নারায়ণগঞ্জ মেইল: দীর্ঘ প্রায় ১০ মাস কমিটিবিহীন থাকার পরে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির একটি আপদকালীন কমিটি ঘোষনা করেছে কেন্দ্র। তিন মাসের এই আহবায়ক কমিটির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সাবেক জেলা বিএনপির বিতর্কিত সভাপতি এড. তৈমূর আলম খন্দকারের হাতে। এই কমিটি তিন মাসের মধ্যে থানা কমিটি গঠন করে জেলার সম্মেলন আয়োজন করবে-এমনটাই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে। আর এ কারনেই শংকিত হয়ে পরেছেন জেলা বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা। বিগত সময়ের অভিজ্ঞতা থেকে তাদের এই শংকার তৈরী হয়েছে বলে জানা গেছে। ইতিপূর্বে বিভিন্ন কমিটি গঠন কিংবা পদ পদবী বিতরণে এড. তৈমূর আলম খন্দকার যে হাদিয়ার বাক্সের প্রচলন করেছিলেন তা এবারেও অব্যহত থাকে কিনা সে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তারা।
নেতাকর্মী সূত্রে জানা যায়, এর আগে দীর্ঘ সময় জেলা বিএনপির সভাপতি পদে একক আধিপত্য ছিলো এড. তৈমূর আলম খন্দারের। সাংগঠনিক নিয়ম কানুন কিংবা তৃণমূলের মতামত, কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করতেন না বিএনপির এই নেতা। যার কাছ থেকে যখন সুবিধা পেতেন তাকেই জেলা কিংবা থানার বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত করতেন। এমনও হয়েছে একই পদ তিন চারজনকে দিয়ে দিয়েছেন তৈমূর। আবার সুবিধা চেয়ে না পেয়ে অনেক নেতাকর্মীকে করেছেন পদচ্যুত। সে সময়ে জেলা বিএনপিতে সবচেয়ে বেশী যে শব্দটি চালু হয়েছিলো তা হলো ‘হাদিয়ার বাক্স’। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির অনেক নেতাকর্মী জানান, “এড. তৈমূর মানেই হাদিয়া। হাদিয়া ছাড়া তিনি কাউকে কোন পদ দেন না, এমনকি কারো অনুষ্ঠানে অতিথি হতেও হাদিয় নেন তিনি। আর তাই পুনরায় তাকে জেলা বিএনপির আহবায়ক করায় এবং থানা কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেওয়ায় শংকিত হয়ে পরেছে জেলা বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। দীর্ঘদিন দলের জন্যে আন্দোলন সংগ্রাম করেও কমিটিতে তাদের ঠাই নাও হতে পারে যদি তৈমূর আগেও মতো হাদিয়ার বাক্স খুলে বসেন।”
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় নির্দেশে বাতিল করে দেয়া হয় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি। ২০১৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারী কাজী মনিরুজ্জামানকে সভাপতি আর অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে সাধারণ সম্পাদক করে ঘোষনা করা হয়েছিলো নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র ২৬ সদস্যের আংশিক কমিটি। মূলত ব্যবসায়ী পরিচয়ের নেতা কাজী মনিরকে সভাপতি আর যুবদল থেকে সরাসরি জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক পদে প্রমোশন পান অধ্যাপক মামুন মাহমুদ।
এরপর ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ২০৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করা হয়। যদিও কমিটি অনুমোদন করা হয় ১৩ মার্চ কিন্তু রহস্যজনক কারনে তা ২৭ মার্চ প্রকাশ করেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। গুঞ্জণ শোনা যায়, এ সময়ের মধ্যে কমিটি নিয়ে বিশাল অংকের পদ বানিজ্য করেন সভাপতি সেক্রেটারী। তাছাড়া কোন প্রকার আলাপ আলোচনা ছাড়াই ফতুল্লা থানা বিএনপির কমিটি ঘোষনা নিয়েও বিতর্কের জন্ম দেন এ দুজন।