পরিবারের শংকা, ফের গ্রেপ্তার হতে পারেন রনি

নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি আবারো গ্রেপ্তার হতে পারেন বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন তার স্বজনরা। ছাত্রদলের ইউনিট কমিটি গঠনে অনেক সিনিয়র বিএনপি নেতার অনৈতিক আবদার না রাখায় রনিকে কমিটি পর্যন্ত আটকে রাখার ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে জানান তারা। ইতিমধ্যেই রনির গ্রামের বাড়ি রূপগঞ্জে পুলিশ রনির খোঁজে অভিযান চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।


জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনির পিতা গোলাম মোস্তফা জানান, ছাত্রদলের কমিটিতে নিজেদের লোক রাখতে অনেক সিনিয়র বিএনপি নেতা রনিকে চাপ দিচ্ছেন। অনেকে আবার অযোগ্যদের নাম প্রস্তাব করছেন কিন্তু রনি বিএনপির ভাপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা মেনে যোগ্যদের নামই কমিটিতে রাখার জন্যে সুপারিশ করেছে। আর তাই সেসব নেতাদের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছেন রনি। তারা শেষ চেষ্টা হিসেবে রনিকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করিয়ে কিছুদিন আটকে রেখে কমিটিগুলো নিজেদের আয়ত্বে আনার চেষ্টা করতে পারে। ইতিমধ্যে তার আভাসও মিলেছে। আমাদের রূপগঞ্জের বাড়িতে পুলিশ রনির খোঁজে অভিযান চালিয়েছে। যদিও রনির সব মামলায় জামিনে রয়েছে। তাই আমরা মনে করছি কুচক্রি মহলের ষড়যন্ত্র হতে পারে এটা।

জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ বিএনপির কিংমেকারদের হানা এবার ছাত্রদলের ইউনিট কমিটিরগুলোর দিকে বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূল ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। আর এসব কিংমেকারদের কারনে দীর্ঘদিন রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে থেকেও কমিটিতে পদ বঞ্চিত হতে হচ্ছে অনেক ত্যাগী নেতাকর্মীদের। ফলে কিংমেকারদের কবল থেকে ছাত্রদলের কমিটিকে রক্ষার আবেদন জানিয়েছেন তারা।


সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ ২৮ বছর পর তৃণমূলের ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হন ফজলুর রহমান খোকন এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ইকাবাল হোসেন শ্যামল। তারা দায়িত্ব গ্রহণের পর সারা দেশে ছাত্রদল ঢেলে সাজানোর প্রস্তুতি গ্রহন করেন। সংগঠনটির সাংগঠনিক অভিভাবক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রত্যেক বিভাগে ৪ সদস্য বিশিষ্ট সাংগঠনিক টিম গঠন করে দেন। কেন্দ্র থেকে সেই সাংগঠনিক টিম সারাদেশে সফর করে এবং তৃণমূল থেকে নেতা কর্মীদের মতামত লিপিবদ্ধ করে দপ্তর সেলে জমা দেন। বর্তমানে এসব তথ্য যাচাই বাছাই চলছে।


এরাই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের অধীনস্থ ইউনিট কমিটিগুলোও গঠনের প্রকৃয়া শুরু করেন নেতাকর্মীরা। কিন্তু এখানেও এসে হানা দেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির হেভিওয়েট সব নেতারা যারা প্রায় সব কমিটিতেই নিজেদের প্রভাব রাখার জন্যে অনৈতিক হস্তক্ষেপ করে থাকেন। বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এড. তৈমূর আলম খন্দকার, বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও রূপগঞ্জের ধনকুবের দিপু ভূইয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও আড়াইহাজার থেকে গত নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম আজাদ ও আড়াইহাজার বিএনপির সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমন তাদের আধিপত্য বজায় রাখতে ছাত্রদলের কমিটিতে নানাভাবে হস্তক্ষেপ করছেন বলে জানা গেছে।


এদিকে দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটির নেতাকর্মীরা মামলা হামলায় জর্জরিত হয়ে দিশেহারা শুধুমাত্র বিএনপির রাজনীতি করার কারনে। অথচ রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা এসব ত্যাগী নেতাকর্মীরা কমিটি গঠনের সময় হলেই আড়ালে যান। তাদের এই কৃতিত্বকে বেমালুম ভুলে যান নেতারা। তাদের বদলে ঐসব কিংমেকারদের পছন্দের বিতর্কিতরা চলে আসেন ফ্রন্টলাইনে। এবারে ছাত্রদলের ইউনিট কমিটি গঠনের বেলায়ও এমনটি হচ্ছে বলে অভিযোগ বেশীরভাগ ছাত্রদল নেতাকর্মীর। ফলে কিং মেকারদের ছত্রছায়া থেকে বের হয়ে বিএনপির ভ্যানগার্ড ছাত্রদলের কমিটি সাজানোর আহবান জানিয়েছে এসব মাঠ পর্যায়ের ত্যাগী নেতাকর্মীরা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ