নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের অত্যন্ত জনপ্রিয় মেয়র ডা: সেলিনা হায়াত আইভী। পরপর তিনবারের মেয়র আইভীর আকাশচুম্বি গ্রহনযোগ্যতা একদিনে তৈরী হয়নি। দিনের পর দিন নগরবাসীর বিভিন্ন চাহিদা পূরণের মাধ্যমে আজ এ পর্যায়ে এসে পৌছেছেন তিনি। বিশেষ করে বিভিন্ন নাগরিক সমস্যা সমাধানে আইভীর তাৎক্ষণিক নেয়া পদক্ষেপগুলো প্রশংসিত হয়েছে সর্বত্র। মন্ডলপাড়ার ট্রাক স্ট্যান্ড সরানোর সময়ে নারী হয়ে কোমরে আঁচল পেচিয়ে যেভাবে তেড়ে গিয়েছিলেন মেয়র আইভী, তা কি এতো সহজে ভুলতে পারবে নগরবাসী।
তবে আইভীর সেই পুরানো চরিত্র আর খুঁজে পাওয়া যায়নি চলমান করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায়। করোনার সেই প্রথম তিনমাসে প্রায় হাত পা গুটিয়ে বসেছিলেন নারায়ণগঞ্জের নগরমাতা। এক মুঠো চাল কিংবা একটা হ্যান্ড স্যানিটাইজার কারো হাতে তুলে দিতেও তিনি রাস্তায় নামেননি। বরং যে নগরবাসী বারবার তাকে ভালোবেসে ভোট দিয়ে মেয়র বানিয়েছে, তাদের সাথেও ফোনে খারাপ আচরণ করেছেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা: সেলিনা হায়াত আইভী পেশায় একজন চিকিৎসক। একজন জনপ্রতিনিধির পাশাপাশি একজন চিকিৎসক হওয়ায় করোনা মহামারিতে আইভীর কাছে নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রত্যাশা ছিলো আকাশচুম্বি। কিন্তু মেয়র হিসেবে জনগনের পাশে দাড়ানোর বা দুস্থ্য অসহায় মানুষের দ্বারে দ্বারে ছুটে বেড়ানোর কথা থাকলেও লকডাউনের তিন মাসে বাসা থেকেই বের হননি তিনি। যে নারায়ণগঞ্জবাসী বারবার ভোট দিয়ে সেলিনা হায়াত আইভীকে মেয়র নির্বাচিত করেছেন, চরম দু:সময়ে তারা তাদের সেই প্রিয় মেয়রকে খুঁজেই পেলেন না। লকডাউনে কর্মহীন অসহায় মানুষের মাঝে নিজের হাতে এক মুঠো চাল দিতেও দেখা যায়নি তাকে। সরকারী ত্রাণের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিরা তাদের ব্যক্তিগত তহবিল থেকেও সাধারণ মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করে থাকলেও নাসিক মেয়র আইভী সে কাজটিও করেননি।
একজন জনপ্রতিনিধির পাশাপাশি সিটি মেয়র আইভী একজন চিকিৎসক। নামের আগে সব সময় ডা: কথাটি লেখা থাকলেও নারায়ণগঞ্জবাসী তার চিকিৎসা সেবা কখনো পাননি তাই এবার ভয়াবহ করোনা ভাইরাসের প্রকোপে নগরবাসী ভেবেছিলো চিকিৎসক আইভীর সেবা পাবেন নারায়ণগঞ্জবাসী। কিন্তু তাদের সে আশায়ও গুড়েবালি দিয়েছেন নাসিক মেয়র। সারা দেশের চিকিৎসক সমাজ যেখানে মৃত্যু ভয়কে উপক্ষো করে করোনার বিরুদ্ধে ফ্রন্টলাইনার হিসেবে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন, সেখানে ডা: সেলিনা হায়াত আইভী নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলেন নিজ বলয়ে।
আগামী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে। গত কয়েকবারের নির্বাচনে অপ্রতিদ্বন্দ্বী আইভী এবারো স্বপ্ন দেখছেন চতুর্থবারের মতো মেয়র হওয়ার। তবে করোনার প্রথম তিন মাসের অভিজ্ঞতা আইভীকে অনেক পেছনে ঠেলে দিয়েছে আগের সেই জনপ্রিয়তা থেকে। সেই তিনমাসের নিস্ক্রীয়তা তাই আগামী নির্বাচনে আইভীর জয়ে কোন প্রভাব ফেলে কিনা তা সময়ই বলে দেবে।