নারায়ণগঞ্জ মেইল: মহামারী করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে টালমাটাল পুরো বাংলাদেশ। করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে এপ্রিল মাস থেকে বিভিন্ন মেয়াদে চলছে লকডাউন আর বিধিনিষেধ। লকডাউনের কারণে প্রাচ্যের ডান্ডি নারায়ণগঞ্জ কর্মহীন হয়ে পড়েছে একটা বিশাল শ্রেনী। এসব অসহায় কর্মহীন মানুষ কাজ হারিয়ে এখন প্রায় দিশেহারা। পরিবারের প্রাত্যহিক চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেক মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষও।
মহামারী করোনাভাইরাস গতবছরের মার্চ মাসে আঘাত হানার পরে নারায়ণগঞ্জের ছিন্নমূল অসহায় দরিদ্র মানুষের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন অনেকেই। খাদ্য সামগ্রীসহ নানা প্রয়োজনীয় সাহায্য নিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের অনেক ধনী ব্যক্তিবর্গ। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় নারায়ণগঞ্জের অসহায় মানুষের পাশে সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে এখনো পর্যন্ত কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি।
মহামারী করোনা ভাইরাসে বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর দায়বদ্ধতা সবচেয়ে বেশি জনপ্রতিনিধিদের। বিশেষ করে স্থানীয় পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা তৃণমূলের ভোটে নির্বাচিত হয়ে থাকেন, তাই তাদের দায়বদ্ধতা সবচেয়ে বেশি কিন্তু এবারের করোনা পরিস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাউকেই এখনো দৃশ্যপটে দেখা যাচ্ছে না। তাই জনগণের নিকট তাদের ভূমিকা পুরোপুরি প্রশ্নবিদ্ধ।
স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে বড় সংস্থা হচ্ছে জেলা পরিষদ। নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন একই সাথে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতিও। এ দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সাধারণ মানুষের পাশে তাকে সাহায্য নিয়ে দাঁড়াতে দেখা যায়নি এখনো।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী করোনার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত নিজেকে খোলসে বন্দি করে রেখেছেন। সাধারণ মানুষের সাহায্যে নিজ উদ্যোগে কোন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করতে এখন পর্যন্ত তাকে দেখা যায়নি।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস। সদর উপজেলাবাসীর কাছে শুরু থেকেই বিতর্কিত এই জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। করোনা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত এক মুঠো চাল বিতরণ করতেও তাকে দেখা যায়নি। তাছাড়া সদর উপজেলার আওতাধীন ফতুল্লা কুতুবপুরের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতায় নাকাল হলেও এই জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে বিন্দুমাত্র সহযোগিতা পাননি তারা। সীমানা জটিলতায় সদর উপজেলা নির্বাচন বন্ধ থাকায় চেয়ারম্যান পদ হারানোর কোন ভয় নেই আজাদ বিশ্বাসের। আর এ কারণেই নাকি জননের সুবিধা ও অসুবিধা না দেখে তিনি নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়ান- এমনটাই অভিমত সদর উপজেলাবাসীর।