নির্বাচনের আওয়াজেই আওয়ামী লীগে দ্বন্দ্ব শুরু

নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে চতুর্মুখী বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন, জেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নেতাদের বিভাজন তীব্র আকার ধারণ করেছে। সাংসদ শামীম ওসমান ও মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীর দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরে চলমান হলেও তিন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চতুর্মুখী বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে।

মূলত মেয়র পদে দলীয় প্রতীক পেতে মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহার সাথে গত কয়েক মাস ধরেই বিরোধ চলছে। খোকন সাহার বিরুদ্ধে মেয়র আইভী মামলার করার পর বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছিল। তারপর থেকেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সরাসরি কিংবা আকার ইঙ্গিতে মেয়রের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে আসছেন খোকন সাহা। মেয়র পদের পাশাপাশি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। বর্তমান চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন পুনরায় পদটি তার দখলে রাখতে চাইছেন। কিন্তু মহানগর আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি বাবু চন্দন শীল ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাইসহ বেশ কয়েকজন নেতা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ দখলের চেষ্ঠায় রয়েছেন।

এদিকে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় ইস্যুতে মাঠ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে বিভাজন শুরু হয়েছে। তাছাড়া নির্বাচন ইস্যুতে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ বাদলের মধ্যে চরম দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। বিগত সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দুইজনকে একসাথে দেখা গেলেও বর্তমানে তাদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। একে অপরকে উদ্দেশ্য বিষোদগার করছেন। মূলত নির্বাচনকে সামনে রেখে চলছে গ্রুপিং। জেলার শীর্ষ পর্যায়ের নেতা থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে গ্রুপিং ছড়িয়ে পড়ছে। যার ফলে রাজনীতির মাঠে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা নিজেরাই নিজেদের মধ্যে বিরোধী জড়িয়ে পড়েছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ বলয়কে শক্তিশালী মরিয়া হয়ে উঠেছেন। পাশাপাশি দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত কেন্দ্র লবিংয়ের চেষ্ঠা করছেন।

মূলত বর্তমানে রাজনৈতিক ভাবে ক্ষমতাসীন দলের প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। বিশেষ করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে বিএনপি অংশগ্রহন না করলে আওয়ামীলীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগেরই স্বতন্ত্র প্রার্থী ভোট যুদ্ধে নামার সম্ভাবনা রয়েছে। নারায়ণগঞ্জে রাজনীতির মাঠ পুরোপুরি ভাবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের দখলে। অতীতে আওয়ামীলীগের প্রতিপক্ষ হিসেবে বিএনপির অবস্থান থাকলেও বর্তমানে বিএনপিকে পাত্তা নেই।

তবে নারায়ণগঞ্জের রাজপথ ক্ষমতাসীনদের দখলে থাকলেও রাজনীতিতে নিজেরাই এখন নিজেদের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একে নেতা অপর নেতাতে ঘায়েল করতে বিষোদগারসহ মামলা পর্যন্ত করছেন। জেলা ও মহানগর থেকে শুরু করে থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাদের মধ্যেও এখন বিভাজন ছড়িয়ে পড়েছে। এতে করে সাংগঠনিক অবস্থা দূর্বল হলেও কারোই মাথা ব্যথা নেই। যা নিয়ে সাধারণ কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। টানা তৃতীয় বারের মত দল ক্ষমতায় থাকলেও নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতারা ঐক্যবদ্ধ হতে পারেনি। আর নেতাদের অনৈক্যে দিন দিন অনুপ্রবেকারীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে অনেক হাইব্রিড নেতাও সরব হয়েছেন। নেতারা নিজেদের বলয়কে শক্তিশালী করতে বিতর্কিতদেরও আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করছেন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ