নারায়ণগঞ্জ মেইল: মহামারি করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি এড়িয়ে কোন প্রকার অপ্রিতিকর ঘটনা ছাড়াই নির্বিঘ্নে শারদীয় দূর্গোৎসব সম্পন্ন করতে পারায় নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ। কোভিড পরিস্থিতির মোকাবেলা করে এবারের দূর্গা পূজার আয়োজন করা অনেকটাই চ্যালেঞ্জিং ছিলো পূজা পরিষদের জন্যে। সকলের সার্বিক সহযোগিতায় সে চ্যালেঞ্জে সফলতা লাভ করায় পরিষদের পক্ষ থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ সমস্ত নারায়ণগঞ্জবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পূজা পরিষদের নেতৃবৃন্দ। বিশেষ করে প্রতিবছর বিজয়া দশমীতে ভোর পর্যন্ত প্রতিমা বিসর্জন করা হলেও এবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার মধ্যে তা সম্পন্ন করে ফেলার জন্যে প্রতিটি পূজা মন্ডপ কমিটিকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তারা। যদিও বিকেল তিনটার মধ্যে বিসর্জন প্রকৃয়া সম্পন্নের নির্দেশনা ছিলো কিন্তু তা সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত গড়িয়েছে। তবে এ বিষয়ে জেলা পূজা পরিষদ জানিয়েছে, তিনটা পর্যন্ত সময় নির্ধারন করে দেয়া থাকলেও এ সময়টা ছিলো দুপরের খাওয়া দাওয়ার সময়। তাছাড়া এ সময়ের মধ্যে মুসলমানদের জোহর আসর ও মাগরিবের নামাজের সময় হওয়ায় তাদের প্রতিও আমাদের সম্মান প্রদর্শণ করতে হয়েছে। সর্বোপরী স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে এবারই প্রথম সন্ধ্যার মধ্যে বিসর্জন ক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে যা একটি মাইলফলক।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষে সভাপতি দিপক কুমার সাহা ও সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন এক বিবৃতিতে জানান, বিশ্ব্যব্যাপী করোনা ভাইরাসের কারনে এ বছর বেশ কয়েকটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান আমাদের বাতিল করতে হয়েছিলো, কয়েকটি সংক্ষিপ্ত পরিসরে আয়োজন করেছিলাম। শারদীয় দূর্গোৎসব আয়োজন নিয়েও শংকায় ছিলাম আমরা। কিন্তু সরকার ও কেন্দ্রীয় পূজা পরিষদ ৩৩টি নির্দেশনা দিয়ে শুধুমাত্র ধর্মীয় ভাবগাম্ভির্য সহকারে স্বত্তিক পূজা আয়োজন করতে বলে। আমরা পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে সেই ৩৩টি নির্দেশনা প্রতিটি পূজা মন্ডপে পৌছে দেওয়ার পাশাপাশি কোভিড পরিস্থিতিতে কিভাবে পূজা আয়োজন করা যায় তা নিয়ে দফায় দফায় তাদের সাথে বৈঠক করেছি। সকলকে বুঝিয়েছি যে এবার পূজা হবে কিন্তু উৎসব হবে না। আয়োজনের পরিসর যতো পারা যায় কম করতে হবে। আমরা নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ একেএম সেলিম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ একেএম শামীম ওসমানের সাথেও বসেছি। আমরা প্রশাসনের সাথেও বৈঠক করেছি কিভাবে সুষ্ঠভাবে পূজা আয়োজন করা যায়। মাননীয় এমপি মহোদয়গন এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে। তাই তাদের প্রতিও আমরা কৃতজ্ঞ।
এছাড়াও নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি জনপ্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, ফায়ার সার্ভিস, বিআইডব্লিওটিএ, গণমাধ্যম কর্মী, সুশিল সমাজের নেতৃবৃন্দ ও সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ সমগ্র নারায়ণগঞ্জবাসী এবারের শারদীয় দূর্গোৎসবে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। তাই সকলের প্রতি নারায়ণগঞ্জ পূজা পরিষদের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এবং বিশ্ব থেকে এই মহামারির বিনাশ ঘটিয়ে মা আমাদের মাঝে আবার ফিরে আসবেন সে প্রত্যাশায় সকলকে বিজয়ার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।