নারায়ণগঞ্জ মেইল: টানা তৃতীয়বার আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের ভাগ্যের পরিবর্তন না ঘটলেও সুবিধাবাদি ও অনুপ্রবেশকারী নেতারা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে। যা নিয়ে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে ত্যাগী নেতাদের ক্ষোভ দিন দিন বাড়ছেই। তাই বিভিন্ন সময়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বক্তব্য দিয়েছিলেন, দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। তাই এবার দলের ত্যাগী নেতাদের জন্য কিছু করবো। কিন্তু শামীম ওসমানের এমন বক্তব্যের পর তা বাস্তবে রূপ নিতে পারেনি। বরং সুবিধবাদি ও অনুপ্রবেশকারী নেতাদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
সর্বশেষ ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে দলের ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে হাইব্রীড, বিএনপি ও জামাতের সক্রিয় কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাই দ্রুত শামীম ওসমানের বক্তব্যের বাস্তবরূপ দেখতে চান ত্যাগী কর্মীরা। কেননা ইতিমধ্যে বিতর্কিত নেতারা আরো দাপুটে হয়ে উঠেছেন। আর বিতর্কিতদের দাপটে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরাও অনেকটা কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন। নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন ধরনের অপকর্মে জড়িয়ে পরেছে বিতর্কিতরা।
বিশেষ করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নারায়ণগঞ্জে বিতর্কিতরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। যা এখনো চলমান রয়েছে। নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায়ও ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতাদের নাম ব্যবহার করে এলাকার আধিপত্য বিস্তার, তেল সেক্টর, ঝুট সেক্টর নিয়ন্ত্রণ, জমি দখলে লিপ্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এসব অপরাধ কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণে জেলার শীর্ষ নেতাদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে মনে করছেন দলের তৃনমূলের নেতাকর্মীরা। ক্ষমতাসীন দলের নাম ব্যবহার করে আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বের জের ধরে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে বিতর্কিতরাই উস্কানীমূলক বক্তব্য দিয়ে শহরকে অশান্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, দলের বিতর্কিতদের তালিকা প্রস্তুত হয়েছে বলে দলের এক শীর্ষ নেতা দাবী করেছেন। পাশাপাশি ত্যাগী নেতাকর্মীদেরও যথাযথ মূল্যায়নের দাবী উঠেছে। যদিও ইতিমধ্যে দলের ত্যাগী নেতারা রাজনীতিতে থেকে দূরে থাকছেন। আর এই সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছেন বহিরাগতরা। অভিযোগ রয়েছে, নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের নাম ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা বিতর্কিত কর্মকান্ডে অংশ নিচ্ছে। এমনকি এসব বিতর্কিত কাজের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নানা বিতর্কে জড়িয়ে পরেছে। এসব কারনে বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। তবে বিতর্কিতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াসহ ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়িত করার দাবীটিও জোড়ালো হচ্ছে।