমানের অনুসারিরা। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জে ৫৪টি হত্য মামলা হলেও এখনো পর্যন্ত মামলার আসামীদের গ্রেফতারে তেমন কোন অগ্রগতি নেই। আর এই সুযোগে এলাকায় ফিরতে শুরু করেছেন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা।
জানাগেছে, গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যায়। এরপরই নারায়ণগঞ্জে সাতটি থানায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ও আহতের ঘটনায় মামলা হতে শুরু করে। মামলার পর পর আইন শৃঙ্খলাবাহিনী অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেছিল। এতে কওে আওয়ামীলীগের সমর্থকরাও আত্মগোপনে চলে গিয়ে ছিল। তবে রহস্যজনক কারণে সেই পুরোদমে বন্ধ হয়ে গেছে। যার ফলে এলাকায় ফিরতে শুরু করছে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি কতিপয় বিএনপি নেতাদের সাথে আঁতাত করে আওয়ামীলীগের অনেক নেতাকেই এখন বিএনপির মিটিং মিছিলে দেখা যাচ্ছে।
গত বছরের পাঁচ আগস্টের পর দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়ে। এই সুযোগেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতারা। আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সারির নেতারাও দেশ ছেড়ে ভারত পালিয়েছেন। তবে আওয়ামীলীগ নেতাদের বন্ধ থাকায় শহরে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্র লীগসহ ওসমান পরিবারের সহযোগীদের। পাশিপাশি পাড়ামহল্লায় স্থানীয় বিএনপির নেতাদেও ম্যানেজ করে নিজ নিজ এলাকায় ফিরছেন আওয়ামীলীগ নেতারা। বিএনপি নেতাদের সাথে ব্যবসা ভাগাভাগি করে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
খোজঁ নিয়ে জানাগেছে, শীর্ষ নেতারা পলাতক থাকলেও শহর ও শহরতলী এলাকাগুলোতে আওয়ামীলীগের মাঠ পর্যায়ের নেতারা নিজ বাড়িতেই অবস্থান করছেন। বৈষম্য বিরোধী মামলার আসামী হয়েও ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রকাশ্যে। যারফলে পলাতক থেকেও নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে ওসমান পরিবার। ওসমান পরিবারের অনুসারি কয়েকজন ব্যবসায়ী কতিপয় বিএনপির নেতাদের ম্যানেজ করে শহরে দাপটের সাথে চলছেন। যদিও এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা।
বিশ্বস্ত একটি সূত্রে জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী মহল নিয়ন্ত্রণ রাখতে ওসমান পরিবারের প্রেসক্রিপশনে বিকেএমইএ’র সভাপতি করা হয়েছে মোহাম্মদ হাতেমকে। ওসমান পরিবারের অন্যমত অনুসারি হাতেমের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে ওসমান পরিবারের সাথে। শহরে ওসমান পরিবারের পক্ষে সম্প্রতি যে মিছিলগুলো হচ্ছে সেখানে আর্থিক সহযোগীতা করছেন হাতেম। হাতেমের মত অসংখ্য ওসমান পরিবারের অনুসারি সক্রিয় ভাবে কাজ করছেন।
এব্যাপারে বিএনপির ত্যাগী একাধিক নেতা জানান, পুলিশের গ্রেফতার অভিযান শিথিল থাকায় আওয়ামীলীগ নেতারা সক্রিয় হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। তারা সক্রিয় হয়ে নারায়ণগঞ্জকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। তাই দ্রুত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান জরুরী।
তবে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবী করা হচ্ছে, বৈষম্য বিরোধী মামলার আসামীদের গ্রেফতারে নিয়তিম অভিযান চলছে। অচিরেই এই অভিযান আরো জোরালো করা হবে।
