নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে আসছে জেলা বিএনপি

নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারাযণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির মূল দায়িত্ব ছিলো তাদের আওতাধীন ১০টি ইউনিট কমিটি গঠন করা। দেরিতে হলেও কাজটি তারা ইতিমধ্যে সম্পন্ন করতে পেরেছেন। জেলা বিএনপির অন্তর্গত ৫টি থানা ও ৫টি পৌরসভা কমিটি গঠন নিয়ে নানা বিতর্ক থাকলেও শেষ পর্যন্ত তারা তা ভালোভাবেই শেষ করে এনেছেন। থানা ও পৌরসভা কমিটিগুলোও তাদের অন্তর্গত ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটিগুলো গঠনের লক্ষ্যে সম্মেলন আয়োজন করছে এবং খুব শীঘ্রই তা শেষ হবে। এবার জেলা বিএনপির সম্মেলন আয়োজন করে নতুন নেতৃত্ব তুলে আনার পালা। জেলা বিএনপির পরবর্তী নেতৃত্বের জন্যে নবীন-প্রবীনের সমন্বয় চায় তৃণমূল।

সূত্রে প্রকাশ, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক পদ থেকে প্রথমে অব্যহতি ও পরে দল থেকে বহিস্কার করা এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে। কমিটির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির এ পদে আর ফিরতে চাননা। একইভাবে রূপগঞ্জের দিপু ভূইয়া কিংবা আড়াইহাজারের নজরুল ইসলাম আজাদ কমিটির দায়িত্ব নিতে আগ্রহী নন। তারা নেপথ্য নায়ক থাকতেই বেশী পছন্দ করেন।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি পদে তৃণমূলের প্রথম পছন্দ হচ্ছেন সাবেক সাংসদ মো: গিয়াসউদ্দিন। সিনিয়র রাজনীতিবীদ হিসেবে তৃণমূলে গিযাসউদ্দিনের গ্রহনযোগ্যতা অন্য সবার চেয়ে আলাদা। তাই সাধারণ নেতাকর্মীরা চাইছেন দলের এই চরম দু:সময়ে গিয়াসউদ্দিন জেলা বিএনপির হাল ধরুক। এ মুহুর্তে জেলা বিএনপির সভাপতি পতে গিয়াসউদ্দিনের বিকল্প নেই।

জেলা বিএনপিপর সভাপতি পদে বর্তমান কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদও একজন প্রার্থী কিন্তু বিগত সময়ে তার বিরুদ্ধে তৃণমূলের রয়েছে বিস্তর অভিেেযাগ। বিশেষ করে থানা ও পৌর কমিটি গঠনের বিষয়ে অর্থ বানিজ্যের অভিযোগ গুরুতর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তাছাড়া রাজপথের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করে অযোগ্যদের পদায়নের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

জেলা বিএনপির সভাপতি পদে যেমন অভিজ্ঞ গিয়াসউদ্দিনকে চায় তৃণমূল তেমনি সাধারণ সম্পাদক পদে তৃণমূলের পছন্দ তরুণ নেতাদের। বিগত সময়ে রাজপথে সাহসী ভূমিকা রাখা তরুণ নেতৃত্বকেই চাইছে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। নবীন-প্রবীণের সমন্বয় করে একটি শক্তিশালী জেলা বিএনপির কমিটি গঠন করতে সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান আহবায়ক কমিটির সদস্য ও জনপ্রিয় ছাত্রনেতা মাসুকুল ইসলাম রাজিবকেই তৃণমূলের প্রথম পছন্দ। কারণ রাজিবের রয়েছে বিশাল কর্মীবাহিনী আর নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা।

এছাড়াও জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন বর্তমান আহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবি, যুগ্ম আহবায়ক জাহিদ হাসান রোজেল, ফতুল্লা থানা বিএনপির সদস্য সচিব শহিদুল ইসলাম টিটু প্রমূখ।

উল্লেখ থাকে যে. কাজী মরিুজ্জামান মনির ও অধ্যাপক মামুন মাহমুদের নেতৃত্বধীন জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙ্গে দেয়া হয় ২০২০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। এরপর ২০২১ সালের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি এড. তৈমূর আলম খন্দকারকে আহবায়ক এবং অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে সদস্য সচিব করে ৪১ সদস্যের আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করা হয়। এই কমিটিকে তিন মাস সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিলো তাদের আওতাধীন ১০টি ইউনিট কমিটি গঠন করে জেলা কমিটির সম্মেলন আয়োজনের জন্যে। কিন্তু ১০টি ইউনিট কমিটি ঘোষনাকে কেন্দ্র করে তৈমূর ও মামুন মাহমুদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতি ও কমিটি বানিজ্যের অভিযোগ উঠে।
এরই মাঝে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন চলে আসে। দলীয় নির্দেশ অমান্য করে এ নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হন জেলা বিএনপির আহবায়ক এড. তৈমূর আলম খন্দকার। এই অপরাধে প্রথমে তাকে জেলা বিএনপির আহবায়ক পদ থেকে অব্যহতি দেয়া হয় এবং পরবর্তীতে তাকে বিএনপির সকল পদ থেকে বহিস্কার করা হয়। তৈমূরের বহিস্কারে জেলা বিএনপির ১ম যুগ্ম আহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবিকে ভারপ্রাপ্ত আহবায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এদিকে নাসিক নির্বাচনের আগমুহুর্তে জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবিকে হেফাজতের মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ। তখন ২য় যুগ্ম আহবায়ক নাসিরউদ্দিনকে ভারপ্রাপ্ত আহবায়কের দাত্বি তুলে দেওয়য়া হয়। এ সময়ে ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক নাসিরউদ্দিন ও সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুুন মাহমুদ মিলে গত ২০ জানুয়ারি জেলা বিএনপির আওতাধীন ১০টি ইউনিট কমিটির অনুুমোদন দেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ