নারায়ণগঞ্জ মেইল: বিএনপির চরম দুঃসময়ে দলের সাথে করেছেন বেইমানি। দলের নীতি আদর্শ বিসর্জন দিয়ে শুধুমাত্র টাকার লোভে দলের নির্দেশনা উপেক্ষা করায় দল থেকে করা হয়েছিলো বহিষ্কার। বহিষ্কৃত হওয়ার পর দল এবং দলের নেতাকর্মীদের বিপদের মধ্যে ফেলে রেখে উড়াল দিয়েছিলেন মার্কিন মুল্লুকে। সেই লোভী স্বার্থপর আর বেইমান নেতা যখন দলের সুসময়ে দেশে ফিরে আসেন তখন তাকে দেয়া হয় ফুলেল শুভেচ্ছা। যা দেখে ক্ষোভ আর হতাশা প্রকাশ করেছেন দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২২ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলের নির্দেশনা উপেক্ষা করে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছিলেন তৎকালীন জেলা বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। গুঞ্জন আছে তথাকথিত গডফাদার ওসমান পরিবার থেকে কয়েক কোটি টাকা পেয়ে দলের নির্দেশনা অমান্য করে সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন তৈমুর। এ কারণে তৈমুরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিলো।
তৈমুরকে বহিষ্কারের পর দল থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিলো যারা তৈমুরের সাথে নির্বাচনের প্রচারণায় থাকবে তাদেরকেও বহিষ্কার করা হবে। দলের এই নির্দেশনা অমান্য করে তৈমুরের নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির প্রধান হয়েছিলেন তৎকালীন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল। ধারণা করা হয় তৈমুরের পাওয়া সেই কয়েক কোটি টাকা থেকে উচ্ছিষ্ট ভোগের লোভে দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছিলেন এটিএম কামালএবং যথারীতি দল থেকে বহিষ্কৃত হন। বহিষ্কার হওয়ার পরে তরমুজের দেয়া সেই টাকা নিয়ে উড়াল দেন স্বপ্নের দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।
বিএনপির নেতাকর্মীরা যখন আওয়ামী লীগ ও পুলিশের নির্মম নির্যাতনের ভয়ে দিশেহারা তখন এটিএম কামাল আমেরিকায় বিলাসী জীবনযাপন করতেন, কখনো নেতাকর্মীদের দুঃখ বোঝার চেষ্টা করেননি। দলীয় নির্দেশনা ভঙ্গের অভিযোগে এর পরে আরো অনেক নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত হয়েও তারা দলের কর্মসূচি পালন করেছেন, দল ছেড়ে দেশ ছেড়ে চলে যান নি কিন্তু এটিএম কামাল ব্যক্তিগত স্বার্থ সিদ্ধি করে দলের এবং দেশের মায়া ত্যাগ করে আরাম আয়েশের জীবন বেছে নেন।
এর প্রায় তিন বছর পরে দল যখন দুঃসময় কাটিয়ে ক্ষমতার দোরগোড়ায় তখন দুঃসময়ে বেইমানি করা এটিএম কামালের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। বহিষ্কার প্রত্যাহারের পর দেশে ফিরেছেন কামাল। কামালের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারে ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীদের মনের সেই ক্ষোভ আরো বেড়ে যায় যখন এক শ্রেণীর লোকজন সেই বেইমানি করা নেতাকে ফুল দিয়ে বরণ করে দলে জায়গা করে দেয়।
ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা জানান, নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সবচেয়ে বিতর্কিত চরিত্রের নাম এটিএম কামাল। কর্মীবিহীন ওয়ান ম্যান শো এই নেতা দীর্ঘদিন নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র ঘাড়ে বোঝা হয়ে চেপেছিলেন। তার কাছে রাজনীতি হচ্ছে আয়ের উৎস। কারণ তার ব্যক্তিগত কোনো ব্যবসা বা চাকুরী ছিলো না। দীর্ঘদিন এই রাজনীতি করেই তার সংসার চলেছে। সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তৈমুরের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা বাগিয়ে নিয়ে আমেরিকায় স্থায়ী হন তিনি।
