নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের যা কিছু অর্জন তার সবকিছুই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কাছ থেকে পাওয়া। বিএনপি একজন আপাদমস্তক রাজনীতিবিদ হিসেবে খোরশেদ এর সুনাম ছিল কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত। বিশেষ করে সরকারবিরোধী আন্দোলন সংগ্রামের খোরশেদ এর নেতৃত্বে মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীরা যে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলো। তার ফলস্বরূপ নারায়ণগঞ্জের গন্ডি পেরিয়ে জাতীয় পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়েছিল খোরশেদের অবদান, আর এ কারণেই পরপর তিনবার বিএনপির সমর্থনে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তিনি। বিএনপিকে ভালোবেসে পুলিশ ও সরকারি দলের বহু নির্যাতন, হামলা মামলা মুখ বুজে সহ্য করেছেন, তবু কোনদিন বিএনপিকে ভুলে থাকেন নি।
কিন্তু কি থেকে কি হয়ে গেল, বিশ্বব্যাপী মহামারী রূপ নেয়া করোনাভাইরাস এর প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকেই বদলে যেতে থাকেন বিএনপির খোরশেদ। বিএনপিকে বাদ দিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন। করোনার সুযোগ নিয়ে জনগণের সেবার উসিলায় নিজেকে জাহির করতে থাকেন, হয়ে যান করোনা বীর। গঠন করেন একটি দল, নাম দেন টিম খোরশেদ। দীর্ঘ ছয় মাস লাশ দাফন করা সহ করোনায় দুর্গতদের নানা প্রকার সাহায্য সহযোগিতা করছেন খোরশেদ কিন্তু সেখানে কোথাও বিএনপির পরিচয় দিচ্ছেন না তিনি। করোনার ছয় মাসে বিএনপি কিংবা যুবদলের ব্যানারে একটি অনুষ্ঠানও আয়োজন করেননি খোরশেদ। মে বিএনপি তাকে এতকিছু দিলো, আজকের খোরশেদ তৈরি করলো, সেই বিএনপিকেই বেমালুম ভুলে গেলেন খোরশেদ। বিএনপিতে অনীহা চলে এলো খোরশেদের। আর এ কারণেই কেন্দ্রীয় যুবদলের শীর্ষ নেতাদের কাছে খোরশেদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে ফেটে পড়েন মহানগর যুবদলের সিনিয়র নেতারা।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলে একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করে একের পর এক নিয়ম বহির্ভূত কার্যক্রম পরিচালনা অভিযোগ সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের বিরুদ্ধে। এর জন্যে গত কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় সভাপতি সেক্রেটারীর কাছেও তাকে নাজেহাল হতে হয়েছে। যুবদলের সভাপতি খোরশেদ গত ৬ মাসে যুবদলের ব্যানারে একটি কর্মসূচিও পালন করেননি বরং টিম খোরশেদ নাম দিয়ে নিজেকে হাইলাইট করার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। এর কারনে কেন্দ্রীয় যুবদল নেতারা তার কাছে কৈফিয়ত চাইলে তিনি তার সদুত্তর দিতে পারেননি। এছাড়াও যুবদলের ইউনিট কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে যোগ্যতার কোন মূল্যায়ন না করে তার অনুগতদের দিয়ে কমিটি সাজানোর পায়তারা করছেন বলেও কেন্দ্রের কাছে অভিযোগ রয়েছে খোরশেদের বিরুদ্ধে। এ কারনে কেন্দ্রে জমা দেয়া কমিটির তালিকা বাতিল করে দেয়া হয় এবং পুনরায় কেন্দ্র থেকে ফরম দেয়া হয় সকল পদ প্রার্থীদের মাঝে বিতরণ করার জন্রে এবং নির্দেশনা দেয়া হয় সুপার ফাইভের সকলকে নিয়ে সকলের সাথে আলোচনা করে তা বিতরণের জন্যে। কিন্তু এবারেও কেন্দ্রের নির্দেশনার কোন তোয়াক্কাই না করে খোরশেদ একাই সেই ফরম বিতরণের উদ্যোগ নেন তার নিজ বাড়িতে। এ বিষয়ে সুপার ফাইভের তিনজন সিনিয়র সহ সভাপতি মনোয়ার হোসেন শোখন, সাধারণ সম্পাদক মমতাজউদ্দিন মন্তু ও সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাগর প্রধানের সাথে কোন আলোচনাই করেননি।
ফরম বিতরণের জন্যে নিজ অনুগত নেতাকর্মীদের নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন খোরশেদ। এ অনুষ্ঠানে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের আহবায়ক প্রার্থী মঞ্জুরুল আলম মুসাকে ডেকে আনেন খোরশেদ। সেখানে উপস্থিত নারায়ণগঞ্জের চিহ্নিত পরিবহন সন্ত্রাসী বোরহানসহ ৫/৬ জন অতর্কিত হামলা চালায় মুসার উপরে। এ সময় সভাপতি খোরশেদ সেখানে উপস্থিত থাকলেও তিনি নিরব ভূমিকা পালন করেন।