মান্নানের ডুয়েল পলিটিক্স, ফের অশান্ত সোনারগাঁ বিএনপি

নারায়ণগঞ্জ মেইল: সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপি’র কমিটি নিয়ে বিতর্ক যেনো থামছেই না। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি কর্তৃক ঘোষিত ১০টি ইউনিট কমিটির মধ্যে প্রায় সবগুলোরই অনুমোদনের কাগজ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে কিন্তু সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপি’র নবগঠিত কমিটির শুধুমাত্র দুই জনের নাম জানা গেছে। এতে করে নেতাকর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে চরম অসন্তোষ। তাছাড়া দীর্ঘদিন আন্দোলন-সংগ্রামে অনুপস্থিত আওয়ামী লীগ ঘেঁষা মোশারফ হোসেনকে সদস্যসচিব হিসেবে মানতেই পারছে না তৃণমূল। আর এজন্য তারা দায়ী করছেন নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক আজহারুল ইসলাম মান্নানকে। তাদের মতে মান্নানের ডুয়েল পলিটিক্সের কারণে ফের অশান্ত হয়ে উঠেছে সোনারগাঁ বিএনপি।

গত ২১ জানুয়ারি সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপি’র ৩১ সদস্যের আহবায়ক কমিটি ঘোষণার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ। নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক করা হয় সাবেক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম মান্নানকে। তার সাথে সদস্য সচিব হয়েছেন সোনারগাঁ বিএনপি’র বিতর্কিত নেতা মোশারফ হোসেন। আর এতেই ফুঁসে ওঠে সোনারগাঁ বিএনপির নেতাকর্মীরা। মোশারফকে সদস্যসচিব হিসেবে কোনভাবেই তারা মেনে নিতে পারছেন না।

স্থানীয় সূত্রে প্রকাশ, মোশারফ হোসেন বিগত সময়ে সরকারি দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে নৌকার পক্ষে ভোট প্রার্থনাকারী বিতর্কিত বিএনপি নেতা। আর এই মোশারফ হোসেনকে সোনারগাঁ থানা বিএনপির সদস্য সচিব বানিয়েছেন আজহারুল ইসলাম মান্নান। গত ১৫ বছর ক্ষমতার বাইরে বিএনপি। এ সময়ে আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে কোনদিন দেখা মিলেনি মোশাররফের। তাছাড়া পুলিশের মামলা হামলায়ও নাম নেই এই বিএনপি নেতার। মূলত সরকারি দলের সাথে আঁতাত করে চলায় সকল কিছু থেকে নিরাপদে থেকেছেন তিনি। আর এরকম একজন সুবিধাবাদী নেতাকে সোনারগাঁ বিএনপির নেতৃত্বে নিয়ে আসায় মান্নানের প্রতি ক্ষুব্ধ সোনারগাঁ বিএনপি’র তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

নেতাকর্মীদের মতের আজহারুল ইসলাম মান্নান সোনারগাঁ বিএনপিতে রাজত্ব করছেন খুব বেশিদিন হয়নি। ইতিপূর্বে সোনারগাঁ বিএনপিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী রেজাউল করিম এবং উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার আবু জাফর। এ দুই সিনিয়র নেতা রাজনীতির মাঠে কর্তৃত্ব ধরে রাখতে না পারলেও পুরো সোনারগাঁ জুড়েই রয়ে গেছে তাদের অসংখ্য অনুসারী। আর এদেরকে মাইনাস করতেই উঠেপড়ে লাগেন আজহারুল ইসলাম মান্নান। পুরো কমিটির নিজস্ব লোকদের দিয়ে সাজাতে প্রায় অর্ধকোটি টাকা খরচ করেন তিনি।

এদিকে অনেকদিন যাবত গুঞ্জন ছিলো মান্নানের সাথে সোনারগাঁ থানা বিএনপি’র নেতৃত্বে আসবেন কাঁচপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি সেলিম হক রুমি। এ লক্ষ্যে তাদের মধ্যকার একসময়ের বিরোধপূর্ণ সম্পর্কের ইতি ঘটেছিলো এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক অনুষ্ঠানে তাদের দুইজনকে একসাথে দেখা যেতো সবসময়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে মান্নানের আস্থা হারান সেলিম হক। বিপরীতে আওয়ামী লীগ ঘেঁষা বিএনপি নেতা মোশাররফ হোসেন সেলিম হকের জায়গা দখল করে নেন। আর এতে করে নেতাকর্মীদের কাছে প্রকাশ হয়ে যায় মান্নানের ডুয়েল পলিটিক্স।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ