নারায়ণগঞ্জ মেইল: যেকোনো সময় চলে আসতে পারে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহবায়ক কমিটি। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের জল্পনা-কল্পনা। বিশেষ করে আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিব পদে কারা আসতে পারেন, তা নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা এখন নেতাকর্মীদের মাঝে।
কেন্দ্রীয় যুবদলের একটি বিশ্বস্ত সূত্র থেকে জানা গেছে, মহানগর যুবদলের আসন্ন আহ্বায়ক কমিটির চূড়ান্ত আলোচনায় রয়েছেন মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সজল, মহানগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মমতাজ উদ্দিন মন্তু, সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাগর প্রধান, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রশিদুর রহমান রশু ও মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি শাহেদ আহমেদ।
জানা গেছে, মহানগর যুবদলের পদ পাওয়ার আশায় মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম সম্পাদক পদ ছেড়ে দিয়েছেন মনিরুল ইসলাম সজল। কথিত আছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র কিংমেকার নজরুল ইসলাম আজাদ সজলকে মহানগর বিএনপি’র শীর্ষ পদে আনার জন্য জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। আর তাই যুবদলের রাজনীতিতে সক্রিয় না থেকেও মহানগর যুবদলের শীর্ষ পদের আলোচনায় রয়েছেন সজল।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের বিলুপ্ত কমিটির সাধারন সম্পাদক ছিলেন মমতাজউদ্দীন মন্তু। আসন্ন কমিটিতে আহ্বায়ক পদে আসার জোর সম্ভাবনা রয়েছে মন্তুর। এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় যুবদল সভাপতি নিরবের সাথে মন্তুর রয়েছে ব্যবসায়ীক ঘনিষ্ঠতা। আন্দোলন-সংগ্রামে অনুপস্থিত থাকলেও কেন্দ্রীয় সভাপতির সাথে ঘনিষ্ঠতার সূত্র ধরে চূড়ান্ত আলোচনায় রয়েছেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের বিলুপ্ত কমিটির নেতাদের মধ্যে নিজ কর্মগুণে পরবর্তী কমিটিতে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাগর প্রধান। সাবেক সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের কমিটিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজপথে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছিলেন সাগর। সেই সাথে রাজনৈতিক মিটিং-মিছিলের পাশাপাশি করোনাকালীন সময় দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য এক উচ্চতায়। তাছাড়া অতিমারির দুর্যোগের গত দেড় বছরে মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ নানা জনহিতকর কাজে অংশ নিলেও সেখানে যুবদলকে হাইলাইট করেননি। “টিম খোরশেদ” বানিয়ে শুধু নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে সাগর প্রধান ছিলেন ব্যতিক্রম। তিনিও জনগনের সেবায় আত্মনিয়োগ করেছিলেন এবং সামনে ধরে রেখেছিলেন মহানগর যুবদলের ঝান্ডা। আর এ কারণেই পরবর্তী কমিটিতে কোন প্রকার লবিং ছাড়াই শীর্ষ পদে আলোচনায় ভালোভাবেই রয়েছেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের বিলুপ্ত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ছিলেন রশিদুর রহমান রশু। এর আগে মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। ছাত্র রাজনীতিতে থাকাকালীন সময় থেকেই রাজপথে দুরন্ত নেতাদের একজন ছিলেন তিনি। সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের জেল জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বহুবার। আর তাই মহানগর যুবদলের আসন্ন কমিটিতে শীর্ষ পদের আলোচনায় রয়েছেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সবচেয়ে সফল সভাপতির নাম শাহেদ আহমেদ। দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনিই একমাত্র সভাপতি তিনি তার অধীনস্থ সবগুলো ইউনিট কমিটি গঠন করে দিয়ে যেতে পেরেছেন। তাছাড়া সাহেদের সময় মহানগর ছাত্রদল একটি ইউনিট হিসেবে কাজ করেছে। ছিলনা কোন দ্বন্দ কোন্দল আর গ্রুপিং। ফলে মহানগর যুবদলের পরবর্তী কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে আলোচনায় রয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে সভাপতি করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের ৫ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষনা করে কেন্দ্রীয় যুবদল। কমিটির বাকী সদস্যরা হলেন সিনিয়র সহ সভাপতি মনোয়ার হোসেন শোখন, সাধারণ সম্পাদক মমতাজউদ্দিন মন্তু, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাগর প্রধান ও সাংগঠনিক সম্পাদক রশিদুর রহমান রশু।
আংশিক কমিটি ঘোষনার ৫ মাস পর খোরশেদকেই সভাপতি রেখে ২০১ সদস্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করা হয়। চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি বাতিল করে দেয়া হয় মহানগর যুবদলের কমিটি।