নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জের সদর মডেল থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম ও আসাদুজ্জামানের পর নয়া ওসি শাহ জামানের যোগদানের একদিন পরই নানা বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে। শাহ জামানের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা হয়েছিল এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কেননা পর পর চার ওসিকে নিয়েই সদর থানায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। তবে শাহ জামানের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম জানিয়েছিলেন, আমার জানা মতে তার বিরুদ্ধে যে অভিযাগ করা হয়েছিল তার প্রমাণ না পাওয়ায় খারিজ করে দেয়া হয়েছিল।
এদিকে, শাহ জামানের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ উঠে আসছে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার থাকাকালীন সময়ে বিশেষ সুবিধায় মিথ্যা মামলা নেয়া, থানায় দেনদরবার করাসহ বেইনী কাজের নানা অভিযোগ আসতে শুরু করেছে। ওসি শাহ জামানের সাথে উপর মহলের লোকের সাথে সুসম্পর্ক রয়েছে বলে প্রচার করে থাকেন। আর সেই উপর মহলের আশির্বাদেই নাকি অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা থেকে তাকে বাদ দেয়া হয়েছে। শুধু সাধারণ মানুষই নয়, ওসি শাহ জামানের আক্রোশের শিকার হয়েছিল পুলিশ সদস্যরাও। একটি ট্রাকে থাকা অবৈধ মাল উদ্ধারের অভিযান পরিচালনা করাকে কেন্দ্র করে ১২জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা নিয়েছিলেন ওসি শাহ জামান। ঐ সময় ১২জন পুলিশ সদস্যের স্ত্রী-সন্তানরা শাহ জামানের পায়ে ধরে কান্না করলেও মন গলেনি তার। ঐ ঘটনায় ১২জন পুলিশ সদস্যই চাকুরী হারিয়েছেন। একই সাথে এখনো কারাভোগ করছেন।
এ ব্যাপারে ওসি শাহ জামানের সাথে যোগাযোগ করলে প্রথমে তিনি কিছু বলতে না চাইলেও পরবর্তিতে মামলার কথা স্বীকার করেন। আর ১২ জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দায়ের করার মামলায় বেইনী কিছু করা হয়নি বলে জানান শাহ জামান।
অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, ঘটনার দিন একটি ট্রাকে অবৈধ মালামাল আসছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে ডিএমপির একটি ডিবির টিম অভিযানে চালায়। পরে ট্রাকটি দ্রুত গতিতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের দিকে ছুটে যায়। ডিএমডির ডিবি পুলিশ তখন ঢাকা জেলা ডিবি পুলিশকে জানায়। পরে ঊভয় টিমের অভিযানে ট্রাকটি আটক করা হয়। কিন্তু ট্রাকের কাগজপত্র যাচাই বাছাইয়ের পর বৈধ হলে ছেড়ে দেয়। কিন্তু ট্রাকে থাকা পণ্যের মালিক এতো ক্ষিপ্ত হন। পরে ওসি শাহ জামানের নির্দেশে ডিবি পুলিশের সকল সদস্যের গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের খবর পেয়ে গ্রেফতারকৃতদের স্ত্রী-সন্তানদের কান্নায় পুরো থানা কম্পিত হলেও মন গলেনি শাহ জামানের। পণ্যের মালিককে বাদি করে ডিবি পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছিল।
এদিকে, সদর মডেল থানায় পুনরায় বিতর্কিত ওসি যোগদানকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ মানুষ। এরআগে নারায়ণগঞ্জের আলোচিত জিসা মনি কাণ্ডে আলোচিত সমালোচিত সদর মডেল থানার ওসি আসাদুজ্জামানকে বদলি করা হয়েছে ২৫ নভেম্বর। আসাদকে এসবিতে বদলি করা হয়েছে। তার স্থানেই সদর থানায় ওসি হিসেবে যোগ দিয়েছেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ওসি শাহ জামান। এর আগে ইয়াবা সংক্রান্ত কেলেঙ্কারির কারণে ২০১৯ সালের জুলাইতে বদলি করা হয় সদর থানার সাবেক ওসি কামরুল ইসলামকে।