নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়নগঞ্জ সিটি করপোরেশন মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভি বলেছেন, আপনারা প্রধানমন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে খাচ্ছেন। তার নাম নেয়া বন্ধ করেন, প্রশাসনের সাহায্য নেয়া বন্ধ করেন, দেখেন আপনারা কোথায় যান। রিক্সাওয়ালা থেকে শুরু করে কুলি মজুররা আপনাদের পিটিয়ে মারবে এই শহরে।
তিনি বলেন, একের পর এক ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন, কখনো দেবত্তর সম্পত্বি, কখনো মসজিদের সম্পতি, কখনো হকার। ওনার ওয়াইফ সম্মান করে লিপি ভাবি বলে ডাকি, উনি বলেন পালাবার নাকি পথ পাবো না। আপনি মনে হয় ভুলে গেছেন ২০০১ সালে কিভাবে পালিয়েছিলেন।
সোমবার (৮ মার্চ) রাতে ২নং রেইল গেইট লঞ্চ ঘাটে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ৮ বছরে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত ‘আলোর ভাসান’ অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী এসব কথা বলেন।
মেয়র আরও বলেন,আশিক হত্যা হওয়ার ১ মাস আগে সে আমার বাসায় এসে আমাকে বলেছিলো, আজমেরী ওসমান আমাকে মেরে ফেলবে। আমি তখন তাকে বলেছিলাম তুমি তাহলে দেশের বাইরে অথবা কোথাও চলে যাও। সে যায়নি এবং তাকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকান্ড নিয়ে আমি জেলা প্রশাসনের এক সভায় বলেছিলাম,তখন সেখানে উপস্থিত এক এমপি জবাব দিয়ে উঠলেন, এরকম দু‘একটা ঘটনা ঘটতেই পারে। এরপরই মেধাবী ছাত্র ত্বকিকে হত্যা করা হলো।
মেয়র আইভি বলেন, আজ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে অনেক হত্যা হয়েছে এবং কোন হত্যারই বিচার হয়নি। তারা এমন ভাব দেখায় যে তাদের পন্ডিতি কেউ বুঝেই না। তারা জানেও না মানুষ তাদের কতটা ঘৃনা করে। তারা আমাদেরকে ভয় দেখিয়ে রাখতে চায়, নারায়ণগঞ্জকে তারা ভিতুর শহর বানাতে চায়।
মেয়র বলেন, আপনারা এখানে যারা আছেন তারা জানেন মার্চ মাস আসলেই তারা এবং তাদের চেলা চামুন্ডারা এমন কর্মকান্ড শুরু করে যে তাদের ভয়ে কিছুই করা যাবে না। তারা মনে করে নারায়ণগঞ্জ তাদের হাতের মুঠোয়। এখনো হয়তো ত্বকী হত্রার বিচার হয়নি, কিন্তু বিচার হবে না এটা মনে করা কিন্তু ঠিক না। বর্তমানে ত্বকী আমাদের আন্দোলনের ভাষা হয়ে দাড়িয়েছে। সারা বাংলাদেশে ত্বকীর নাম ছড়িয়ে পড়েছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই নারায়নগঞ্জের ৭ খুনের বিচার আপনি করেছেন, তবে কেন ত্বকী হত্যার বিচার হচ্ছেনা। কারা এর পিছনে দায়ী আপনি জানেন, তারা কি রাষ্টের এতই বড় যে ত্বকী হত্যার বিচার করা যাবে না। ওরা আজ যা ইচ্ছে তাই করছে। রাজাকারদের মুক্তিযোদ্ধা বানাচ্ছে । তারা ডিসি অফিসে, এসপি অফিসে বিভিন্ন উপজেরা প্রশাসনের অনুষ্ঠানে গিয়ে অনেক বড় বড় কথা বলে। কলিজা খুলে নিবে, পিষাইয়া মারবে, মুরগিকে খাওয়াবে, মাছকে খাওয়াবে, কত কথা যে বলতে পারে।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ এর পরে আলী আহাম্মদ চুনকা এই শহরে ছিলো, আওয়ামী লীগকে রক্ষা করেছে এ শহরের মানুষকে রক্ষা করেছে। ওরা আমাকে কখনোই দাবিয়ে রাখতে পারবে না। তারা নারায়ণগঞ্জের কিসের অভিভাবক, লুটপাটের, সন্ত্রাসের, খুনের। আমরা সবাই চুপসে গিয়েছি, কেন? কথা বলুন। ত্বকী আমাদের শিখিয়ে গেছে কিভাবে কথা বলতে হয়, তার বিচার হবে।
এ সময় নারায়ণগঞ্জের সংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান শেষে শীতলক্ষা নদীতে প্রদীপ ভাসিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়।