নারায়ণগঞ্জ মেইল: সোনারগাঁয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের থানা ও ইউনিয়ন কমিটি দেওয়ার নামে বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে চার নেতার বিরুদ্ধে। জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সালাহউদ্দিন সালু ও সোনারগাঁ স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নাসিরউদ্দিনের বিরুদ্ধে কমিটি দেওয়ার নাম করে নেতাকর্মীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। আর তাই অবিলম্বে এ কমিটি বানিজ্য বন্ধে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
জানা যায়, প্রায় ১০ বছর পূর্বে সোনারগাঁ স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করা হয়েছিলো। বর্তমান জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সালাহউদ্দিন সালুকে আহবায়ক ও আবু সিদ্দিককে সদস্য সচিব করে দেয়া সে কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়নি কোনদিন। এর মধ্যে গত বছর দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান সদস্য সচিব আবু সিদ্দিক।
এদিকে এ চার নেতা টাকার বিনিময়ে অনেক আওয়ামীলীগ নেতাকেও স্বেচ্ছাসেবক দলে পদ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গত ১৯ জানুয়ারি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এলাকায় আওয়ামীলীগ নেতা হিসেকে পরিচিত মনির হোসেনের বাড়িতে মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল। এ নিয়ে গণ মাধ্যমে বিস্তর লেখালেখি হয়। তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে বয়ে যায় সমালোচনার ঝড়। এরপর থেকেই থলের বেড়াল বেড়িয়ে আসতে শুরু করে আর প্রকাশিত হতে থাকে স্বেচ্ছাসেবক দলে কমিটি বানিজ্যের নানা দিক।
নেতাকর্মী সূত্রে জানা যায়, কাঁচপুরের মনির হোসেন মেম্বার এলাকায় আওয়ামীলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত। গত উপজেলা নির্বাচনে সোনারগাঁ উপজেলায় আওয়ামীগের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী বাবুল ওমরের পক্ষে ভোট চেয়ে পোষ্টার ছাপিয়েছিলেন মনির হোসেন মেম্বার। সে পোষ্টারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়ের ছবি ছিলো, ছিলো জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু শ্লোগানও। সেইসাথে ছিলো আওয়ামীলীগের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী বাবুল ওমরের ছবি ও তার পক্ষে ভোট প্রার্থনা। সৌজন্যে ছিলো মনির হোসেন মেম্বারের নাম ও ছবি। কাঁচপুর এলাকায় আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে তিনি দীর্ঘদিন যাবত জড়িত বলেও জানা যায়।
আত্মস্বীকৃত এই আওয়ামীলীগ নেতাকে বিএনপির সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সমবায় বিষয়ক সম্পাদক পদ দিয়ে বিএনপি নেতা বানানোর অভিযোগ উঠেছে সংগঠনের সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম ও মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এ পদ বানিজ্য সংগঠিত হয়েছে বলে অভিযোগ নেতাকর্মীদের। ইতিপূর্বেও এ দুজনের বিরুদ্ধে একই ধরনের একাধীক অভিযোগের খবর গণ মাধ্যমে এসেছে। জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি গঠনে সায়েম মাহবুবের বিরুদ্ধে লক্ষ লক্ষ টাকা বানিজ্যের অভিযোগের পাশাপাশি বর্তমানে থানা কমিটি গঠনেও একই ধরনের বানিজ্যের অভিযোগ জানিয়েছেন ভুক্তভোগী নেতাকর্মীরা। সারা বছর রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলে পদের নিশ্চয়তা মিলে না অথচ টাকা হলে ঘরে বসেও নাকি পদ পাওয়া যায়।