নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির জন্যে একটি ডিজিটাল বার ভবন নির্মাণ করে দেয়ার ঘোষনা দিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ একেএম সেলিম ওসমান। কথা মতো বার ভবন নির্মাণও করে দিচ্ছেন তিনি। তবে এ বার ভবন নির্মাণের জন্যে বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান দুই মন্ত্রী এক কোটি করে দুই কোটি টাকা দেবার প্রতিশ্রুতি দিলেও সে প্রতিশ্রুতি তারা এখনো বাস্তবায়ন করেননি। তাই সাংসদ সেলিম ওসমানের একক অর্থায়ণেই নির্মিত হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির ডিজিটাল বার ভবন।
সূত্রে প্রকাশ, নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির জন্যে আটতলা বিশিষ্ট ডিজিটাল বার ভবন নির্মাণের জন্যে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ২০১৮ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর। সে অনুষ্ঠানে দাড়িয়ে বার ভবন নির্মাণের সম্ভাব্য ব্যয় ৫ কোটি টাকার ৩ কোটি দেয়ার ঘোষনা দেন সাংসদ একেএম সেলিম ওসমান। বাকী ২ কোটি টাকা মঞ্চে উপবিষ্ট বাংলাদেশ সরকারের দুইজন মন্ত্রী আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী দেবার ঘোষনা দিয়েছিলেন। কিন্তু সে ঘোষনার প্রায় ২ বছর পার হতে চললেও প্রতিশ্রুত সে অর্থ তারা দেননি। ইতিমধ্যেই বার ভবনের নীচতলার কাজ শেষ হয়ে আইনজীবীরা ব্যবহার করতে শুরু করেছেন। এ বছরের মধ্যেই ২য় ও ৩য় তলার কাজ শেষ করার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন বার কতৃপক্ষ। আর এ কাজের সমুদয় ব্যয়ভারই বহন করে এসেছেন সাংসদ সেলিম ওসমান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. মোহসীন মিয়া নারায়ণগঞ্জ মেইলকে জানান, আমরা দুইজনের সাথেই যোগাযোগ করেছি। আইনমন্ত্রী মহোদয় আশ্বাস দিয়েছেন টাকা দেওয়ার তবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী মহোদয় এ বিষয়ে কিছুই জানাননি।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ বারের উন্নয়নের বানী শুনিয়ে প্রতিবারেই নির্বাচনী বৈতরণী পার হতেন আইনজীবী নেতারা। কিন্তু কাঙ্খিত উন্নয়নের সুফল পাচ্ছিলেন না সাধারণ আইনজীবীরা। বিশেষ করে একটি আধুনিক বার ভবন নির্মাণ ও দুই কোর্ট একত্রে রাখার বিষয়ে বছরের পর বছর সকলেই প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেছেন কিন্তু কেউ বাস্তবায়ন করেননি। কিন্তু গত ২০১৭-১৮ মৌসুমের বার নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আওয়ামীলীগ সমর্থীত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও এড. মোহসীন মিয়া নতুন কোন প্রতিশ্রুতি দেননি আইনজীবীদের বরং পুরানোদের দেয়া প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন। একটি ডিজিটাল বার ভবন নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের ব্যবস্থা করে ভেঙ্গে ফেলেন পুরানো জরাজীর্ণ বার ভবনটি। ফলে পরবর্তী এ জুটির উপরই ভরসা রাখেন আইনজীবীরা এবং জুয়েল-মোহসীন প্যাণেল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জণ করে।
বারের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য প্রায় পাঁচ কোটি টাকার বরাদ্দ এনেছিলেন বারের সাবেক সভাপতি এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও বর্তমান সভাপতি এড. মোহসীন মিয়া। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ একেএম সেলিম ওসমান এই ভবন নির্মাণের জন্য তিন কোটি টাকা দেওয়ার অঙ্গিকার করেছেন। সেই সাথে দেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এক কোটি এবং পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী এক কোটি টাকা দেবেন আইনজীবীদের এই ভবন নির্মাণের জন্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাংসদের দেয়া টাকায়ই নির্মাণ কাজ চালিয়ে রাখতে হয়েছে, দুই মন্ত্রী কথা দিলেও টাকা দেননি।