বদলে যাচ্ছে আড়াইহাজার বিএনপির রাজনীতি

নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক কমিটিতে ছিলো আড়াইহাজার বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম আজাদের একেচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ। যার ফলে তিনি তার অনুগত নিস্ক্রিয় লোকদের দিয়ে আড়াইহাজার বিএনপির তিনটি কমিটি অনুমোদন করিয়ে নিয়েছিলেন আর ত্যাগী যোগ্য নেতাকর্মীদের করেছিলেন বঞ্চিত। আজাদেও পছন্দে আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সভাপতি করা হয়েছে ইফসুফ মেম্বারকে যিনি গত ১৫ বছর এলাকাতেই ছিলেন না, থাকতেন সাভারে। আন্দোলন সংগ্রামে তাকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। এমনি অসংখ্য বিতর্কিত লোকদের দিয়ে কমিটি সাজিয়ে পূর্ন আধিপত্য বজায় রাখতে চেয়েছিলেন সুচতুর নজরুল ইসলাম আজাদ। কিন্তু জেলা বিএনপির নেতৃত্ব থেকে আজাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা নেতারা হারিয়ে যাওয়ায় নতুন কমিটির সাথে খুব একটা সুবিধা করতে পারছেন না তিনি। কারণ নতুন কমিটির নেতাদের কাছে রাজপথে অবদান রাখা ত্যাগী নেতকর্মীরাই মূল্যায়ন পাচ্ছেন। ফলে আড়াইহাজারের রাজনীতিতে আজাদের আধিপত্যে ভাঙন দেখা দিয়েছে এবং রাজপথের পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে।

 

স্থানীয় সূত্রে প্রকাশ, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র অন্তর্গত পাঁচটি থানা কমিটি গঠনে সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ ছিলো সংগঠনের সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদেও বিরুদ্ধে। অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমেই নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী আড়াইহাজার থানা বিএনপির কমিটি নজরুল ইসলাম আজাদের বলয়ে দিয়ে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। সে সময়ে ওই কমিটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ফেটে পরেছিলো আড়াইহাজার বিএনপির রাজপথের নেতাকর্মীরা। তারা কমিটি প্রত্যাখ্যান করে নজরুল ইসলাম আজাদ ও অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে আড়াইহাজারে অবাঞ্ছিত ঘোষনা করেছিলেন এবং তাদের কুশপুত্তলিককা দাহ করেছিলেন।

 

সেদিনের প্রতিবাদ সভায় লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছিলো, ইতিপূর্বে কুকর্মের জন্য নজরুল ইসলাম আজাদকে যুবদলের পদ থেকে বহিষ্কার করেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আজাদের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জে কমিটি বাণিজ্যের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। বরিশালের মামুন মাহমুদ ইতিমধ্যে গৃহপালিত দালাল দিয়ে লোক দিয়ে আড়াইহাজার উপজেলা, আড়াইহাজার পৌরসভা ও গোপালদী পৌরসভা বিএনপির কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে হামলা-মামলায় নির্যাতিত তিনি নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করায় নজরুল ইসলাম আজাদের কথামতো মামুন মাহমুদ আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করার জন্য এবং বিএনপিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নেওয়ার কারণে আমরা বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে আড়াইহাজার বিএনপিকে শক্তিশালী করার জন্য আড়াইহাজার হতে মামুন মাহমুদ ও নজরুল ইসলাম আজাদকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করলাম এবং সদ্য ঘোষিত কমিটি বাতিল করে গ্রহণযোগ্য নেতা কর্মীদের মূল্যায়ন করে কমিটি দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। সেই সাথে নজরুল ইসলাম আজাদকে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও মামুন মাহমুদকে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব পদ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানাই।

অপরদিকে আড়াইহাজার বিএনপি সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা ছিলেন প্রয়াত বদিউজ্জামান খসরু। তিনি ছিলেন থানা বিএনপি’র সভাপতি। তার মৃত্যুর পরে তার ছেলে মাহমুদুর রহমান সুমন ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এলাকায় রয়েছে তাদের বিশাল জনপ্রিয়তা। ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সন্তান সুমনকে রাখা হয়নি কমিটিতে, রাখা হয়নি সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবুসহ অসংখ্য নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীদের। তবে এবার তারা রাজপথে নিজেদের প্রমাণ করে আড়াইহাজার বিএনপিতে রাজপথের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন ফিরিয়ে আনবেন বলে জানা গেছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ