নারায়ণগঞ্জ মেইল: হাজী রিপন। নামের আগে হাজী ব্যবহার করলেও নারায়ণগঞ্জবাসী তাকে সন্ত্রাসী হিসেবেই চিনেন। দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী হাজী রিপনের বিরুদ্ধে অভিযোগের যেন শেষ নেই। প্রভাবশালী এক ব্যক্তির নাম ভাঙ্গিয়ে শহরে নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন তিনি। তার অপকর্ম পরিচালনা করতে বিশাল ক্যাডার বাহিনীও রয়েছে । ২০১৩ সালে তরুনী লিন্ডাকে নিয়ে লাম্পট্যের জন্য গণপিটুনী খেয়েছিলেন হাজী রিপন। যা ঐসময় স্থানীয় দৈনিকগুলোতে গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ হয়েছিল। সর্বশেষ গত ২৮ই জুন সোমবার নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব ভবনে উঠে ক্লাব এর সাধারণ সম্পাদক শরীফ উদ্দিন সবুজকে অসাধাচারন ও হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠে হাজী রিপনের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে সদর থানায় একটি জিডি হয়েছে।
এর আগে গত ২৩ই মার্চ পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে এক ফটো সাংবাদিক এর উপর হামলা চালিয়েছিল দুর্ধর্ষ হাজী রিপন। সেই হাজী রিপন এখন নারায়ণগঞ্জে সন্ত্রাসীদের রাজত্ব কায়েম করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। মূলত ২০১৩ সালে গণপিটুনীর শিকার হওয়ার পর থেকেই ধীরে ধীরে দুর্ধর্ষ হয়ে উঠেছে হাজী রিপন।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরী ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন এর সাধারণ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন ঢাকা বিভাগীয় আঞ্চলিক কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে হাজী রিপন। এছাড়াও কোন অন্যায়ে প্রশ্রয় না দিলেও নিজের আখের গোছাতে প্রভাবশালীদের পাশে দাঁড়িয়ে বেশ দাপটে বেড়াতো তিনি। উত্তর চাষাঢ়া এলাকার মৃত আবদুল কুদ্দুসের ছেলে হাজী রিপনের বিরুদ্ধে রয়েছে আরো বিস্তর অভিযোগ। আগে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারী ইয়াবা সহ জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন জাতীয় পার্টি হতে বহিস্কৃত এই নেতা। ওইসময় ২২০ পিছ ইয়াবা ট্যাবলয়েট সহ রিপন ও তার আরো দুই সহযোগি আল আমিন তালুকদার ও সুমন ঢালীকে রাতে জামতলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা সহ রিপনের বিরুদ্ধে রয়েছে ছিনতাই মামলাও। নারী কেলেংকারীর ঘটনায়ও গণপিটুনীর শিকার হয়েছে এই সন্ত্রাসী রিপন।
এদিকে, শ্রমিক সংগঠনের নেতা হলেও করোনাকালে শ্রমিকদের তেমন কোন উপকার আসেন না রিপন। অভিযোগ রয়েছে, সন্ত্রাসী রিপনের পদলেহনে অন্য জেলা থেকে লোক এসেও এখন শ্রমিক নেতা বনে গেছে। আবার অনেক শ্রমিক ও মালিক যারা সংগঠনের পদে ছিল তারা সন্ত্রাসী রিপনের অত্যাচারে দূরে সরে গেছে। সূত্র জানায়, প্রতিদিন রাতে জিমখানা সংলগ্ন শ্রমিক সংগঠনের অফিসটিতে অনেক অপকর্মের হোতাদেরও আসা যাওয়া রয়েছে। এ স্থানটিতে অনেক সময়ই বিচার সালিশের নামে চলে শ্রমিকদের উপর টার্চার ও অর্থ বানিজ্য। তবে এর আগে সন্ত্রাসী রিপনের কাছ থেকে ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচন ও দখল দারিত্ব থেকে মুক্তির দাবীতে অবসান চেয়েছিল সাধারণ শ্রমিকরা। কিন্তু প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠা হাজি রিপন নানা কৌশলে পদে আকড়ে ধরে বসে আছেন। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পান না সাধারণ শ্রমিকরা।