নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের নামফলক ভেঙ্গে দেয়ার ঘটনায় মহানগরীর প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাইলে জেলার প্রতিটি ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী নিয়ে পুরো নারায়ণগঞ্জকে অচল করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত।
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ থেকে একই সঙ্গে আওয়ামীলীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জাতীয় পার্টির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার এমন আচরণের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছে মহানগর আওয়ামীলীগের নেতারা।
১৮ নভেম্বর বুধবার ১৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের কার্যালয় থেকে মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাতের নেতৃত্বে তাৎক্ষনিক মিছিল বের করে নেতাকর্মীরা। মিছিলে মহানগর আওয়ামীলীগের কার্যকরী সদস্য সাখাওয়াত হোসেন সুমন, সাব্বির আহম্মেদ সাগর, নূরুজ্জামান, আরমান সহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মিছিল শেষে সমাবেশে জিএম আরাফাত বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদর্শে রাজনীতিবিদ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। তাকে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন, আজ তিনি চেয়ারম্যান হয়ে পুরো জেলা জুড়ে উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছেন। সেখানে তৃতীয় শ্রেণির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা কিভাবে আনোয়ার হোসেনের নামফলক নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ভাঙ্গিয়েছে? তার এমন দুঃসাহস কিভাবে হয়? এমপি খোকা প্রকাশ্যে চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের কাছে ক্ষমা না চান, তাহলে জেলা জুড়ে প্রতিটি ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা মাঠে নামবে, নারায়ণগঞ্জকে অচল করে দেয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষণ করে জিএম আরাফাত আরও বলেন, আওয়ামীলীগ সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বজার রেখে আনোয়ার হোসেন জেলা পরিষদের অর্থায়নে স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মন্দির, ঘাটলা, রাস্তা-ড্রেন, সড়কের লাইট, ভবন সহ বিভিন্ন উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছেন। এমন উন্নয়নের কারণে লিয়াকত হোসেন খোকার মত তৃতীয় শ্রেণী এমপি তাকে (আনোয়ার হোসেনকে) ভয় পায়। লিয়াকত হোসেন খোকা ক্ষমতার লোভে বিভিন্ন কর্মকান্ড করে যাচ্ছে, সেগুলো ইতিমধ্যে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবার তিনি অপরাধ করে পাড় পেয়ে যাওয়ায় তার অপরাধ দীর্ঘ হচ্ছে। এমপি খোকা কিভাবে আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাম ভেঙ্গে ফেলে? এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি।’
এখানে উল্লেখ্যযে, আগের দিন ১৭ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে সোনারগাঁও জি.আর ইনস্টিটিউশন স্কুল এন্ড কলেজে অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং করোনাকালে শিক্ষার্থীদের বেতন মওকুফের ঘোষণা দেন স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। এর আগে প্রধান ফটকের সামনে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের নামফলক দেখতে পান এমপি খোকা। সম্প্রতি বিদ্যালয়ের বাউন্ডারী ওয়াল ও গেইট নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছিলেন আনোয়ার হোসেন। বিষয়টি নিয়ে এমপি খোকা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কিন্তু সন্ধ্যার পর কে বা কারা আনোয়ার হোসেনের নামফলকটি ভেঙ্গে ফেলে। এর জন্য এমপি খোকার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেন আনোয়ার হোসেন। যদিও এমপি খোকা বিষয়টি অস্বীকার করে মিডিয়াতে দাবি করেছেন মুলত এমপির ডিও লেটারের মাধ্যমেই কাজের বরাদ্ধ আসে। কিন্তু তার নাম নেই।