বিএনপির সক্রিয়রাই মামলার টার্গেট

নারায়ণগঞ্জ মেইল: দীর্ঘদিন রাজনৈতিক মামলা হামলা থেকে বেঁচে ছিলেন নাারায়ণগঞ্জ বিব্এনিিপর নেতাকর্মীরা। তবে অধাগামী ১০ ডিসেম্বও বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সম্মেলনকে ঘিওে আবারেরা মামলার বেড়াজালে আটকে যাাচেচ্ছন তারা। ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জের সাতটি থানায় দায়ের করা হয়েছে নাশকতার মামলা আর এসব মামলায় টার্গেট করা হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের রাজপথের সক্রিয় নেতাকর্মীদেরকে।

জানা যায়, আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাংচুর, ককটেল উদ্ধার, মশাল মিছিল ও বিস্ফোরণের অভিযোগ এনে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নামে নারায়ণগঞ্জের সদও, ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ, বন্দর, আড়াইহাজার ও রূপগঞ্জ থানায় পৃথক পৃথক ভাবে নতুন করে ৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাগুলোতে আসামীর সংখ্যা ৭৭৪ জন।
গত ১৭ নভেম্বর সোনারগাঁয়ের পিরোজপুর ইউনিয়নের আষাঢ়িয়ার চর এলাকায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনায় মেঘনা শিল্পাঞ্চল শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হালিম বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় আসামি করা হয় সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ ও তার ছোট ভাই পিরোজপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল জলিলসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ্য করে আরো ১৫ জনকে।
আর গত ১৯ নভেম্বর কাচঁপুর ও মেঘনা ব্রীজের নামফলক ভাঙচুর ও পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় থানায় বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে জিডি করেছিলো সওজ। এতে পুলিশি তদন্ত চলমান।

গত ১৯ নভেম্বর ২৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের কার্যালয় ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনায় ছাত্রলীগ কর্মী মো. সোহেল বাদী হয়ে মামলা করেন। এতে ২৪ জনের নাম উল্লেখ্য সহ আরো ৩০জনকে আসামী করা হয়। এ মামলায় ৪জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ২২ নভেম্বর মহানগর বিএনপি নেতা জাকির খানের পক্ষে আদালতপাড়ায় সমর্থকদের মিছিল ও সড়কে বিস্ফোরণ ঘটানোর অভিযোগে বিএনপির ৩৪ জনের নাম উল্লেখ ও ২৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে এসআই শাহাদাত হোসেন বাদী হয়ে বিস্ফোরক আইনে মামলায় দায়ের করেন। এ মামলায় কোন গ্রেপ্তার না হয়নি।

গত ২৬ নভেম্বর শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা নাশকতার প্রস্তুতি নিতে এক নেতার বাসায় গোপন বৈঠক করছেন বলে খবর পায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ৷ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিদ্ধিরগঞ্জের সিআইখোলা এলাকায় অভিযান চালালে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আসামিরা পালিয়ে যায়৷ পালিয়ে যাবার সময় আসামিদের ধরতে গিয়ে ধস্তাধস্তিতে পুলিশের এক সদস্য আহত হন৷পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও আত্মরক্ষার্থে ১১ রাউন্ড গুলি ছোড়ে পুলিশ৷ পরে রবিবার সকালে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক সানোয়ার হোসেন বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করেন।
পুলিশের মামলায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল হাই রাজু (৫৫), সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমএ হালিম জুয়েল (৬০), মহানগর যুবদলের সদস্যসচিব মমতাজ উদ্দিন মন্তু (৫৫), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি নেতা টিএইচ তোফা (৫১), তৈয়ব আলীসহ (৫১) ২১ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে৷ ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি বিস্ফোরিত ককটেলের অংশবিশেষ ও ৪টি অবিস্ফোরিত ককটেল আলামত হিসেবে জব্দ করেছে। তবে এই মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।

একইদিন শনিবার ২৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় মদনপুর আড়াইহাজার সড়কে ছাত্রদল একটি মশাল মিছিল বের করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে আসামিরা একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়৷ ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ছাত্রদলের ১জনকে আটক করে৷ এ সময় ৬২টি মশাল উদ্ধার করা হয়৷পরে রোববার সকালে আড়াইহাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মামুন মিয়া বাদী হয়ে নাশকতার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন৷ বিশেষ ক্ষমতা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা ওই মামলাতেও বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে৷ মামলায় আড়াইহাজার যুবদল নেতা জহিরুল ইসলাম, ছাত্রদলের সভাপতি জুবায়ের রহমান জিকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি বাচ্চু মিয়াসহ ৪৩ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাত ৫০-১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্রে বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের উপর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দাবী করে মামলা করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে চারজনকে। ওই মামলার এজাহারে এও উল্লেখ আছে আত্মরক্ষার্থে পুলিশ ৮ রাউন্ড ফাঁকা গুলিও ছুড়েছে।
২৯ নভেম্বর মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার এসআই কাজী ফেরদৌস বাদী হয়ে ১৪ নাম উল্লেখ ও ৭০-৮০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ওই মামলাটি দায়ের করে।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, শহরের মিশনপাড়ায় হোসিয়ারি সমিতির পশ্চিম পাশের রাস্তায় নাশকতার উদ্দেশে সোমবার রাত ১২টা ৫ মিনিটে বিএনপি নেতাকর্মীরা গোপন বৈঠক করছে এমন সংবাদে পুলিশ সেখানে যায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ককটেল ছুড়তে থাকেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ আট রাউন্ড গুলি ছোড়ে।

এসময় বিএনপি নেতা আহমেদুল হাসান, হাসান আহেম্মদ ইকবাল, খোকন সাহা, সাখাওয়াত হোসেন জ্যাকিকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরিত ককটেলের অংশ, চারটি লোহার রড ও আটটি কাঠের তক্তা উদ্ধার করে পুলিশ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ