নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর-বন্দর) আসনের চারবারের সাংসদ ও প্রয়াত জাতীয় পার্টির (জাপা) সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম নাসিম ওসমানের ৬৮তম জন্মদিন আজ। ১৯৫৩ সালের এই দিনে তিনি জন্মগ্রহণ করেন তিনি ছিলেন শামসুজ্জোহা দম্পতির প্রথম সন্তান।
১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তখন নাসিম ওসমান পালিয়ে ভারতে চলে যান। সেখানে তিনি গেরিলা যুদ্ধ প্রশিক্ষণ শেষ করে দেশে ফিরে এসে যুদ্ধ করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিবারের সকলের সাথে হত্যা করা হয়। তার আগের দিন ১৪ আগস্ট তিনি পারভীন ওসমানকে বিয়ে করেন। বিয়েতে শেখ মুজিবুর রহমানের পুত্র শেখ কামাল উপস্থিত ছিলেন। ১৫ আগস্ট স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হলে নাসিম ওসমান নবপত্নীকে ফেলে হত্যার প্রতিশোধ নিতে চলে যান। তিনি ঢাকায় প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এরপর তিনি আবার ভারতে চলে যান এবং সেখানে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করেন। তৎকালীন কাদের বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
নাসিম ওসমান জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। নাসিম ওসমান প্রথমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দলীয় রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তার বাবা এ কে এম শামসুজ্জোহা ছিলেন প্রখ্যাত আওয়ামী লীগ নেতা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম সহচর। পরবর্তীতে নাসিম ওসমান বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে পড়েন। তিনি ৪ বার বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির হয়ে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন, যথাক্রমে ১৯৮৬, ১৯৮৮, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে
নাসিম ওসমানের বাবা এ কে এম শামসুজ্জোহা ছিলেন প্রখ্যাত আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। তিনি ১৯৭০ সালের নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর আবার ১৯৭৩ সালে তিনি একই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। নাসিম ওসমানের ছোট ভাই শামীম ওসমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন সংসদ সদস্য। তার মেঝো ভাই সেলিম ওসমান তার মৃত্যুর পর সাংসদ নির্বাচিত হন।নাসিম ওসমানের স্ত্রীর নাম পারভিন ওসমান। এই দম্পতির এক ছেলে ও দুই কন্যা আছে (আজমেরি ওসমান, আইরিন ওসমান ও আফরিন ওসমান)।
২০১৪ সালের ১৮ এপ্রিল চিকিৎসার জন্য নাসিম ওসমানকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। দিল্লিতে চিকিৎসা নেওয়ার পর তিনি দেরাদুন যান। সেখানে একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থানকালে আকস্মিক হূদেরাগে আক্রান্ত হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি ৩০ এপ্রিল, ২০১৪ সালে মারা যান। আজ তার জন্মদিন উপলক্ষে তার আত্মার প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি