নারায়ণগঞ্জ মেইল: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের রাজনীতি। স্থানীয় আওয়ামীলীগের সিনিয়ন কয়েক নেতা ব্যস্ত দেশ ভ্রমণ নিয়ে। কেউ কেউ নিজ ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। আবার অনেকে বিভিন্ন সেক্টর দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তবে নির্বাচন পরবর্তি সময়ে মহনগরের ১৭টি ওয়ার্ড কমিটি দেয়া হলেও এনিয়ে সমালোচনায় রয়েছেন সভাপতি আনোয়ার হোসেন। কমিটি ইস্যুতে আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিল পদ বঞ্চিত ত্যাগী নেতারা। পাশাপাশি আনোয়ার হোসেনকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করেছিলেন মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী। কমিটি ইস্যুতে কিছুদিন রাজনীতির মাঠ গরম থাকলেও ফের ঝিমিয়ে পড়েছে আওয়ামীলীগের রাজনীতি।
জানাগেছে, টানা চতুর্থবার দল ক্ষমতায় থাকার পরও নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে ভাটা পড়েছে। জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের কমিটির মেয়াদ দীর্ঘদিন আগেই শেষ হলেও কমিটি পুনর্গঠনে কোন উদ্যোগ নেই নেতাদের মধ্যে। মহানগরের আওতাধীন ১৭টি ওয়ার্ডের আংশিক কমিটি ঘোষনা হলেও এনিয়ে রয়েছে বিতর্ক। মূল দলের পাশাপাশি সহযোগী সংগঠনগুলোরও বেহাল দশা। তবে রাজনীতির মাঠে নীরব থাকলেও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তনে ব্যস্ত রয়েছেন।
অধিকাংশ নেতা এতে সফলও হয়েছেন। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের প্রতিপক্ষ এখন আওয়ামীলীগের নেতারাই। এতে করে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। দলকে সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী করার পরিবর্ততে নিজ বলয়কে শক্তিশালী করতে ব্যস্ত রয়েছেন স্থানীয়আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতারা। অথচ দলের দু:সময়ের নেতারা ক্ষমতার স্বাদ গ্রহন করতে পারেনি।
এছাড়াও চতুর্থবারের মত দল ক্ষমতায় আসার পর অনেকটা বিভিন্ন সেক্টর দখলে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। যদিও এনিয়ে সাংগঠনিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দল। ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায়, ঝুট সেক্টর, চোরাই তেলের ব্যবসা, ভূমিদস্যুতা, মাদক ব্যবসায়ীদের শেল্টার দেয়াসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতারা। যদিও নারায়ণগঞ্জে মাদক, সন্ত্রাস ও ভূমিদস্যু মুক্ত করতে গত ২৭ জানুয়ারি বিশাল সমাবেশ করেছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। “প্রত্যাশা” নামে অরাজনৈতিক সংগঠনের ব্যানারে ওসমানী স্টেডিয়ামে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে ফতুল্লার বিসিক ও সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে গার্মেন্টসের জুট সেক্টর, চোরাই তেল, হাট-ঘাটসহ বিভিন্ন সেক্টর নিয়ন্ত্রনকারীর অধিকাংশই শামীম ওসমানের অনুসারি। এসকল সেক্টর দখল করতে অবৈধ অস্ত্রের মহড়াও দিতে দেখা গেছে সন্ত্রাসীদের। এনিয়ে দলের ইমেজ ক্ষুন্ন হলেও সমাধানে নিশ্চুপ রয়েছেন শীর্ষ নেতা।
মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বলছেন, দল ক্ষতায় থাকায় শীর্ষ নেতারা সংগঠনের চেয়ে নিজেদেও ভাগ্য পরিবর্তনে ব্যস্ত রয়েছেন। অথচ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাঠে সক্রিয় ভূমিকায় মাঠ পর্যায়ের নেতারা থাকলেও তাদের কোন খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে না।