নারায়ণগঞ্জ মেইল: কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা আড়াইহাজারের নজরুল ইসলাম আজাদের উপর গত ১৬ ফেব্রƒয়ারি হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন সয়ং আজাদ। আজাদের দাবি আড়াইহাজারের সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবুর লোকজন এ হামলা চালিয়েছেন। তবে আড়াইহাজার বিএনপির অপর একটি অংশের দাবি বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কমিটি দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন নেতাকর্মীদের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় ক্ষুব্দ নেতাকর্মীরা এ হামলা চালিয়েছে। তবে স্থানীয়দের মতে, যারাই করুক হামলাতো হয়েছে। হামলায় আজাদের দামি গাড়ি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। কয়েকটি মোটর সাইকেল ভাংচুর করাসহ একটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভাংচুর করা হয়েছে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য জুয়েল আহমেদের বাড়িঘরেও। এতো কিছুর ক্ষতি সাধর হয়ে গেলো অথচ আজাদ কিংবা তার অনুসারীদের কেউ এ বিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ করলেন না। এতে করে পুরো বিষয়টাতেই একটা রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন রাজনীতি সংশ্লিষ্টরা। সেই সাথে বারবার আজাদের এ ধরনের আচরণে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি বিব্রত হচ্ছে বলেও মনে করেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আড়াইহাজার থানার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, হামলার ঘটনা শুনেছি কিন্তু এ বিষয়ে কেউ কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা প্রয়োজনীয় গ্রহন করবো।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে যার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে সেই জুয়েল আহমেদ জানান, আলাপ আলোচনা চলছে। হাই কমান্ডের অনুমতি পেলেই মামলা করা হবে।
সূত্র মতে, এর আগেও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৯ তম মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানেও স্থানীয় পাওনাদারদের হামলার শিকার হন নজরুল ইসলাম আজাদ। বিএনপির এমন চরম দু:সময়ে রাজনীতির নামে বানিজ্যে ও দোকান খুলে বসা আজাদকে তাই আড়াইহাজার বিএনপি থেকে বিতারিত করার লক্ষ্যেই এমন হামলার শিকার হন বলে জানা যায়।
এছাড়া তিনি জেলা বিএনপির কমিটিতে সাধারণ সম্পাদকের পদ দেয়ার কথা বলে আজহারুল ইসলাম মান্নানের কাছ থেকে দশ লাখ টাকা নিয়েছিলেন চেকের মাধ্যমে, যা চেকের ছবিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিলো। এই বিষয়টি নিয়ে বিএনপির ভেতরে আজাদ এখনো সমালোচিত হচ্ছেন।
সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপিতে কোন পদ-পদবী না থাকলেও বিগত কয়েক বছর ধরে উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন আড়াইহাজারে নজরুল ইসলাম আজাদ। আড়াইহাজার বিএনপির সিনিয়র নেতাদের অবজ্ঞা করে বহিরাগতদের প্রাধান্য দিয়ে হঠাৎ করেই আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসেন এই নেতা।একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় গ্রুপিং লবিং আর টাকা খরচ করে মনোনয়নও হাসিল করে নেন সুচতুর আজাদ। মনোনয়ন পাওয়ার পর পরই হাতিয়ে নেন নিজ দলের নেতাকর্মীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমান টাকা। তাছাড়া তিনি বিদেশ নেওয়া, সুদের নামে, ব্যবসায় মুনাফা দেওয়া ও পার্টনার করে নেওয়ার নামে হাতিয়ে নেন বিপুল পরিমান অর্থ। যা রীতিমত ফাঁস হতে শুরু করেছে। তাছাড়া বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কমিটি দেয়ার নাম করে নেতাকর্মীদের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার খবর ফাঁস হয়ে যাওয়ায় ধীরে ধীরে আড়াইহাজার বিএনপির নেতাকর্মীদের আস্থা হারিয়ে ফেলছেন নজরুল ইসলাম আজাদ। তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে নিজদলের নেতাকর্মীদের হামলার মাধ্যমে।