উপজেলার ভোটার মুকুল সিটি নির্বাচনে অযোগ্য!

নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জে এখন চলছে নির্বাচনের মৌসুম। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আসছে ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে পারে- এমন ঘোষণার পরে সম্ভাব্য প্রার্থীরা তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন মহানগর বিএনপি নেতা ও সাবেক বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল। গণমাধ্যম সূত্রে নারায়ণগঞ্জ বাসি জেনেছেন তার মেয়র হওয়ার কথা।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচন করতে পারবেন না আতাউর রহমান মুকুল। প্রথমত তার দল বিএনপি নির্বাচনে যাচ্ছে না। দ্বিতীয়ত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না। কারণ তিনি সিটি কর্পোরেশনের ভোটার না। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিতে হলে সেখানকার ভোটার হতে হয়। অথচ দীর্ঘদিন বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান ছিলেন আতাউর রহমান মুকুল। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই তিনি উপজেলার ভোটার ছিলেন। আর উপজেলার ভোটার হলে কখনো সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়া যায়না। সে সূত্রে নাসিক মেয়র হওয়ার যতই খায়েশ থাকুক না কেনো, আইনগতভাবে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচনের কোন প্রকার বৈধতা নেই বিতর্কিত বিএনপি নেতা আতাউর রহমান মুকুলের।

এদিকে বিএনপি নেতা আতাউর রহমান মুকুলকে নিয়ে রয়েছে নানা বিতর্ক। বিএনপিতে পদ-পদবি থাকলেও তিনি কখনো বিএনপি’র আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নেননি। গত প্রায় ১৫ বছর নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা মামলা-হামলায় জর্জরিত হলেও আতাউর রহমান মুকুল ছিলেন সবকিছু থেকে দূরে। তাকে কখনো বিএনপি’র মিটিং-মিছিলে দেখা যায়নি বরং সরকারি দলের বড় বড় নেতাদের সাথে প্রায়ই তাকে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে দেখা গিয়েছে। এমনকি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে কুকুর বলে গালি দেওয়ার অনুষ্ঠানের মঞ্চ হাসিমুখে বসেছিলেন মুকুল। গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন মুকুল এবং ধানের শীষের এজেন্টেদের মেরে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এতসব বিতর্কের পরেও আতাউর রহমান মুকুলকে বিএনপি’র কোন গুরুত্বপূর্ণ পদে আর দেখতে চায় না তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের ১৬ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনের মাত্র ১৭ দিন আগে নিউজিল্যান্ড থেকে দেশে আসেন সাবেক পৌর পিতা আলী আহমদ চুনকার কন্যা সেলিনা হায়াৎ আইভী। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দিয়ে তার পক্ষে নারায়ণগঞ্জে জোর প্রচারণা চালান দলের কেন্দ্রীয় অনেক নেতা। ২০০৩ সালে অনুষ্ঠিত পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাঁর সক্রিয় রাজনৈতিক জীবনের সূত্রপাত ঘটে। বিএনপির প্রার্থী নুরুল ইসলাম সরদারকে হারিয়ে শুরু হয় পৌর চেয়ারম্যানের পথ চলা। ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আইভী বিপুল ভোটে জয়ী হন। ওই নির্বাচনে দলের সমর্থন না পেলেও একচুল পিছু হটেনি আইভী। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন শামীম ওসমানের মত প্রভাবশালী নেতার বিরুদ্ধে। সবশেষ ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়া সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে ধানের শীষের সাখাওয়াত হোসেন খানকে , হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন আইভী। তবে এবার তার ভাগ্যে জুটে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ