সোনারগাঁয়ে কোনঠাসা জাতীয় পার্টি, খোকার রহস্যময় নিরবতা

নারায়ণগঞ্জ মেইল: সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক কাণ্ডে সোনারগাঁ জাতীয় পার্টির নেতারা অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। সোনারগাঁয়ে জাতীয় পার্টির দাপটে অবস্থান থাকলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা রয়েছেন নিশ্চুপ। ইতিমধ্যে জাতীয় পার্টির বেশ কয়েজন নেতাও গ্রেফতার করা হয়েছে। আর প্রভাবশালী অনেক নেতা আত্মগোপনে রয়েছেন। অথচ এখনো পর্যন্ত রহস্যজনক কারণে নিশ্চুপ রয়েছেন টানা দুই মেয়াদ ধরে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য পদে থাকা জাতীয় পার্টির নেতা লিয়াকত হোসেন খোকা। জাতীয় পার্টির নেতাদের গ্রেফতারের বিষয় কোন প্রকার বিবৃতিও দেননি তিনি।

জানা গেছে, গত ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক নারীসহ অবস্থান করছেন এমন খবর পেয়ে স্থানীয় কিছু লোকজন, ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁর কক্ষটি ঘেরাও করেন। যদিও মামুনুল হক সঙ্গে থাকা নারীকে তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করেন। পরে সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে হেফাজতের একদল নেতাকর্মী, মাদ্রাসাছাত্র মিছিল নিয়ে এসে রয়েল রিসোর্টে ভাঙচূর চালিয়ে মামুনুলকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। একই সাথে আওয়ামী লীগের পার্টি অফিস ভাংচূর সহ বিভিন্ন জায়গায় নাশকতামূলক কর্মকান্ড করে। আর এই ঘটনায় জাতীয় পার্টির নেতাদেরসরাসরি যুক্ত রয়েছেন বলে অভিযোগ ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের।

৩ এপ্রিলের ঘটনায় গত ৯ এপ্রিল সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু বাদী হয়ে ১২৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫০-২০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে হেফাজত নেতা মাওলানা ইকবাল হোসেনকে। এছাড়াও মামলায় জাতীয় পার্টির নেতাদের মধ্যে আসামি করা হয়েছে উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম ইকবাল, পৌর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক, উপজেলা ছাত্র সমাজের সভাপতি ফজলুল হক মাস্টার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক পার্টির নেতা কাজী নাজমুল ইসলাম লিটু, জাতীয় পার্টির নেতা কাউসার, ওমর ফারুক টিটু, মোক্তার হোসেন, আলমগীর হোসেন অপুসহ বেশ কয়েকজনকে।

একই ঘটনায় যুবলীগ নেতা নাসির উদ্দীন আহাম্মেদ বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলাতেও উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচূরের অভিযোগে আসামি জাতীয় পার্টির বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী। পুলিশের মামলাতেও আসামি হয়েছেন পৌর জাতীয় পার্টি সভাপতি এমএ জামান ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক। মোট ৫ টি মামলায় মামলায় ৪৪৬ জনের নাম উল্লেখ করে ১৮০০ জনকে আসামী করা হয়েছে। ৭ মামলায় এখন পর্যন্ত পুলিশ ৬৩ জনকে গ্রেফতার করেছে।

গত ১৯ এপ্রিল সোমবার দুপুর ১টার দিকে শম্ভুপুরা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে সোনারগাঁ উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও শম্ভুপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বর্তমানে পুলিশ রিমান্ডে আছে আব্দুর রউফ। ইতিমধ্যে সোনারগাঁয়ের জাতীয় পার্টির প্রভাবশালী বেশ কয়েকজন নেতা গ্রেফতার হয়েছে। আর বাকিরা আত্মগোপনে রয়েছে। অথচ এবিষয়ে কোন মন্তব্য বা প্রতিবাদ না করে অনেকটা নিশ্চুপ রয়েছেন জাতীয় পার্টির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। তার নিশ্চুপ থাকা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে সোনাগাঁয়ের জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের মাঝে।

সোনারগাঁয়ের সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকার রহস্যময় নিরবতার বিষয়ে জানতে চাইলে সাংসদ খোকা নারায়ণগঞ্জ মেইলকে বলেন, রাজনৈতিকভাবে আমাকে কোনঠাসা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ