নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি’র আ়ংশিক কমিটিতে যুগ্ম সম্পাদক করা হয়েছিল তৎকালীন মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে। কিন্তু তিনি মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তখন নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে খোরশেদের ছিল একটা শক্ত অবস্থান। স্বপ্ন দেখতেন মহানগর বিএনপি’র সেক্রেটারী হবেন। কিন্তু ভাগ্য তাকে এখন এমন এক জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে, নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে এখন কোন অবস্থানই নেই তার, নেই কোনো কদর। পদ-পদবী বিহীন অনেকটা পরগাছার মত বিএনপিতে ঝুলে আছেন খোরশেদ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত প্রায় ১০ বছর যাবত নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের কমিটিতে একাধিপত্য বিস্তার করে রেখেছিলেন মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। নিজের অনুগত লোকদের দিয়ে কমিটি করতেন এবং ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দিতেন খোরশেদ। গুঞ্জন আছে নিজের কর্মচারী দারোয়ান মালি ড্রাইভার আর চাকর বাকরদের কমিটিতে পদ দিয়েছেন তিনি অথচ রাজপথের অনেক ত্যাগী নেতাকর্মীকে করেছেন অবহেলা।
তাছাড়া মহানগর যুবদলের কমিটি গঠন নিয়ে বিশাল বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে খোরশেদের বিরুদ্ধে। সিদ্ধিরগঞ্জের কমিটির জন্য মমতাজউদ্দীন মন্তুর কাছ থেকে ৫ লাখ এবং বন্দরের আহমদ আলীর কাছ থেকে এক লাখ টাকা নেয়ায় ঘটনতো পুরোপুরি ওপেন সিক্রেট। এছাড়া পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের সময় দশ হাজার বিশ হাজার করে যার কাছ থেকে যেমন পেরেছেন তেমনটাই নিয়েছেন খোরশেদ।
মহামারী করোনা কালীন সময়ে খোরশেদ নানা জনহিতকর কাজ করেছেন কিন্তু কোথাও যুবদলের ব্যানার ব্যবহার করেননি। তিনি টিম খোরশেদ নাম দিয়ে নিজেকে প্রচার করেছেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কিংবা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে কোথাও কোনো কর্মসূচি পালন করেননি অথচ দিনের পর দিন নিজের প্রচার চালানোর জন্য যুব দলের নেতাকর্মীদেরকে ব্যবহার করেছেন।
সর্বশেষ খোরশেদ যুবদলে নিজের আধিপত্য ধরে রাখার জন্য এমন একজনকে আহ্বায়ক হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছেন যাকে গত ১৫ বছরে একদিনও রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে দেখা যায়নি। একসময় ছাত্রদলের সভাপতি মাজহারুল ইসলাম জোসেফকে ১৫ বছর পর রাজপথে নামিয়ে নিজ বলয়ে যুবদলের কমিটি রাখতে চেয়েছিলেন খোরশেদ। কিন্তু নিষ্ক্রিয় জোসেফকে কোনভাবেই মেনে নেবে না বলে জানিয়েছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের বিরুদ্ধে এত সব অভিযোগের পাহাড় জমা হয়েছিল কেন্দ্রীয় যুবদলের টেবিলে। তার কাছে কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছিল কেন তিনি বিএনপি কিংবা যুবদলকে কোথাও হাইলাইট না করে নিজের প্রচার চালিয়েছেন। এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি খোরশেদ। তাছাড়া দিনের-পর-দিন মহানগর যুবদলে স্বৈরাচারী একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার খেসারত হিসেবে কেন্দ্রীয় যুবদলের গুড লিস্ট থেকে নাম কাটা যায় খোরশেদের। যার ফলাফল নতুন ঘোষিত কমিটিতে খোরশেদ অনুসারী কাউকেইই রাখা হয়নি।