নারায়ণগঞ্জ মেইল: বহু জল্পনা-কল্পনা আর আলোচনা-সমালোচনার পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা উঠেছে সাবেক বিএনপি নেতা মনিরুল আলম সেন্টুর ঘরে। সাবেক বিএনপি নেতার হাতে নৌকা দেখে ক্ষুব্ধ কুতুবপুরের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। আর চরম হতাশায় ভুগছেন স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এদিকে সেন্টুর নৌকা প্রাপ্তিতে যোগ-বিয়োগের হিসাব-নিকাশ নিয়ে ব্যস্ত রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সেন্টু আওয়ামী লীগে চলে আসায় লাভের ফসল উঠলো কার গোলায়, আর নতুন করে কারইবা গলার কাঁটা হলেন সেন্টু সেই হিসেবের চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে এখনো।
বিজ্ঞজনের মতে, সেন্টুর আওয়ামী লীগের চলে যাওয়ায় হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী দুই হেভিওয়েট বিএনপি নেতা সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন এবং একই আসন থেকে ২০০৮ সালের নির্বাচনে পরাজিত হওয়া শিল্পপতি মোঃ শাহ আলম। কারণ প্রায় ৩ লক্ষ ভোটার অধ্যুষিত এলাকা কুতুবপুরে দলমত নির্বিশেষে বিশাল জনপ্রিয় মনিরুল আলম সেন্টু গত সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের মনোনয়ন চেয়েছিলেন, আগামীতেও যে চাইবেন সে ব্যাপারে ধারণা করাই যায়। সে ক্ষেত্রে সাবেক দুই প্রার্থীর মাথাব্যথার প্রধান কারণ ছিলেন এই সেন্টু। আর তাই মনিরুল আলম সেন্টু দল ত্যাগ করে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় ঘাম দিয়ে জ্বর সেরে যাওয়ার মত অবস্থা হয়েছে গিয়াসউদ্দিন আর শাহ আলমের। অনেক বড় একটা বিপদ কেটে যাওয়ায় স্বস্তিতে এখন এই দুই এমপি প্রত্যাশী।
বাংলায় একটি প্রবাদ আছে “ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে” তাই মনিরুল আলম সেন্টু বিএনপিকে থেকে যেমন সংসদ সদস্য হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, আওয়ামী লীগে গিয়েও যে দেখবেন না, সেটা কে বলতে পারে। আর তাই নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে বারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের জন্য যে ভবিষ্যতে হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারেন মনিরুল আলম সেন্টু, সেটা এখন নির্দ্বিধায় বলে দেওয়া যায়। অনেকে মনে করছেন সেন্টুকে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক এনে দিয়ে খাল কেটে কুমির আনলেন শামীম ওসমান। একদিন তার সংসদীয় আসনেই দলীয় মনোনয়ন চেয়ে ফেলতে পারেন সেন্টু, আর তাই এখন শামীম ওসমানের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছেন বিএনপি’র বহিস্কৃত এই নেতা।