নারায়ণগঞ্জ মেইল: সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০দফা বাস্তবায়ন ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিতে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসাবে নগরীতে গণমিছিল কর্মসূচি পালন করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি।
২৪ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এই গণ মিছিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন ফারুক। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা গিয়াসউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণমিছিলে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের প্রায় সকল নেতাকর্মী কিন্তু সেখানে দেখা মিলেনি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদের।
১০ দফা দাবি আদায়ের প্রথম কর্মসূচিতে অনুপস্থিত মামুন মাহমুদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা জানান, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি গঠনের পর থেকেই বিভক্তির সৃষ্টির পাঁয়তারা করছেন মামুন মাহমুদ। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি কর্মসূচি আলাদাভাবে পালন করেছেন তিনি। দলের এই ক্রান্তিকালে যখন সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তখন দলের মাঝে বিভাজন সৃষ্টির এই অপচেষ্টাকে ভিন্ন চোখে দেখছে নেতাকর্মীরা। অনেকে মনে করছেন সরকারি দলের প্রেসক্রিপশনে বিএনপিতে বিভক্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছেন মামুন মাহমুদ।
এদিকে বিএনপির গণমিছিলে মামুন মাহমুদকে না দেখে অনেক নেতাকর্মী মনে করছেন ২৪ ডিসেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যোগ দিতে গেছেন তিনি। তা না হলে কেন্দ্রীয় নেতার উপস্থিতিতে আয়োজিত গণ মিছিলে তিনি কেন উপস্থিত হলেন না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাত্র একমাস হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র নতুন আহ্বায়ক কমিটির বয়স আর এর মাঝেই কমিটিতে বিভক্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জেলা বিএনপির ব্যানারে আলাদা আলাদা কর্মসূচি পালন হতে দেখা যাচ্ছে। গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে এমনটি প্রথম দেখা যায়। এরপর ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের বিজয় র্যালিও আলাদাভাবে পালিত হয়েছে। মাত্র ৯ জনের কমিটিতে এই বিভক্তি কোনভাবেই কাম্য নয় বলে মনে করছে নেতাকর্মীরা। আর এই বিভক্তির পেছনে যারা রয়েছে তাদেরকে চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল।
সূত্র প্রকাশ, গত ১৫ নভেম্বর সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ গিয়াস উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে এবং জেলা যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম ফারুক খোকনকে সদস্য সচিব করে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র ৯ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটির ঘোষণার পর থেকে দু একটি কর্মসূচিতে নয়জনকে একসাথে দেখা গেছে তবে আলাদা কর্মসূচি পালন তখনও হয়নি। গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে বর্তমান কমিটির প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র আলাদা ব্যানার নিয়ে শোডাউন করেন। যদিও জেলা বিএনপির আহবায়ক মোঃ গিয়াসউদ্দিনের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা সেদিন ঢাকায় বিভাগীয় সমাবেশে অংশ নিয়েছিলো কিন্তু মামুন মাহমুদ চলমান কমিটির সদস্য হয়েও সেই শোডাউনে অংশ না নিয়ে আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করেন। আর এর মধ্য দিয়ে শুরু হয় জেলা বিএনপির ব্যানারে আলাদা কর্মসূচি পালন।