শহিদুলের হুঁশিয়ারি “নিষ্ক্রিয়দের নেতৃত্ব মানবে না তৃণমূল”

নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের কমিটিতে ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে। কাউকে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে দেয়া হবে না। যারা দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় ছিলেন আর কমিটির লোভে জেগে উঠেছেন, তাদের নেতৃত্বে তৃণমূল মানবে না। মাঠ পর্যায়ে ত্যাগী নেতাকর্মীদের হাতে যুব দলের নেতৃত্ব তুলে দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি, অন্যথায় এর ফল শুভ হবে না বলে হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন মহানগর যুবদলের সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম।

যুবদল নেতা শহীদুল জানান, বিগত সময়ে সরকারের অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করে জেল-জুলুম হামলা-মামলার ভয়কে উপেক্ষা করে আমরা যুবদলের ব্যানার নিয়ে নারায়ণগঞ্জের রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। এর জন্য জেলও খেটেছি বহুবার। গত ৪ মার্চ ঢাকার পল্টনে যুবদলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাওয়ার সময় আমি গ্রেফতার হয়েছিলাম এবং টানা ৬২ দিন জেল খেটেছি। এর আগেও যুবদলের রাজনীতি করতে গিয়ে মামলা হামলার শিকার হয়েছি। তাছাড়া যুবদলের নেতাকর্মী ভাই ব্রাদার কেউ গ্রেপ্তার হলে তাদেরকে ছাড়ানোর জন্য দৌড়ঝাঁপ করেছি যেখানে যেটা লেগেছে সেটা দিয়েছি। তাদের পরিবারের খোঁজখবর নিয়েছি। তাই রাজপথের ত্যাগী নেতাকর্মীদের দুঃখ আমরা বুঝি।

শহিদুল বলেন, মহানগর যুবদলের কমিটি ভেঙে দেয়ার পর থেকে কিছু মৌসুমী নেতাকে দেখা যাচ্ছে কমিটিতে পদ পদবীর লোভে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন অথচ আন্দোলন-সংগ্রামে তাদেরকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। মহানগর যুবদলের যুগ্ম-সম্পাদক ছিলেন মনিরুল আলম সজল যুবদলের রাজনীতিতে তাকে কোনদিন দেখা যায়নি নেতাকর্মীদের সুখে দুখে তাকে কোনোদিন কাছে পাওয়া যায়নি অথচ এখন শুনছি তিনি নাকি যুবদলের পদ পাওয়ার জন্য মহানগর বিএনপি’র পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। যিনি কোনদিন যুবদলের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না, তাকে কিভাবে নেতা মানবে কর্মী-সমর্থকরা।

তিনি বলেন, মাজহারুল ইসলাম জোসেফ একসময় ছাত্র রাজনীতি করতেন কিন্তু দল ক্ষমতা ছাড়ার পর থেকে গত ১৫ বছর রাজনীতিতে তার কোনো অবদান নেই। দল ও নেতাকর্মীদের ভুলে তিনি ব্যক্তিগত সুখ-স্বাচ্ছন্দ নিয়ে জীবন কাটিয়েছেন। ইদানিং হঠাৎ করেই ঘুম ভেঙ্গে জেগে উঠেছেন এবং মহানগর যুবদলের শীর্ষ পদে তিনিও নাকি প্রার্থী, এমনটাই শোনা যাচ্ছে। দলের দুঃসময়ে যাকে কোনদিন রাজনীতিতে দেখা যায়নি তিনি কি করে একটি সংগঠনের প্রধান পান, সেটাই এখন নেতাকর্মীদের কাছে বিরাট প্রশ্ন।

তিনি আরো বলেন, রানা মুজিব একসময় মহানগর যুবদলের সহ সভাপতি ছিলেন কিন্তু আন্দোলন-সংগ্রাম আর পুলিশের হামলা মামলা জেল-জুলুমের ভয়ে বিদেশে পালিয়ে গিয়েছিলেন। যুব দলের গঠনতন্ত্রে উল্লেখ করা আছে, কেউ যদি পাঁচ বছর বা তার বেশি বিদেশে থাকে কিংবা রাজনীতি থেকে দূরে থাকে, তাহলে তাকে আবার পুনরায় সাধারণ সদস্য পদ গ্রহণ করে ধীরে ধীরে রাজনীতিতে অগ্রসর হতে হবে কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি দীর্ঘদিন বিদেশে কাটিয়েও এসে রানা মুজিব এখন সংগঠনের শীর্ষ পদের দাবিদার। কিন্তু স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই এ ধরনের অন্যায় তৃণমূল কোনোভাবেই মেনে নেবে না।

প্রসঙ্গত, গত ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে সভাপতি করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের ৫ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষনা করে কেন্দ্রীয় যুবদল। কমিটির বাকী সদস্যরা হলেন সিনিয়র সহ সভাপতি মনোয়ার হোসেন শোখন, সাধারণ সম্পাদক মমতাজউদ্দিন মন্তু, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাগর প্রধান ও সাংগঠনিক সম্পাদক রশিদুর রহমান রশু।

আংশিক কমিটি ঘোষনার ৫ মাস পর খোরশেদকেই সভাপতি রেখে ২০১ সদস্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করা হয়। চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি বাতিল করে দেয়া হয় মহানগর যুবদলের কমিটি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ