মুকুলকে বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাওয়ার আহবান না:গঞ্জ বিএনপির

নারায়ণগঞ্জ মেইল: বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালামকে অবাঞ্ছিত ঘোষনা এবং পিঠের চামড়া তুলে নেয়ার হুমকি দাতা আতাউর রহমান মুকুলকে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা। দলের একজন দায়িত্বশীল নেতা সম্পর্কে এ ধরনের অশালীন মন্তব্য কোনোভাবেই গ্রহনযোগ্য হতে পারেনা বলেও জানিয়েয়ছেন তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ভারপপ্রাপ্ত আহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবি নারায়ণগঞ্জ মেইলকে বলেন, তৈমূর সাহেবতো বহিস্কৃত নেতা। মুুকুল সেখানে কেনো গেলো। আবদুস সালাম সাহেবকে দল একটি সম্মানজনক স্থান দিয়েছে। আমাদের সকলের উচিত সে সম্মান রক্ষা করে চলা। মুকুল কেনো এ ধরনের অশালীন বক্তব্য দিলেন তা আমার বোধগম্য হচ্ছে না। রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত এ ধরনের বক্তব্যের আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেইসাথে এই বক্তব্য প্রত্যাহার করে সালাম সাহেবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানাই।

একই বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ নারায়ণগঞ্জ মেইলকে বলেন, এ ধরনের অশালীন বক্তব্য কখনো সমর্থনযোগ্য নয়। এতে করে তিনি দলকে ছোট করলেন। সালাম সাহেবতো আমাদের দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন, দলের চেয়ারপার্সন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রতিনিধিত্ব করছেন। এ বক্তব্যের মাধ্যমে তাদেরকেও ছোট করা হয়েছে। কাউকে ব্যক্তিভাবে আক্রমন করে বক্তব্য দেয়াকে আমি কখনো সমর্থন করিনা এবং আমি নিজেও কখনো তা কখনো করিনা।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আাহবায়ক কমিটির সদস্য মাসুকুল ইসলাম রাজিব এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মেইলকে বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আবদুস সালাম ভাইয়ের চামড়া তুলে নিবে এবং নারায়ণগঞ্জে উনাকে অবাঞ্চিত ঘোষনা যারা করেছে তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, শুধু তোমরা না সাথে তোমরা যাদের এজেন্ট, তাদেরকেও সাথে নিয়ে নিও। তারপরেও যদি উনার একটি পশম স্পর্শ করতে পারো, তাহলে নারায়নগঞ্জে জাতীয়তাবাদী সৈনিকেরা হাতে চুরি পরে এই নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে চলে যাবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম সজল নারায়ণগঞ্জ মেইলকে বলেন, এটাতো পুরোপুরি বেয়াদবের মতো আচরণ হয়েছে। বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম সম্পর্কে এ ধরনের বক্তব্য দেয়া মানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়া। আর আমরা তারেক রহমানের সম্মানহানীকর বক্তব্য কোনোদিনও মেনে নেবোনা। আতাউর রহমান মুকুলতো আওয়ামীলীগের দালাল। গত সংসদ নির্বাচনে সে আওয়ামীলীগের এজন্ট হিসেবে কাজ করেছে এবং বিএনপির নেতাকর্মীদের মেরে কেন্দ্র থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। এ ধরনের অনেক প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে। আমরা নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের পক্ষ থেকে মুকুলের এ ধরনের রুচিহীন বক্তব্যে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে তার এ বক্তব্য প্রত্যাহার করে নি:শর্ত ক্ষমা প্রার্থনার আহবান জানাই। অন্যথায় যুবদলের নেতাকর্মীরা এর দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবে।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক ও মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সাহেদ আহমেদ এ বিষয়েয় তার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ মেইলকে বলেন, এ ধরনের বক্তব্য হাস্যকর ও দু:খজনক। আমরা কারো কাছ থেকেই এ ধরনের বক্তব্য আশা করিনা। সালাম ভাইকে ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক টিমের দায়িত্ব দিয়েছেন আমাদের অভিভাবক তারেক রহমান। আর তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব হলো আমাদের সকলের। আমরা থাকতে সালাম ভাইকে অবাঞ্ছিত ঘোষনা করবে আর পিঠের চামড়া তুলে নিবে, তা কোনোদিনও সম্ভব নয়। এটা মুকুল সাহেবের রাজনৈতিক ষ্ট্যান্টবাজি।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মেইলকে বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় নেতা সম্পর্র্কে এ ধরনের বক্তব্য আমরা আশা করিনা। নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি নিয়ে যে জটিলতা তৈরী হয়েছে তার জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের দোষারোপ করা উচিত নয়। এর জন্য দায়ি আমরা নারায়য়ণগঞ্জ বিএননপির লোকজন। কমিটি ঘোষনার পরে সকলের সাথে সমন্বয় করতে ব্যর্থ হয়েছি আমরা। এর জন্য কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম ভাইকে নিয়ে এ ধরনের বাজে মন্তব্য করা উনার উচিত হয়নি। নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা তার কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য আশা করেনা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়য়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জ মেইলকে বলেন, আতাউর রহমান মুকুলতো আওয়ামীলীগের দালাল। গত ১৫ বছরে তাকে কোনদিন বিএনপির মিটিং মিছিলে দেখা যায়নি। বরং সরকারী দলের নেতাদের সাথে মিলে বিএনপির নেতাকর্মীদের মামলা হামলা দিয়ে নির্যাতন করেছে।। গত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের পক্ষ হয়ে কাজ করেছেন এবং বিএনপির এজেন্টদের মেরে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছেন। তার এতো সাহস হয় কি করে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করার। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে এ ধরনের ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানাই। তানাহলে তার নিজের পিঠের চামড়াই থাকবেনা।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আরিফুর রহমান মানিকের সাথে যোগাযোগ ককরা হলে তিনি অসুস্থ্য আছেন বলে বক্তব্য দিতে অপারগতা পপ্রকাশ করেন।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিবএনপির ৪১ সদস্যের আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করা হয়। এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেনকে আহবায়ক এবং এডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে সদস্য সচিব করে কমিটির অনুমোদন দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সেই আহ্বায়ক কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন বিতর্কিত নেতা আতাউর রহমান মুকুল। বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা এডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের বাসভবনে গিয়ে পদত্যাগ করার ঘোষণা দেন তিনি। সেই সাথে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালামকে নারায়ণগঞ্জে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন এবং সালামের পিঠের চামড়া তুলে নেয়া হবে বলে হুমকি প্রদান করেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ