বিশেষ প্রতিনিধি: পিতা শহরের সন্ত্রাসী হিসেবেই পরিচিত। পিতার মত পুত্রও সন্ত্রাসীদের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন। পিতার মতই দিন দুর্ষর্ধ হয়ে উঠছে। শহরের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী হাজী রিপনের পুত্র রাফিও দিন দিন দুর্ধর্ষ হয়ে উঠছে। বিশাল গ্যাং নিয়ে শহরের চাষাড়া, জামতলা, কলেজ রোড এলাকায় দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছেন। সর্বশেষ গত ৯ আগস্ট রাতে ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের বাড়িতে হামলার ভিডিও ফুটেজে রাফিকে দেখা গেছে। পিতা হাজী রিপনের পর পুত্র রাফিও প্রায়ত সাংসদ নাসিম ওসমানের পুত্র আজমেরী ওসমানের নাম ভাগিয়ে শহর দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে। বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে প্রতিনিয়ত শহরে মহড়া দিচ্ছে রাফি, এমনটাই অভিযোগ এলাকাবাসীর।
জানাগেছে, নামের আগে হাজী ব্যবহার করলেও নারায়ণগঞ্জবাসী সন্ত্রাসী হিসেবেই চিনে রিপনকে। দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী হাজী রিপনের বির”দ্ধে অভিযোগের যেন শেষ নেই। তার অপকর্ম পরিচালনা করতে বিশাল ক্যাডার বাহিনীও রয়েছে । সর্বশেষ গত ২০ জুলাই নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় সন্ত্রাসী হাজী রিপনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী মামলা হয়েছিল। কিন্তু শহরে প্রকাশে ঘুরে বেড়ালেও হাজী রিপনকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। সম্প্রতি হাজী রিপন মামলার বাদিকে হুমকি দিয়ে আদালতে হাজির করে নিজে জামিন নিয়েছেন। এরপর আরো বেপরোয়া হয়ে শহর দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে হাজী রিপন। রিপনের পুত্রও বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছেন। জামতলা বাড়ির ছাদে গড়ে তুলেছেন মাদকের আখড়া। পিতার মত পুত্র রাফির বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারীর অভিযোগ রয়েছেন।
সূত্র আরো জানায়, ২০১৩ সালে তর”নী লিন্ডাকে নিয়ে লাম্পট্যের জন্য গণপিটুনী খেয়েছিলেন হাজী রিপন। যা ঐসময় স্থানীয় দৈনিকগুলোতে গুর”ত্ব সহকারে প্রকাশ হয়েছিল। গত ২৮ই জুন সোমবার নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব ভবনে উঠে ক্লাব এর সাধারণ সম্পাদক শরীফ উদ্দিন সবুজকে অসাধাচারন ও হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠে হাজী রিপনের বিরুদ্ধে। যদিও পরে ক্ষমা চেয়েছিল সন্ত্রাসী রিপন। গত ২৩ই মার্চ পেশাগত দায়িত্বপালনকালে এক ফটো সাংবাদিক এর উপর হামলা চালিয়েছিল দুর্ধর্ষ হাজী রিপন। মূলত ২০১৩ সালে গণপিটুনীর শিকার হওয়ার পর থেকেই ধীরে ধীরে দুর্র্ধষ হয়ে উঠেছে হাজী রিপন।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরী ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন এর সাধারণ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন ঢাকা বিভাগীয় আঞ্চলিক কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে হাজী রিপন। এছাড়াও কোন অন্যায়ে প্রশ্রয় না দিলেও নিজের আখের গোছাতে প্রভাবশালীদের পাশে দাঁড়িয়ে বেশ দাপটে বেড়াতো তিনি। উত্তর চাষাঢ়া এলাকার মৃত আবদুল কুদ্দুসের ছেলে হাজী রিপনের বিরুদ্ধে রয়েছে আরো বিস্তর অভিযোগ। আগে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারী ইয়াবা সহ জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন জাতীয় পার্টি হতে বহিস্কৃত এই নেতা। ওইসময় ২২০ পিছ ইয়াবা ট্যাবলয়েট সহ রিপন ও তার আরো দুই সহযোগি আল আমিন তালুকদার ও সুমন ঢালীকে রাতে জামতলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা সহ রিপনের বির”দ্ধে রয়েছে ছিনতাই মামলাও। নারী কেলেংকারীর ঘটনায়ও গণপিটুনীর শিকার হয়েছে এই সন্ত্রাসী রিপন। এদিকে, শ্রমিক সংগঠনের নেতা হলেও করোনাকালে শ্রমিকদের তেমন কোন উপকার আসেন না রিপন। অভিযোগ রয়েছে, সন্ত্রাসী রিপনের পদলেহনে অন্য জেলা থেকে লোক এসেও এখন শ্রমিক নেতা বুনে গেছে। আবার অনেক শ্রমিক ও মালিক যারা সংগঠনের পদে ছিল তারা সন্ত্রাসী রিপনের অত্যাচারে দূরে সরে গেছে।
সূত্র জানায়, প্রতিদিন রাতে জিমখানা সংলগ্ন শ্রমিক সংগঠনের অফিসটিতে অনেক অপকর্মের হোতাদেরও আসা যাওয়া রয়েছে। এ স্থানটিতে অনেক সময়ই বিচার সালিশের নামে চলে শ্রমিকদের উপর টার্চার ও অর্থ বানিজ্য। তবে এর আগে সন্ত্রাসী রিপনের কাছ থেকে ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচন ও দখল দারিত্ব থেকে মুক্তির দাবীতে অবসান চেয়েছিল সাধারণ শ্রমিকরা। কিন্তু প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠা হাজি রিপন নানা কৌশলে পদে আকড়ে ধরে বসে আছেন। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পান না সাধারণ শ্রমিকরা। হাজী রিপনের মত পুত্র রাফিও দুর্ষর্ধ হয়ে উঠছে। বিষয়টি নজরে এসেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীরও।