আইভীর অন্যায়ের প্রতিবাদে সরব খোকন সাহা

নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ কর্পোরেশনকে সামনে রেখে মেয়র প্রার্থী হিসেবে নিজেকে ঘোষনা দিয়েছিলেন মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা। ঘোষনার পর থেকেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বর্তমান মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীর অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে থাকেন খোকন সাহা। তবে জিউস পুকুর ইস্যুতে সবচেয়ে বেশে সোচ্চার খোকন সাহা। এরপর থেকেই খোকন সাহাকে প্রতিপক্ষ ভাবতে শুরু করেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী। খোকন সাহাকে ধমিয়ে রাখতে তার বিরুদ্ধে মামলাও করেছিলেন মেয়র। কিন্তু এতেও দমে যাননি খোকন সাহা। তাই এবার ভিন্ন কৌশলে কাজ করছেন মেয়র আইভী। সর্বশেষ গত শুক্রবার শহীদ মিনারে খোকন সাহার একটি অনুষ্ঠানের অনুমতি না দিয়ে আওয়ামীলীগ বিরোধীদের অনুষ্ঠান করার অনুমতি দিয়েছিলেন মেয়র আইভী। যা নিয়ে এখনো সমালোচনা চলছে।

গত শুক্রবার শহীদ মিনারে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা সমাবেশে সরকারের কড়া সমালোনা করেছিল জোনায়েদ সাকি। একইদিন শহীদ মিনারে বঙ্গবন্ধুর শতবার্ষিকী পালনের লক্ষে আবেদন করেছিল আওয়ামীলীগের একটি সহযোগী সংগঠন। কিন্তু সিটি মেয়র আইভী বঙ্গবন্ধুর অনুষ্ঠানের জন্য অনুমতি দেয়নি। কেননা গণসংহতিকে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছিল সিটি কর্পোরেশন। অথচ সেই অনুষ্ঠানে সরকারে কড়া সমালোচনা করেছিল উপস্থিত বক্তারা। এনিয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন।

অনুষ্ঠানে দেশে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের শাসন মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খার বিপরীত বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধান সাম্য ও মানবিক মর্যাদার কথা বলে। অথচ এখন চাকরি পেতে হলে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা হতে হয় নতুবা আওয়ামী লীগ করতে হয়। এটা সমতা নয়। দেশের মধ্যে চুরি, দুর্নীতি লুটের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে গোয়েন্দা সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকার যে শাসন কায়েম করেছে তা মুক্তিযুদ্ধের আকাক্সক্ষার বিপরীত। জনগণের ন্যূনতম মর্যাদা নেই। আদালতও দখল করে রাখা হয়েছে।’ তিনি বর্তমান সরকারের শাসনব্যবস্থার তুমুল সমালোচনা করে বলেন, ‘সমস্ত ক্ষমতা এখন প্রধানমন্ত্রীর হাতে। এই প্রধানমন্ত্রীর জায়গায় যেই প্রধানমন্ত্রীই বসুক না কেন ক্ষমতার অপপ্রয়োগ তিনিও করবেন। তাহলে মুক্তি কোন পথে? এই রাষ্ট্রকে সংস্কার না করে একটা নির্বাচনও হবে না। ফলে এই সরকারের পতন আর রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর; এই দুলে মিলে আজকে এক দফা তৈরি হয়েছে। এই এক দফা সংগ্রাম বাংলাদেশে তৈরি করতে হবে। এটাই হোক বাংলাদেশের ৫০ বছর পূর্তিতে নতুন শপথ। এছাড়াও বিভিন্ন উস্কানীমূলক বক্তব্য দিয়েছিলেন জোনায়েদ সাকি। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা।

একই দিন নারায়ণগঞ্জে সুধীজন পাঠাগারের সামনে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী এবং তাঁতীলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় খোকন সাহা বলেন, চাষাঢ়ার শহীদ মিনারে তাঁতীলীগকে সমাবেশ করার অনুমতি না দিয়ে যারা গণসংহতিকে সমাবেশের অনুমোতি দিয়েছে তাকে ‘আওয়ামী লীগ’ ধরা যায়না বলে মন্তব্য করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা বলেছেন, ‘আজকে তাঁতী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আমাদের সংগঠনের নেতারা শহীদ মিনারে সমাবেশ করার অনুমোতি চেয়েছিলে; কিন্তু তাঁদের অনুমোতি দেওয়া হয়নি। সমাবেশের সুযোগ পেয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। যিনি গণসংহতির মতো একটি ভূইফোঁড় সংগঠনকে সমাবেশের অনুমোতি দিলেন! মেয়র আইভীকে ইঙ্গিত করে খোকন সাহা বলেছিলেন, উনি কি আওয়ামীলীগ করেন? আমি কিন্তু তাকে আওয়ামীলীগার হিসেবে ধরি না’। তিনি আরো বলেন, ‘কি বিচিত্র এই নারায়ণগঞ্জ আর কি বিচিত্র এই জাতি। যেই গণসংহতি আমাদের দলের নেত্রীকে গালি-গালাজ করছে, তাদের সাথে আপনারা অনুষ্ঠান করবেন, করেন। সাধারণ কর্মীরা বলছেন, মেয়র আইভী বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করলেও খোকন সাহা ধমে যায়নি। বরং নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে খোকন সাহার অবস্থান আরো শক্ত হচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ