সাখাওয়াতকে টপকানোই এখন তৈমুরের বড় চ্যালেঞ্জ!

নারায়ণগঞ্জ মেইল: দলীয় নির্দেশ অমান্য করে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হয়েছেন অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। এর জন্য তিনি শাস্তিও পেয়েছেন। প্রথমে জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক পদ থেকে তাকে সরানো হয়েছে, এরপর বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পদ কেড়ে নেয়া হয়েছে। তবুও তিনি আশায় বুক বেঁধে ছিলেন সিটি নির্বাচনে বিজয়ী হলে হাই কমান্ডের মন গলতেও পারে। তিনি আবার সসম্মানে স্বপদে বহাল হতে পারবেন- এই আশায় দিন গুণতে ছিলেন। তৈমুরের এই স্বপ্নের পেছনে ছোট একটি কারণ ছিলো। অলিখিতভাবে একটি গুঞ্জন নারায়ণগঞ্জের আকাশে বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছিল আর তা হলো নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী সাংসদ একেএম শামীম ওসমানের সমর্থন রয়েছে তার পেছনে। শামীম ওসমান শিবিরের সকল ভোট তৈ আলম খন্দকারের বাক্সে যাবে। সে প্রত্যাশাতেই দিন কাটাচ্ছিলেন তিনি।

কিন্তু সরকারদলীয় মেয়র প্রার্থী ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভী তৈমুরের গোমর ফাঁস করে দেন। গত কয়েকদিন যাবত গণমাধ্যমে তিনি উচ্চস্বরে বলে আসছেন তৈমুর আলম খন্দকার শামীম ওসমানের প্রার্থী‌ আইভীর এই বক্তব্যের কঠিন প্রতিক্রিয়া হয় আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য এবং নাসিক নির্বাচনে নৌকার প্রধান সমন্বয়ক জাহাঙ্গীর কবির নানক নারায়ণগঞ্জের একটি সভায় দাড়িয়ে শামীম ওসমানকে ইঙ্গিত করে বলেন, নৌকার হচ্ছে শেখ হাসিনার মার্কা। নৌকার বিরোধিতা করবেন আবার নিজে নৌকা চাইবেন তা হবেনা, ভবিষ্যতে আর নৌকা পাবেন না। নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরাও শামীম ওসমান ও তৈমুর আলমের গোপন সম্পর্কটি সহজভাবে মেনে নিতে পারেনি। তাই দলের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত সবখানেই প্রচন্ড চাপে ছিলেন শামীম ওসমান।

অবশেষে সেই চাপ কাটিয়ে ওঠেন শামীম ওসমান। বিচক্ষণ রাজনীতিবিদের মতো সংবাদ সম্মেলন করে নৌকার প্রার্থী ডা সেলিনা হায়াত আইভীর পাশে থাকার ঘোষণা দেন তিনি। সেই সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারকে হুঁশিয়ারি জানিয়ে বলেন, নৌকা ডুবানোর চেষ্টা করবেন না। নারায়ণগঞ্জে কোনো অবস্থাতেই নৌকা ডুববে না।

শামীম ওসমানের এই আচরণে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তৈমুরের। জয়েয় চিন্তা বাদ দিয়ে পরাজয়ের ব্যবধান নিয়ে ভাবনা দেখা দেয় তার মনে। কারণ গত সিটি নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ৯৬ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। আর সাখাওয়াত ছিলেন তৈমুর আলম খন্দকারের শীষ্য। তাই সাখাওয়াতের চেয়ে কম ভোট পেলে লজ্জায় মাথা কাটা যাবে তৈমুরের। এখন তাই সাখাওয়াতকে টপকানোই তৈমুরের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত দুই সিটি নির্বাচনের তথ্য ঘেঁটে দেখা গেছে, ২০১১ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ১ লাখ ৮০ হাজার ৪৮ ভোট পেয়েছিলেন আইভী। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী শামীম ওসমান পেয়েছিলেন ৭৮ হাজার ৭০৫ ভোট। এরপর ২০১৬ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে আইভী পান ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬১১ ভোট। যদিও ওই নির্বাচনে শামীম ওসমান দলীয় প্রার্থী হিসেবে আইভিকে সমর্থন দিয়েছিলেন। আর আইভীর প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াত পান ৯৬ হাজার ৪৪ ভোট।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ