আইভীর উস্কানীমূলক বক্তব্যে ফের উত্তপ্ত না:গঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে ওসমান পরিবার ও চুনকা পরিবারের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরেই। দুই পরিবারের দ্বন্দ্ব ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারী সংঘর্ষে রূপ নিয়েছিল। সেই পরিস্থিতি আবারো তৈরী হচ্ছে বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল। ইতিমধ্যে নারায়ষগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী ওসমান পরিবার নিয়ে বিষোদগার করায় স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে। মেয়র আইভী সোমবার সালমা ওসমান লিপিকে নিয়ে একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে শামীম অনুসারিদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

জানা গেছে, বিভিন্ন অভিযোগে শহরে একের পর এক কর্মসূচী পালিত হচ্ছে মেয়রের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মেয়রও পাল্টা জবাব নিয়ে রাজনীতিতে সরব থাকছেন। কিন্তু নগরবাসী তাদের কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি মেয়রের বিরুদ্ধে হিন্দু সম্প্রদায় ও ওলামা পরিষদের নেতারা পৃথক ভাবে কর্মসূচীও পালন করেছিল। জিউস পুকুর ইস্যুতে খোকন সাহার একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে মামলা করেছিলেন মেয়র আইভী। যা নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করলেও এদিয়ে দলের নেতারা মেয়র আইভীর বিরুদ্ধে কোন কর্মসূচী পালন না করলেও মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসা ইস্যুতে বিভিন্ন কর্মসূচী পালিত হয়েছিল। জিউস পুকুর দখলের চেষ্টা, মাসদাইর কবরস্থান সংলগ্ন মাদ্রাসা ভেঙ্গে ফেলা, বাগে জান্নাত মসজিদ ভেঙ্গে ফেলার সিদ্ধান্ত, ডিআইটি মাসজিদ ভাঙ্গার চেষ্টার উঠে। সর্বশেষ জিমখানায় ৫৩৯ বছরের পুরাতন মোঘল আমলে নির্মিত একটি মসজিদের সম্পদ দখলের অভিযোগে মেয়রের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছিল মসজিদ কমিটি। তবে প্রতিটি কর্মসূচী পালনের ক্ষেত্রে সাংসদ শামীম ওসমানকে উস্কানী দাতা হিসেবে উল্লেখ করেছেন মেয়র আইভী। এমনকি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তব্যও দিয়েছেন।
সোমবার ২নং রেইল গেইট লঞ্চ ঘাটে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ৮ বছরে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত ‘আলোর ভাসান’ অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর বক্তব্য নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। ঐ অনুষ্ঠানে রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা বানায় মুক্তিযোদ্ধাকে রাজাকার বানায় বলে ওসমান পরিবারকে উদ্দেশ্য করে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী এই মন্তব্য করেন। এই মার্চ মাস আসলেই তাদের যত চ্যালা চামচা সকলে মিলে এমন সব আলোচনা এমন সব নাটক, এমন সব কথা শুরু করে, জুজুর ভয় দেখানো শুরু করে যেন কোনো কিছুই করা যাবে না। তারা ভাবছে নারায়ণগঞ্জে থেকে যা খুশি তাই করবে। কিন্তু এ পর্যন্ত তারা কোনোটাই সঠিকভাবে করতে পারে না। ভবিষ্যতেও ইনশাআল্লাহ পারবে না।

লিপি ওসমানকে উদ্ধেশ্য করে মেয়র বলেন, ওনারা (ওসমান পরিবার) বলে ১২ হাত শাড়ি পড়া নারী কিভাবে ক্ষমতায় থাকবে, তাহলে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কি ক্ষমতা চালাচ্ছেন না। তার নাম নিয়ে নারায়ণগঞ্জে আছেন। তার নাম নেয়া বন্ধ করেন, প্রশাসনের নাম নেয়া বন্ধ করেন, দেখেন আপনারা কোথায় যান। রিক্সাওয়ালা থেকে শুরু করে কুলি মজুরা আপনাদের পিটিয়ে মারবে এই শহরে। একের পর এক ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন, কখনো দেবত্তর সম্পত্বি, কখনো মসজিদের সম্পতি, কখনো হকার। ওনার ওয়াইফ সম্মান করে লিপি ভাবি বলে ডাকি, উনি বলেন পালাবার নাকি পথ পাবো না। আপনি মনে হয় ভুলে গেছেন ২০০১ সালে কিভাবে পালিয়েছিলেন। এদিকে, মেয়রের এমন বক্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ওসমানের অনুসারিরা একের পর এক স্ট্যাটাস দিতে থাকেন। কেউ কেউ লিখেছেন, হকারদের হাতে মাইর খাইছেন সেটাটি ভুলে গেছেন। তবে পরিস্থিত শান্ত করতে কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন মলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ