এবার কি করবেন খোরশেদ!

নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৩ নং ওয়ার্ডের জনপ্রিয় কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। এই ওয়ার্ড থেকে পরপর তিনবার কাউন্সিলর পদে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছিলেন তিনি। সর্বশেষ সিটি নির্বাচনের আগে খোরশেদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন কাউন্সিলর পদে এটাই তার সর্বশেষ নির্বাচন। এ নিয়ে নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছিলো। তাই আসন্ন সিটি নির্বাচনের আগে ১৩ নং ওয়ার্ডবাসীর কৌতুহলের বিষয়বস্তু হচ্ছে “কি করবেন খোরশেদ”।

জানা যায়, ২০০৩ সালে তৎকালীন নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের কমিশনার পদে নির্বাচন করেন বিএনপি নেতা এড. তৈমুর আলম খন্দকার এর ছোট ভাই মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ এবং বিজয়ী হন। এরপর নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা ভেঙে তৈরি হওয়া নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রথম এবং দ্বিতীয় নির্বাচনেও ১৩ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করেন এবং সরকারি দলের বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থীকে পিছনে ফেলে বিজয়ী হন। অবশ্য সে বিজয়ের পেছনে সরকারি দলের একটি প্রভাবশালী মহলের সবুজ সংকেতের তথ্যও পাওয়া যায় লোকমুখে।

সর্বশেষ ২০১৬ সালের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পূর্বে ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন কাউন্সিলর পদে এটাই তার শেষ নির্বাচন। এরপর আর তিনি কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করবেন না। কাউন্সিলর খোরশেদের নিজ এলাকা মাসদাইরের বায়তুল আমান জামে মসজিদে দাঁড়িয়ে জুমার নামাযের পূর্বে উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, “কাউন্সিলর পদে এটাই আমার শেষ নির্বাচন। শেষবারের মতো আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন”। নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পরেও একই মসজিদে জুমার নামাজের পরে দাঁড়িয়ে কাউন্সিলর খোরশেদ বলেছিলেন, “আমি কাউন্সিলর পদে আর নির্বাচন করবো না। এতদিন ১৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলো আপনাদের এলাকায়। আগামীতেও যাতে এলাকার কেউ কাউন্সিলর হতে পারে সে লক্ষ্যে আপনারা প্রস্তুতি নিযন এবং দক্ষ কাউকে মনোনীত করুন যাতে আমি আগামী দিনের কাউন্সিলর হিসেবে তাকে গড়ে তুলতে পারি”।

কাউন্সিলর খোরশেদের এ ঘোষণায় সবাই সেসময় মনে করেছিলো হয়তো মেয়র পদে নির্বাচনের ইচ্ছা আছে খোরশেদের। সর্বশেষ করোনার গত দেড় বছরে জনস্বার্থে খোরশেদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড লোকের সে ভাবনাকে আরও মজবুত করেছিল। হয়তো সবাই মনে করেছিলো ধীরে ধীরে মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য দিকে খোরশেদ এড়িয়ে যাচ্ছেন।

কিন্তু বিধিবাম! খোরশেদের মেয়র পদে নির্বাচনের আশা ভেঙে চুরমার হয়ে যায় এক নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায়। জনৈক সায়েদা শিউলি নামক এক নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্কের ঘটনা জানাজানি হয়ে যাওয়ায় খোরশেদের ইমেজ কমতে কমতে শূন্যের কোঠায় চলে আসে। শিউলির দায়ের করা মামলার আসামী হয়ে দু মাস যাবত ফেরারী খোরশেদ হয়ে পড়েছেন জনবিচ্ছিন্ন। ফলে মেয়র নির্বাচনতো দূরে থাক, কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়াটাই এখন খোরশেদের জন্য দুরূহ হয়ে গেছে। তাছাড়া বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে যাবে না- এরকম ঘোষণায় খোরশেদের মেয়র নির্বাচনের স্বপ্নটাও ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছে। কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করবেন না আর মেয়র পদেও করতে পারছেন না। তাই নারায়ণগঞ্জবাসীর কৌতুহল “তাহলে কি করবেন খোরশেদ”।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ