ঐক্যবদ্ধ জেলা যুবদল, বিশৃঙ্খল মহানগর

নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জে যুবদলের দুইটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি রয়েছে এবং বিগত দিনে সরকার বিরোধী আন্দোলনে জেলা ও মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীরা রাজপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কমিটি ঘোষনার পর থেকেই জেলা যুবদলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে দলীয় ও জাতীয় কর্মসূচি পালন করে আসছে। তাদের মাঝে দেখা যায়নি কোন বিভাজন। তাদের সে ঐক্য করোনাকালীণ সময়েও অটটু রয়েছে এবং বর্তমানে ইউনিট কমিটি গঠন নিয়েও দেখা দেয়নি কোন প্রকার জটিলতা। তবে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের বিভক্তি স্পষ্ট ছিলো কমিটি ঘোষনার পর থেকেই। সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি চালিয়ে গেছেন যুগ্ম সম্পাদক সাগর প্রধান। তবে বিভক্তি থাকলেও রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে তাদেরকে কখনো কার্পণ্য করতে দেখা যায়নি। বিশেষ করে মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ তার সফল নেতৃত্বের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের রাজপথে সবচেয়ে সফল ইউনিট হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন মহানগর যুবদলকে।


কিন্তু করোনার পাঁচ মাসে পুরো দৃশ্যপটই পাল্টে গেছে। এই সময়ে ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ করেছে খোরশেদের মহানগর যুবদল। খোরশেদ নিজে যেমন যুবদলকে সামনে আনেননি, তেমনিভাবে সামনে আসেননি মহানগর যুবদলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউই। শুধুমাত্র যুগ্ম সম্পাদক সাগর প্রধান বিচ্ছিন্নভাবে কিছু করার চেষ্টা চালিয়েছেন, বাকীরা যে যার মতো নিজের নিরাপত্তা নিয়ে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখেছেন। আর তাই করোনাকালীণ সময়ে কাউন্সিলর খোরশেদ যতখানি সফল, ততখানিই ব্যর্থ তার নেতৃত্বাধীণ মহানগর যুবদল।


সূত্রে প্রকাশ, চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে প্রকট রূপ নেয়ার সময় থেকেই সামনের সারিতে থেকে লড়াই করতে থাকেন নাসিক কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। জনগনকে সচেতন করার জন্যে লিফলেট বিতরণ, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ, কর্মহীন দরিদ্র জনগোষ্ঠির মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ আর মৃতদেহ দাফর সৎকার করে রীতিমত হইচই ফেলে দেন খোরশেদ। সরকারী দলের নেতারা পর্যন্ত খোরশেদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। স্থানীয় মিডিয়ার পাশাপাশি জাতীয় মিডিয়াতেও নিয়মিত প্রচার হতে থাকে খোরশেদের বিজয়গাঁথা। যেনো করোনার উছিলায় জিরো থেকে হিরো বনে গেলেনে কাউন্সিলর খোরশেদ।
করোনাকালীণ সময়ে কাউন্সিলর খোরশেদ যেমন বেমালুম ভুলে গেছেন মহানগর যুবদলকে, তেমনিভাবে মহানগর যুবদলের বাকী নেতারাও ছিলেন গর্তে লুকিয়ে। নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সিনিয়র সহ সভাপতি মনোয়ার হোসেন শোখন ও সাধারণ সম্পাদক মমতাজউদ্দিন মন্তুসহ কোন মহানগর যুবদল নেতাকেই দেখা যায়নি করোনা যুদ্ধে। এই দীর্ঘ পাঁচ মাস যেনো নিজেদের বাঁচাতেই ব্যস্ত ছিলেন তারা। যে জনগনের দোহাই দিয়ে রাজনীতি করেন, সে জনগনের কথা একবারের জন্যেও তাদের মনে পরেনি। করোনা মোকাবেলায় তাই চরমভাবে ব্যর্থ নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদল।


অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের নেতাকর্মীরা সভাপতি সহিদুল ইসলাম টিটু, সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন ও যুগ্ম সম্পাদক সহিদুর রহমান স্বপনের নেতৃত্বে করোনাকালীন সময়েও ঐক্যবদ্ধ ছিলেন এবং সংগঠনের ব্যানারে নানা কর্মসূচি পালন করেছেন। এখন ইউনিট কমিটি গঠনের বেলায়ও সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে মিটিং করে একটি গ্রহনযোগ্য কমিটি গঠনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। শুরু থেকেই ঐক্যবদ্ধ জেলা যুবদল এখনো ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে। আর প্রথম থেকেই বিভক্ত মহানগর যুবদল করোনাকালীন সময়ে হয়ে পরেছে চরম বিশৃঙ্খল।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ