নারায়ণগঞ্জ মেইল: খুনি হাসিনা সরকারের চিহ্নিত গডফাদার শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমানের পালিত সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রায় সবাই এখন পলাতক। বেশিরভাগই দেশ ছেড়েছেন, কিছু দেশে থাকলেও গা ঢাকা দিয়ে আছেন। তবে এসব ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসীরা নারায়ণগঞ্জে তাদের অবৈধ সম্পদ গুলো বিক্রি করার পাঁয়তারা করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শামীম ওসমানের সহযোগী হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অবৈধ উপায়ে যে সম্পদ গড়েছেন তা স্থানীয় কিছু বিএনপি নেতাকর্মীর সহায়তায় হাত বদল করছেন বলে জানা গেছে। তবে এসব সম্পদ যারা কিনছেন তারা কম মূল্যে পাওয়ার লোভে ফাঁদে পা দিচ্ছেন কারণ জুলাই আন্দোলনে গণহত্যার অভিযোগে এসব আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। ফলে তাদের সকল সম্পত্তি আদালত বাজেয়াপ্ত করতে পারে। সুতরাং লোভে পড়ে যারা ফ্যাসিস্টদের সম্পত্তি ক্রয় করতে চাচ্ছেন তাদেরকে সতর্ক বাণী জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে , খুনি গডফাদার শামীম ওসমানের প্রধান সহযোগী ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল্লাহ বাদল, সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমানের শশুর ফজেউিিদ্দন লাভলু, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, সাবেক কাউন্সিলর মনিরুল ইসলাম সজল, কবির হোসেন, কামরুল হাসান মুন্না, আব্দুল করিম বাবু, শফিউদ্দিন প্রধানসহ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের প্রায় সকল নেতাই পলাতক। ৫ আগস্টের পর তাদের বাড়িঘর ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিষয় সম্পত্তি দখলে নিয়েছে একশ্রেণীর বিএনপির নামধারী সন্ত্রাসীরা। তারা এসব ফ্যাসিস্টদের সাথে আঁতাত করে তাদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে এসব বিষয় সম্পত্তি ভোগ দখল করছেন এবং বিক্রির পাঁয়তারা করছেন।
অনুসন্ধান বলছে, সারাদেশের আলোচিত সন্ত্রাসী শামীম ওসমানের ছিল এক বিরাট সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে গত ১৫ বছর নারায়ণগঞ্জের মানুষের উপরে তিনি অত্যাচার নির্যাতন জুলুমের স্ট্রিম রুলার চালিয়েছেন। তার এই কাজে যারা সহযোগিতা করেছেন তারাও চাঁদাবাজি লুটপাট আর ভূমিদস্যুতা করে নারায়ণগঞ্জে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে খুনি হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর সাথে সাথে শামীম ওসমান এবং তার সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের প্রায় সবাই পালিয়ে গেছে কিন্তু রয়ে গেছে তাদের অবৈধ উপায়ে গড়ে তোলা সম্পদের পাহাড়গুলো। ঝড়ের দিনে আম কুড়ানোর মতো করে সে সময় সুযোগ সন্ধানীরা এসব বাড়িঘর বিষয় সম্পত্তি ব্যবসা-বাণিজ্য দখলে নিয়ে নিয়েছে। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসার পর সেসব ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নেতারা দখলকারীদের সাথে যোগাযোগ করে সম্পত্তি বিক্রি করে দেয়ার চেষ্টা করছেন বলে খবর পাওয়া গেছে এবং অর্ধেক মূল্যে কিনে নেওয়ার লোকও জোগাড় হয়ে গেছে।
তবে সূত্র মতে, শামীম ওসমানের এই সন্ত্রাসী বাহিনীর সকলেই একাধিক গণহত্যা মামলার আসামি। তাই তাদের সম্পত্তি দখল কিংবা বিক্রির চেষ্টা যারা করবে তারাও একসময় বিপদে পড়বে। কারণ বিচার প্রক্রিয়া চলার সময় আদালত তাদেরকে না পেলে তাদের বিষয় সম্পত্তি ক্রোক করে সরকারি হেফাজতের নিয়ে নেবে। তখন যারা দখল করেছেন এবং ক্রয় করবেন উভয়কেই আইনের আওতায় আনা হতে পারে।