নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, বার নির্বাচন আইনজীবী সমিতির ইতিহাসে কলঙ্কিত অধ্যায় তৈরি করেছে করে। আমরা আইনজীবী হিসেবে দীর্ঘদিন যাবৎ পেশা পরিচালনা করে আসছি। আমরা বার নির্বাচনে বিভিন্ন সময় সেক্রেটারি থেকে শুরু করে সভাপতি পদেসহ বিভিন্ন পদে নির্বাচন করে নির্বাচিত হয়েছি। গত ২৮ তারিখের মতো নির্বাচন জীবনেও কখনও দেখেনি। আজকে মনে হয়েছে এই সরকার আইনজীবীদের মতামতকে সমিতির ভয় পেয়েছে। ভয় পাওয়ার কারণে তারা নারায়ণগঞ্জের সর্বস্থান থেকে তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের কুড়িয়ে এনে আজকে তারা আদালতকে জিম্মি অবস্থায় পরিনত করেছিলো। তারা শুধু জিম্মি অবস্থায় করে নাই, তারা সেদিন যে ন্যাক্কার জনক ঘটনা ঘটিয়েছে সেই ন্যাক্কার জনক ঘটনা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।
রোববার ( ৩১ জানুয়ারি ) দুপুরে আদালত পাড়ায় সদ্য অনুষ্ঠিতব্য নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখান এবং আইনজীবী ও সাংবাদিকদের উপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি একথা বলেন তিনি ।
এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আইনজীবীদের উপর নির্যাতন হয়েছে। ছবি তোলার কারনে সাংবাদিকদের উপরে যে নির্যাতন হয়েছে তা বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। আমরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চেয়েছিলাম। সুষ্ঠু নির্বাচন চাওয়া কি অপরাধ। তারা আইনজীবীদের জনমতকে ভয় পেয়ে আজকে তারা দলীয় নির্বাচন কমিশন গঠন করে । সেই নির্বাচনকে একটি প্রহসনের নির্বাচনে পরিনত করেছে। তাদের অবস্থা খারাপ দেখে বিরোধী দলকে নির্বাচন থেকে দূরে নেওয়ার জন্য হায়নার মতো আইনজীবীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ভোট কেন্দ্র দখল করে তারা মনের মতো করে রেজাল্ট দিয়েছে। তারা যে রেজাল্ট দিয়েছে সেই রেজাল্ট আজকে এদেশের মানুষ মানে না, আইনজীবী সমাজ মানে না।
তিনি বলেন, আপনার জানেন আমাদের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী আজকে অসুস্থ। তাকে এরকম ভাবে প্রহর করা হয়েছে। বর্তমানে সে চিকিৎসাধীন আছেন। পঁচিশ জন আইনজীবী আহত হয়েছেন। সন্ত্রাসীদের এনে আইনজীবীদের পিটানো হয়, নির্যাতন। সেটি কোন একটি সভ্য দেশে , সভ্য রাজনীতি দলের কাজ হতে পারে না। আওয়ামী লীগ একটি প্রাচীন রাজনৈতিক দল হওয়ার শর্তও আজকে নারায়ণগঞ্জে আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে তার আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। যে প্রেসকাইপের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে , আমরা সেই ফলাফল মানি না। আমরা এই ফলাফল প্রত্যাখান করছি। এই নির্বাচন বাতিল করে , এই নির্বাচন কমিশন বাতিল করে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে আইনজীবী সমিতিতে একটি নতুন নির্বাচন দিতে হবে। আইনজীবীদের শুধু নির্বাচন দিলেই চলবে না। তারা আইনজীবী ও সাংবাদিকদের উপরে যে হামলা চালিয়ে তাদের উপর নির্যাতন করা হয়েছে তা সবাই বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়ায় দেখেছেন। আমরা এই নির্যাতনের সুষ্ঠু বিচারের দাবি করছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা নির্বাচনে আগেই এই ধরনের ঘটনার আসংখ্যা করেছিলাম। যার জন্য আমরা জেলা ও পুলিশ প্রশাসন এবং প্রেসক্লাব, জজ কোর্টসহ সকল জায়গায় আমরা আবেদন করেছিলাম। যাতে করে নারায়ণগঞ্জে আদালতে বহিরাগতরা আস্তে না পারে। অথচ বহিরাগতদের এনে জমা করে অস্ত্রের মুখে আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে কলুষিত করা হয়েছে। আমরা অবিলম্বে এই নির্বাচন বাতিল করে নিরপেক্ষ আইনজীবীদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করে নতুন নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. জাকির হোসেন, সাবেক পিপি এড. নবী হোসেন, এড. আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ভুঁইয়া, এড. রফিক আহাম্মেদ, এড. সামসুজ্জামান খোকা, এড. সৈয়দ মশিউর রহমান শাহিন, এড. রকিবুল হাসান শিমুল, এড. আজিজুর রহমান মোল্লা, এড. আবু আল ইউসুফ টিপু, এড. কাজী আবদুর গাফফার, এড. মাহমুদুল হক আলমগীর, এড. আবদুস সামাদ মোল্লা, এড. নুরুল আমিন মাসুম, এড. নজরুল ইসলাম মাসুম, এড. আশরাফুল আলম সিরাজী রাসেল, এড. আল আমিন সিদ্দিকী, জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতি এড. আজিজুল হক হান্টু, সাধারণ সম্পাদক এড. আবুল কালাম আজাদ জাকির, যুগ্ম সম্পাদক এড. এইচএম আনোয়ার প্রধান, সাংগঠনিক সম্পাদক এড. ওমর ফারুক নয়ন, আইনজীবী ফোরাম নেতা এড. শেখ আনজুম আহমেদ রিফাত, এড. ফজলুর রহমান ফাহিমসহ বিএনপিপন্থী আইনজীবী।