নারায়ণগঞ্জ মেইল: বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার অবস্থানে অবস্থানে এখনও অনড় আছে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি। একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে রাজপথে লাগাতার কর্মসূচি পালন করছে দলটির নেতাকর্মীরা। সরকারবিরোধী আন্দোলনের পাশাপাশি নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় নেতাকর্মীদেও ঐক্যবদ্ধ করছেন বিএনপি নেতারা। দলের যে কোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তৈরী থাকার অংশ হিসেবে নির্বাচনের প্রস্তুতিটাও মাথায় রাখছেন তারা।
সারাদেশের মতো নারায়ণগঞ্জ বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মাঝেও শুরু হয়ে গেছে নির্বাচনী আসন গুছানোর কাজ। রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে নিয়মিত উপস্থিত হয়ে তৃণমূলকে ঐক্যবদ্ধ করার পাশাপাশি বিভিন্ন ইউনিটের কমিটিগুলো গঠন করে সাংগঠনিক দক্ষতা বৃদ্ধিতেও কাজ করছেন।
নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে রয়েছেন দুই হেভিওয়েট প্রার্থী বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান মনির মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু। কাজী মনিরুজ্জামান ইতিপূর্বে দুবার এ আসন থেকে দলীয় মনোনয়নে নির্বাচন করেছিলেন। তবে এবার মনোনয়ন পেতে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বীতার মুখে পরতে হবে তাকে। কারন অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি সক্রিয় দেখা যাচ্ছে দিপু ভূইয়াকে। জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কমিটিগুলোতে দেখা যাচ্ছে দিপু ভূইয়ার একচ্ছত্র আধিপত্য। রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও নিয়মিত আসছেন। তাই এ দুজনের যে কোনো একজনের ভাগ্যে জুটবে দলীয় মনোনয়ন এ কথা নিশ্চিত করে বলাই যায়।
নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে বিএনপির দলীয় প্রতীকে মনোনয়নের পেতে কাজ করছেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ ও থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমন। নজরুল ইসলাম আজাদ এ আসনে গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। এবারো তিনি মনোনয়ন পেতে কাজ করে যাচ্ছেন। তবে পারিবারিকভাবে আড়াইহাজারে বিশাল জনপ্রিয়তার কারনে স্থানীয়ভাবে মাহমুদও রহমান সুমনেরও রয়েছে বিশাল গ্রহনযোগ্যতা। তাই বিনা বাঁধায় তিনিও ছেড়ে দেবেন না।
নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়নের জন্যে নির্বাচনী মাঠ গুছাচ্ছেন থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান। গত নির্বাচনেও তিনি ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেছিলেন। এবারো তিনি চাইবেন দলীয় মনোনয়ন। কিন্তু কমিটি গঠনে ব্যাপক অনিয়ম আর স্বেচ্ছাচারিতার কারনে সোনারগাঁ বিএনপিতে মান্নান বিরোধী বলয় বেশ সোচ্চার হয়ে উঠেছে। যে কোনো সভা সমাবেশে এখন থানা বিএনপির ব্যানারে আলাদা আলাদা শোডাউন হচ্ছে। তাছাড়া সোনারগাঁয়ের অঙ্গ সংগঠনগুলোও নেই মান্নানের পাশে। তাই দলীয় মনোনয়নে মান্নান বিরোধী মতের কেউ চলে এলেও অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।
নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে বিএনপির মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন সাবেক সাংসদ ও জেলা বিএনপির আহবায়ক মো: গিয়াসউদ্দিন। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মো: শাহ আলম ইতিমধ্যেই বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেছেন। আর জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদেও অবস্থাও বেশ নাজুক। বিগত সময়ে কমিটি বানিজ্যের অভিযোগে নিজের লোকজনের কাছেই তিনি বিতর্কিত হয়ে গেছেন।
নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। এ আসনের সাবেক সাংসদ এডভোকেট আবুল কালাম শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ্য। তাই সক্রিয় রাজনীতি করছেন না দীর্ঘদিন যাবত। তাই এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান গুরুত্বপূর্ন এই আসনের জন্যে তার নির্বাচনী প্রস্তুতি সেরে রাখছেন।