জেলা যুবদলে চলছে টাকার খেলা!

নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আওতাধীন বিভিন্ন ইউনিট কমিটি গঠনের প্রকৃয়া চলছে। দলকে মাঠ পর্যায়ে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে রাজপথের ত্যাগী নেতাকর্মীদের কমিটিতে মূল্যায়ন করার কথা থাকলেও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন তার একক কতৃত্ব খাটিয়ে অযোগ্য নেতাকর্মীদের কমিটিতে সুযোগ করে দিতে চাইছেন। এক্ষেত্রে খোকন প্রয়োজনীয় স্থানগুলিতে দেদারসে টাকা খরচ করছেন তার পছন্দের লোকদের কমিটিতে নিয়ে আসতে। ফলে দীর্ঘদিন পরে যুবদলের তৃণমূল পর্যায়ে কমিটি গঠনের যে আমেজ সৃষ্টি হয়েছিলো, তা আর পরিলক্ষিত হচ্ছে না। মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন আর অযোগ্যরা চলে আসছে যুবদলের কমিটিতে। সেক্রেটারী গোলাম ফারুক খোকনের টাকার কাছে অসহায় হয়ে পরেছে সাধারণ নেতাকর্মীরা।


সূত্রে প্রকাশ, দীর্ঘ এক যুগেরও বেশী সময় ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করে করে মামলা হামলায় জর্জরিত হলেও নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন সর্বদাই থাকেন নিরাপদে। সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে কখনোই সক্রিয় না থাকা সত্বেও জেলা যুবদলের সেক্রেটারী পদ ঠিকই বাগিয়ে আনেন খোকন। নেতাকর্মীরা মনে করেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপুর কারনেই খোকনের মতো নিস্ক্রিয় লোকও যুবদলের সেক্রেটারী হয়। বিশিষ্ট ধনকুবের দিপু ভূইয়ার কল্যাণে পদ পাওয়া থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মামলা হামলা থেকেও নিরপদে থাকেন জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন।


নেতাকর্মী সূত্রে জানা যায়, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার আগেও রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে খুব একটা দেখা যেতো না সেক্রেটারী গোলাম ফারুক খোকনকে। তখনকার রাজপথের অনেক বাঘা বাঘা যুবদল নেতা এ পদের দাবীদার থাকলেও সবাইকে অবাক করে দিয়ে গোলাম ফারুক খোকনকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষনা করে কেন্দ্র। সালাউদ্দিন মোল্লা, সাদেকুর রহমান সাদেক, আশরাফুল ইসলাম রিপন বা সহিদুর রহমান স্বপনকে পিছনে ফেলে জেলা যুবদলের সেক্রেটারী পদ পেয়ে যান খোকন। আর এ কারশিমার পেছনের কারিগর হলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য দিপু ভূইয়া। দিপু ভূইয়ার আশির্বাদেই যুবদলের নেতৃত্বে চলে আসেন গোলাম ফারুক খোকন।


এদিকে কমিটি গঠিত হওয়ার পর থেকে বেশীরভাগ কর্মসূচিতেই তিনি অংশ নেননি। নারায়ণগঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে শুধুমাত্র দলের প্রতি ভালোবাসার টানে ছুটে আসেন নেতাকর্মীরা অথচ সংগঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও খোকন মিটিং মিছিলে থাকেন অনুপস্থিত, তৃণমূলের কোন খোঁজ খবর রাখেন না। পুলিশের হামলা মামলাকে উপেক্ষা করে রাজপথে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন করা জেলা যুবদলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা তাদের সেক্রেটারীর গা বাঁচানোর রাজনীতির কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে কোনদিনই সক্রিয় ছিলেন না খোকন, শুধুমাত্র টাকার জোরে কেন্দ্রে লবিং করে জেলা যুবদলের সেক্রেটারীর পদ বাগিয়ে নিয়েছেন তিনি। তার মতো স্বার্থপর নেতার জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক পদে থাকার কোন যোগ্যতা নেই, তিনি আমাদের মা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চান না।
এক যুগেরও বেশী সময় সরকার বিরোধী আন্দোলন করে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির শীর্ষ নেতা থেকে শুরু তৃণমূল কর্মী পর্যন্ত একের পর এক রাজনৈতিক মামলার আসামী হয়ে একাধীকবার জেল খাটলেও জেলা যুবদলের সেক্রেটারী মামলা হামলা জেলা কারাগার থেকে সর্বদাই ছিলেন নিরাপদে। নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীদের সপ্তাহের কোন না কোনদিন মামলার হাজিরা দিতে নারায়ণগঞ্জের আদালতপাড়ায় দেখা মিললেও এখানেও অমাবস্যার চাঁদ খোকন। আদালতের বারান্দায় আইনজীবীদের পিছু পিছু ঘুরতে হয়না তাকে।


এমনকি বিজয় দিবসে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির শোভাযাত্রায় পুলিশের সাথে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের মামলায়ও নেই জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের নাম। আর এর পিছনেও সেই দিপু ভূইয়ার আশির্বাদের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিচ্ছেন নেতাকর্মীরা। তাদের মতে, দিপু ভূইয়ার কল্যানেই রাজনীতিতে টিকে আছেন খোকন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ