নারায়ণগঞ্জ মেইল: সব ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হবে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীরা যেমন সরব রয়েছেন তেমনি ভোটাররা যোগ্য প্রার্থীদের সন্ধানে রয়েছেন। বিগত দিনে যারা নির্বাচিত হয়ে জনসেবার পরিবর্তে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন এমন কাউকে আগামীতে সুযোগ দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন সাধারণ ভোটাররা। তারই ধারাবাহিগতায় নাসিক ৮নং ওয়ার্ডবাসীর সাথে কথা বলে জানাগেছে, বর্তমান কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডের সাথে জড়িয়ে পড়ায় তার প্রতি সাধারণ ভোটাররা নাখোশ। তাই ওয়ার্ডবাসী নতুন প্রার্থীর সন্ধানে রয়েছে। যদিও এখনো পর্যন্ত প্রার্থীকে মাঠে দেখা যায়নি।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লার বিরুদ্ধে অভিযোগের যেন শেষ নেই। চাঁদাবাজী, মাদক ব্যবসা, ভূমি দস্যুতা, ঝুট সেক্টর নিয়ন্ত্রনসহ সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। যার ফলে আগামী নির্বাচনে পরিবর্তন চাচ্ছে ৮নং ওয়ার্ডবাসী। সর্বশেষ গত ১৯ জুলাই কাউন্সিলর রুহুলের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করছেন এনায়েতনগর পশ্চিম পাড়া বায়তুল আমান জামে মসজিদের মোতাওয়াল্লী ও সাধারণ সম্পাদক মো. এমরান হোসেন। ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জগলুল হোসেন মামলাটি আমলে নিয়ে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টে তদন্তের জন্য পাঠিয়েছেন। মামলার ঠিক দুইদিন আগে ১৭ জুলাই কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লার সহযোগী মমিনুল আলম পুষণ ওরফে বাবা পুষণকে (৩৩) মাদক মামলায় গ্রেফতার করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
এলাকাবাসী জানায়, একাধিক মামলার আসামী বাবা পুষণ কাউন্সিলর রুহুলের ছত্র ছায়ায় পশ্চিম এনায়েতনগর ও লাকী বাজার এলাকায় জমজমাট ইয়াবা ও জুয়ার আসর চলে আসছে দীর্ঘদিন যাবত। প্রায় ৬/৭ মাস আগে কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা’র আপন বড় ভাই খোকন মোল্লা এক ভিডিও বার্তায় দাবী করেছিলেন, কাউন্সিলর রুহুল আমিন মাদক ব্যবসা করেন। ৮নং ওয়ার্ডে বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কাউন্সিলর রুহুলের পক্ষে খোকন মোল্লা হিসাব রাখতেন এবং মাদক ব্যবসার টাকা রুহুলের হাতে পৌঁছে দিতেন। খোকন মোল্লার সেই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। পরবর্তিতে খোকন মোল্লার বিরুদ্ধে নিজের মাকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছিল কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা।
স্বার্থের জন্য নিজের পরিবারের বিরুদ্ধেও অবস্থান নিতে একটু চিন্তা করেন না কাউন্সিলর রুহুল। এমনকি স্থানীয় সাধারণ মানুষের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিও রুহুলের আক্রশের শিকার হয়েছেন। ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর আয়শা আক্তার দিনাও লাঞ্ছিত হয়েছিল রুহুল আমিনের কাছে। সিদ্ধিরগঞ্জে অংশীদারি ব্যবসার হিসাব চাইলে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর রুহুল ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি করার অভিযোগ দায়ের করেছিল অপর অংশীদার এমরান হোসেন। মূলত নানা অভিযোগের পরও কাউন্সিলর রুহুলের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন প্রকার ব্যবস্থা না নেয়ায় আগামী নির্বাচনে ভোটাররাই ব্যবস্থা নিবেন বলে স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেছেন।