নারায়ণগঞ্জ মেইল: মহামারি করোনা ভাইরাস সারা দুনিয়ার জন্যে অভিশাপ হিসেবে দেখা দিলেও কারো কারো জন্যে তা আশির্বাদ হয়ে এসেছে। করোনাকে পুঁজি করে নিজের রাজনীতির মাঠ গুছিয়ে নেয়ার কাজটি সেরে নিচ্ছেন অনেক রাজনীতিবীদ। তাদেরই একজন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। করোনা বীর বা বীর বাহাদুর উপাধী নিয়ে ইতিমধ্যেই নারায়ণগঞ্জের গন্ডি পেরিয়ে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পরেছে খোরশেদের পরিচিতি। করোনা মোকাবেলায় সফল এই রাজনীতিবীদ সর্বত্রই নিজেকে কাউন্সিলর হিসেবেই পরিচয় দিচ্ছেন, স্বপ্ন দেখছেন আগামীতে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচন করার। আর এর মাঝ দিয়েই ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ করেছে খোরশেদের মহানগর যুবদল। খোরশেদ নিজে যেমন যুবদলকে সামনে আনেননি, তেমনিভাবে সামনে আসেননি মহানগর যুবদলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউই। শুধুমাত্র যুগ্ম সম্পাদক সাগর প্রধান বিচ্ছিন্নভাবে কিছু করার চেষ্টা চালিয়েছেন, বাকীরা যে যার মতো নিজের নিরাপত্তা নিয়ে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখেছেন। আর তাই করোনাকালীণ সময়ে কাউন্সিলর খোরশেদ যতখানি সফল, ততখানিই ব্যর্থ তার নেতৃত্বাধীণ মহানগর যুবদল।
সূত্রে প্রকাশ, চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে প্রকট রূপ নেয়ার সময় থেকেই সামনের সারিতে থেকে লড়াই করতে থাকেন নাসিক কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। জনগনকে সচেতন করার জন্যে লিফলেট বিতরণ, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ, কর্মহীন দরিদ্র জনগোষ্ঠির মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ আর মৃতদেহ দাফর সৎকার করে রীতিমত হইচই ফেলে দেন খোরশেদ। সরকারী দলের নেতারা পর্যন্ত খোরশেদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। স্থানীয় মিডিয়ার পাশাপাশি জাতীয় মিডিয়াতেও নিয়মিত প্রচার হতে থাকে খোরশেদের বিজয়গাঁথা। যেনো করোনার উছিলায় জিরো থেকে হিরো বনে গেলেনে কাউন্সিলর খোরশেদ।
করোনাকালীণ সময়ে কাউন্সিলর খোরশেদ যেমন বেমালুম ভুলে গেছেন মহানগর যুবদলকে, তেমনিভাবে মহানগর যুবদলের বাকী নেতারাও ছিলেন গর্তে লুকিয়ে। নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সিনিয়র সহ সভাপতি মনোয়ার হোসেন শোখন, সাধারণ সম্পাদক মমতাজউদ্দিন মন্তু ও সাংগঠনিক সম্পাদক রশিদুর রহমান রশুসহ কোন মহানগর যুবদল নেতাকেই দেখা যায়নি করোনা যুদ্ধে। এই দীর্ঘ পাঁচ মাস যেনো নিজেদের বাঁচাতেই ব্যস্ত ছিলেন তারা। যে জনগনের দোহাই দিয়ে রাজনীতি করেন, সে জনগনের কথা একবারের জন্যেও তাদের মনে পরেনি। করোনা মোকাবেলায় তাই চরমভাবে ব্যর্থ নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদল।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে ক্ষমতা ছাড়ার পর দীর্ঘ ১৪ বছর আর ক্ষমতার স্বাদ পায়নি বিএনপি আর সে থেকেই রাজপথে সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন দলটির নেতাকর্মীরা। নারায়ণগঞ্জের রাজপথে সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে বিগত সময়ে সবচেয়ে উত্তাল অবস্থানে ছিলো নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদল। তৎকালীণ আহবায়ক মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের নেতৃত্বে মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীরা পুলিশের হামলা মামলাকে উপেক্ষা করে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। নারায়ণগঞ্জ বিএনপি ও এর কোন অঙ্গ সংগঠনও যদি কর্মসূচিতে না আসতো, খোরশেদের মহানগর যুবদল ঠিকই রাজপথ উত্তপ্ত করে তুলতো আর এ জন্য সবচেয়ে বেশী মামলা হামলার শিকারও হতে হয়েছে মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীদের। সে সময়কার আহবায়ক মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ একাধীকবার পুলিশের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং জেলও খেটেছেন বহুবার। খোরশেদের মতো মহানগর যুবদলের প্রতিটি নেতাকর্মী জেল জুলুম হুলিয়া মাথায় নিয়ে রাজপথে তাদের উপস্থিতি অব্যহত রেখেছিলো।