নারী কেলেঙ্কারিতে প্রশ্নবিদ্ধ করোনাবীর!

নারায়ণগঞ্জ মেইল: গত এক বছরে করোনায় মারা যাওয়া লাশ দাফন কাফনের ব্যবস্থা করে দেশব্যাপী আলোচিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ করোনাবীর উপাধী পেয়েছিলেন। সেই সাথে পেয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জের আপামর মানুষের সহানুভুতি-শ্রদ্ধা, আর তাতে তৈরী হয়েছিলো তার বিশাল জনপ্রিয়তা। খোরশেদের অনেক শুভাকাঙ্খিতো তাকে সিটি কর্পোরেশনের মেয়রও বানিয়ে ফেলছিলেন। কিন্তু বিধি বাম, আকষ্মিক এক নারী ঘটিত বিষয়ে এখন তীব্র চ্যালেঞ্জের মুখে এই করোনাবীরের অস্তিত্ব। সাইদা শিউলী নামক একজন ব্যবসায়ীর সাথে খোরশেদের গোঁপন প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে দুজনের পাল্টাপাল্টি ফেসবুক লাইভ এখন নারায়ণগঞ্জের টক অব দ্যা সিটি।

জানা যায়, নারায়ণগঞ্জে বসবাসরত সাইদা শিউলী নামে এক নারীর ব্ল্যাকমেইলিংয়ের শিকার হচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। এই অভিযোগ করে খোরশেদ দাবি করেছেন, ওই নারী তাকে বিয়ে করার জন্য ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছেন। এমনকি তার স্ত্রী-সন্তানকেও হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। গত শনিবার রাতে ফেসবুক লাইভে এসে এসব কথা বলেন খোরশেদ। এসময় তার স্ত্রীর তার পাশে ছিলেন। খোরশেদ ফেসবুক লাইভে হেনস্তার শিকার হচ্ছেন দাবি করে কেঁদে ফেলেন।

খোরশেদ আরও দাবি করেন, এরই মধ্যে ওই নারী তাকে বিয়ে করার জন্য গাড়িতে করে কাজি নিয়ে তাঁর বাসায় এসেছিলেন। তবে এসব কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে তাকে বোঝানো হয়। এরপরও তিনি উচ্চপদস্থ বিভিন্ন ব্যক্তিদের নাম ব্যবহার করে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি এও হুমকি দিয়েছেন যে, পাসপোর্টে খোরশেদের নাম স্বামী হিসেবে ব্যবহার করবেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে মেসেঞ্জারের স্ক্রিনশট মানুষকে দেখিয়ে বিভিন্ন রকম দাবি করতে থাকেন তিনি।

ওই নারীর পরিচয় দিতে গিয়ে খোরশেদ বলেন, তাঁর নাম সাইদা আক্তার। এরই মধ্যে তার তিনটি বিয়ে হয়েছে। তিনি ব্যবসায়ী। তার দুই ছেলে-মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। এক মেয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ে। বিভিন্ন উচ্চপদস্থ লোকের সঙ্গে তার পরিচয় আছে। তিনি নিজেকে বিসিএস ক্যাডার পরিচয় দিয়ে মানুষকে জিম্মি করেন। মানুষের সঙ্গে ভালো ভালো কথা বলে বিভিন্ন স্ক্রিনশটকে কেন্দ্র করে তাদের ব্যবহার করার চেষ্টা করেন।

শনিবার রাতে সস্ত্রীক নিজের ফেসবুকে লাইভে এসে এমনটাই দাবি করেছেন খোরশেদ ও তার স্ত্রী। এ সময় আবেগাপ্লুত হয়ে খোরশেদ কয়েক দফা ডুকরে কেঁদে ওঠেন এবং প্রশাসন ও রাষ্ট্রের কাছে পরিবারের নিরাপত্তা দাবি করেছেন। ফেসবুক লাইভে খোরশেদের পাশেই ছিলেন তার স্ত্রী আফরোজা খন্দকার লুনা। লাইভের শেষের দিকে তিনিও কথা বলেন এবং তার স্বামী ও পরিবারের নিরাপত্তা দাবি করেন রাষ্ট্রের কাছে।

এদিকে খোরশেদের এ অভিযোগের ঠিক পরের দিন রবিবার ফেসবুক লাইভে এসে খোরশেদের অভিযোগের কড়া জবাব দেন সাইদা শিউলি নামের সে ব্যবসায়ী মহিলা। নারায়ণগঞ্জের কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদে আমাকে বিয়ে করেছে এটা এক হাজার ভাগ সত্য, দু’একদিনের মধ্যে দেশে ফিরে সব প্রমাণ দেবেন বলে জানান সাইদা শিউলি। এ সংক্রান্ত কাগজপত্র তার কাছে আছে। বর্তমানে তিনি ব্যাবসায়িক কাজে দেশের বাইরে আছেন। দেশে এসেই তিনি সাংবাদিকদের সামনে এসব কাগজপত্র নিয়ে হাজির হবেন। উল্টো তিনি হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে দাবি করেন। তার তিন সন্তান যাতে এ নিয়ে সামাজিকভাবে নাজেহাল না হয়, এ ব্যাপারে সবার সদয় দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ