নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের অভিভাবক ছিলেন প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গোপীনাথ দাশ। কয়েক দশক যাবত হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের বিপদ আপদে ছায়া হয়ে থেকেছেন তিনি, দিয়েছেন সাহস যুগিয়েছেন উৎসাহ। কি দিন কি রাত, যখনই কারো কোন সমস্যার কথা শুনেছেন তৎক্ষনাত ছুটে গিয়েছেন এবং সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করতেন। হিন্দুদের এই সুখ দু:খের সাথী গত বছরের ১১ নভেম্বর সকলকে কাঁদিয়ে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। নারায়ণগঞ্জের অবহেলিত হিন্দু সম্প্রদায় হারায় তাদের দীর্ঘদিনের অভিভাবককে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গোপীনাথ দাস ছিলেন একজন সফল সংগঠক। নারায়ণগঞ্জের অসহায় হিন্দু সম্প্রদায়কে সহযোগিতার জন্যে নারায়ণগঞ্জ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদকে নিজ দক্ষতায় সুন্দরভাবে সাজিয়ে সঠিকভাবে পচিালিত করেছেন। এ দুটি সংগঠনের মাধ্যমেই নারায়ণগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের সকল সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছেন তিনি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে গেছেন। সেইসাথে উদিয়মান নেতৃত্বকে বিকশিত হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন যাতে করে তার অবর্তমানে শক্ত হাতে হাল ধরার মতো নেতৃত্ব তৈরী হয়। তারই সুফল হিসেবে উঠে এসেছেন আরেক সফল সংগঠক শিখন সরকার শিপন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন ইতিমধ্যেই একজন কর্মীবান্ধব নেতা হিসেবে নিজেকে পরিচিত করতে সক্ষম হয়েছেন। সেইসাথে কমান্ডার গোপীনাথের ধারাবাহিকতা অব্যহত রেখে সাংগঠনিকভাবেও দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন তিনি। নারায়ণগঞ্জের সদর বন্দর সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে আড়াইহাজার কিংবা রূপগঞ্জ সোনাগাঁও- যেখানেই কোন সমস্যার কথা শুনেন সেখানেই ছুটে যান, যেমনটা এক সময় ছুটে বেড়াতেন কমান্ডার গোপীনাথ দাশ। তাছাড়া বিশ্বব্যাপী চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের শুরুতে যখন কেউ ঘর থেকে বের হতে সাহস করে নাই, তখনও নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিন রাত ছুটে বেড়িয়েছেন শিখন সরকার। কখনো অসহায়দের জন্যে চাল ডাল নিয়ে, কখনোবা অসুস্থ্যদের স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে, আবার মৃতদেহ সৎকারেও রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। আর এভাবে কমান্ডার গোপীনাথ দাশের শূণ্যতা কখনো বুঝতে দেননি শিখন সরকার শিপন, যিনি কমান্ডার গোপীনাথের মতোই ভরসার আশ্রয়স্থলে পরিনত হচ্ছেন দিনকে দিন।