নারায়ণগঞ্জ মেইল: বিএনপির আইনজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার কমিটি গঠনকল্পে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে অঘোষিতভাবে অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ও অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান অনুগামীদের দুটি প্যানেল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠিতব্য ৫টি পদের মধ্যে একটিতেও জয়ী হতে পারেনি তৈমূর আলম খন্দকার অনুগামী কোন প্রার্থী।
এছাড়াও তৈমূর আলম খন্দকারের সঙ্গে একজোট হয়েছিলেন মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম। নারায়ণগঞ্জ বিএনপির শীর্ষ এই দুই নেতা একজোট হয়েও সাখাওয়াত হোসেন খানের প্যানেরের কাউকেই পরাজিত করতে পারলেন না। তৈমূর আলম খন্দকার জনে জনে ফোন করেও ভোট আদায় করতে পারলেন না। অন্যদিকে সাখাওয়াত হোসেন খান ব্যস্ত ছিলেন নির্বাচন পরিচালনার কাজে। তবুও তৈমূর অনুগামীদের ভরাডুবি ঘটলো।
ফলে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় তৈমূর আলম খন্দকারের রাজনীতির কবর রচনা হয়ে গেল। অনেক আগেই এখানকার রাজনীতি থেকে তৈমূর আলম খন্দকারের অস্তিত্ব সংকটে পড়েছিল। মুলত যোগ্য নেতৃত্ব ও সিনিয়র আইনজীবীদের অবজ্ঞা করে সকলের মাঝে অগ্রহণযোগ্য আইনজীবীদের প্রার্থী করায় তার এমন ভরাডুবি ঘটেছে মনে করছেন আইনজীবীরা। একই সঙ্গে বিএনপির সিনিয়র আইনজীবীদের বাদ দিয়ে জুনিয়র কিছু আইনজীবীর মতামতকে অগ্রাধিকার দিয়ে আদালতপাড়ার রাজনীতিতে টিকে থাকার লড়াইয়ে নামার কারনে তৈমূর আলম খন্দকারের অস্তিত্ব বিলিনের পথে চলে গেল।
৯ ডিসেম্বর বুধবার নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় এই সম্মেলনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে তৈমূর আলম অনুগামীদের প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্ধিতা করে সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ভুঁইয়া পেয়েছেন ১২৪ ভোট, সেক্রেটারি পদে অ্যাডভোকেট আজিজ আল মামুন পেয়েছেন ৯১ ভোট, সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট সীমা সিদ্দিকী পেয়েছেন ১১২ ভোট, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মোল্লা ১১৫ ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট আলী হোসাইন পেয়েছেন ১১৬ ভোট।
অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান অনুগামী প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির পেয়েছেন ১৪৭ ভোট, সেক্রেটারি পদে অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জাকির পেয়েছেন ১৬৯ ভোট, সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট আজিজুল হক হান্টু পেয়েছেন ১৫৯ ভোট, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধান পেয়েছেন ১৪৫ ভোট ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট একেএম ওমর ফারুক নয়ন ১৫৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
এ ছাড়াও এককভাবে সাধারণ সম্পাদক সম্মেলনে ভোটের লড়াইয়ে করেছেন অ্যাডভোকেট সুমন মিয়া। তিনি পেয়েছেন ১০ ভোট।
নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৩০৪ জন আইনজীবী। ভোট প্রদান করেছেন ২৭৬ জন আইনজীবী। নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভুঁইয়া ও অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান।
নির্বাচনে পর্যবেক্ষনে এসেছিলেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও ঢাকা বিভাগীয় টিমের প্রধান ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দীন খোকন। আদালতপাড়ায় সক্রিয় ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার।