নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করা হয়েছে। ৫৯২ সদস্যের বিশাল কমিটিতে সভাপতি পদে এসেছে নতুন মুখ। আংশিক কমিটির সভাপতি মশিউর রহমান রনি জেলা যুবদলের সদস্য সচিব পদ পাওয়ায় জেলা ছাত্রদল থেকে তাকে বিদায় নিতে হয়েছে। তবে এ বিদায় একজন সফল ছাত্রনেতার বিদায়। নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের ইতিহাসে অন্যতম সফল সভাপতি হিসেবে মশিউর রহমান রনির নাম চিরভাস্বর হয়ে থাকবে-এমনটাই মনে করছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
সূত্রে প্রকাশ, ২০১৮ সালের ৫ জুন মশিউর রহমান রনিকে সভাপতি এবং খায়রুল ইসলাম সজিবকে সাধারণ সম্পাদক করে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের ১২ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষনা করা হয়েছিলো। এর আগের কমিটিতে যুগ্ম আহবায়ক থাকা মশিউর রহমান রনি জেলা ছাত্রদলের সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে তৃণমূলকে সংগঠিত করে ছাত্রদলের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু তার এই পথচলা মোটেই মসৃন ছিলো না। তার নিজ দল থেকেই পদে পদে বাঁধার সৃৃষ্টি হতে থাকে। একেবারে অনভিজ্ঞ সাধারণ সম্পাদক নিয়ে এই কঠিন পথ পাড়ি দিয়েছেন মশিউর রহমান রনি, পৌছে গেছেন অনন্য এক উচ্চতায়, সেইসাথে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলকেও পৌছে দিয়েছেন সফলতার শীর্ষে। শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে জেলা ছাত্রদলের ইউনিট কমিটিগুলো ঘোষনা করেছেন রনি, যা আগে কোন জেলা কমিটি করে দেখাতে পারেনি। তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত ছড়িয়ে দিয়েছেন ছাত্রদলের নেতৃত্ব। আর এসবের পুরো কৃতিত্বই সভাপতি মশিউর রহমান রনির প্রাপ্য বলে মনে করেন ছাত্রদল নেতাকর্মীরা।
মশিউর রনির নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে এসেছে। রাজধানী ঢাকা কিংবা নিজ জেলা নারায়ণগঞ্জ- সবখানেই জেলা ছাত্রদলের ছিলো উজ্জল পদচারনা। শত শত নেতাকর্মী নিয়ে রনির মিছিল প্রতিপক্ষ শিবিরে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছে। এ জন্য তাকে মাশুলও দিতে হয়েছে সবচেয়ে বেশী। পুলিশের মামলা হামলা আর নির্যাতনের শিকার হয়েও রাজপথকে ভুলে যাননি এই লড়াকু ছাত্রনেতা। বারবার কারাবরণ করেও আবার বীরদর্পে ফিরে এসেছেন তার প্রিয় রাজপথে। সবশেষে জেলা ছাত্রদলের একটি পূর্নাঙ্গ কমিটি তৈরী করে দিয়ে হাসি মুখে রাজসিক বিদায় নিয়েছেন এই উদীয়মান রাজনীতিবীদ।
বিদায় বেলায় অনুুভুতির কথা জানতে চাইলে মশিউর রহমান রনি নারায়ণগঞ্জ মেইলকে বলেন, ছাত্রদলের রাজনীতির মাধ্যমেই আমার পথচলার শুরু। দীর্ঘ ২২ বছর এই সংগঠনের সাথে ছিলাম। ওয়ার্ড পর্যায় থেকে রাজনীতি করে করে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হয়েছিলাম। ছাত্রদলের সভাপতি হওয়ার পরে আমাদের আওতাধীন সকল উপজেলা থানা ইউনিয়ন এমনকি ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটিগুলোও দিয়ে দিতে পেরেছি। যা অতীতে কখনো সম্ভব হয়নি। ছাত্রদলের সংগঠনকে গতিশীল করতে আমাকে অনেক সময় অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে যাতে অনেকে খুশি হলেও কেউ কেউ আমার বিরাগভাজন হয়েছেন কিন্তু সব কিছুই আমাকে করতে হয়েছে সংগঠনের স্বার্থে। পরিশেষে বলবো আজকে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদল যে অবস্থায় আছে, যদি পরবর্তী প্রজন্ম তাদের নীতি আদর্শ ধরে রেখে নেতৃত্ব দিতে পারে তবে এর সুফল অনেকদুর বিস্তৃত হবে। ছাত্রদল আমার প্রাণের সংগঠন, আমি যতদুরেই যাইনা কেনো ছাত্রদলের প্রতি আমার ভালোবাসা চিরদিন অটুট থাকবে।