জটিল সমীকরণে নারায়ণগঞ্জ-৫

নারায়ণগঞ্জ মেইল: জটিল হয়ে উঠেছে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সমীকরণ। বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি থেকে শিল্পপতি প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে অস্বস্তি বিরাজ করছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সুরা সদস্য মাওলানা মইনুদ্দিন আহমেদ এবং বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টি নেতা মাকসুদ হোসেন স্বতন্ত্র নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ায় জমে উঠেছে এই আসনের নির্বাচন। তাছাড়া আরো রয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের মুফতি মাসুম বিল্লাহ এবং গণসংহতি আন্দোলনের তরিকুল সুজন। তাই বলাই যায় একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই অপেক্ষা করছে এই আসনের ভোটারদের জন্য।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আসন নারায়ণগঞ্জ-৫। নারায়ণগঞ্জের সদর এবং বন্দর থানা নিয়ে গঠিত এই আসনের দিকে সব সময় দৃষ্টি থাকে সবার। এবারও এই আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান এবং সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু। এই আসনে দীর্ঘ সময় নেতাকর্মীদের নেতৃত্ব দিয়েছেন এই দুজন। সরকার বিরোধী আন্দোলনে রাজপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি সাংগঠনিকভাবে দলের ভিত্তিকে মজবুত রেখেছেন এই জুটি।

তাই আসন্ন নির্বাচনে এই দুজনের যেকোনো একজনকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে ধানের শীষের কান্ডারী হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির তৃণমূল। কিন্তু রাজপথের সাখাওয়াত-টিপুর বদলে শিল্পপতি মাসুদুজ্জামান মাসুদকে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন দেয়ায় হতাশ বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা। তাই আগামী নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপি’র পুরোপুরি সমর্থন ধানের শীষের প্রার্থী পাচ্ছে না সেটা একপ্রকার নিশ্চিত।

অপরদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী মাওলানা মঈনউদ্দিন আহমেদ দীর্ঘদিন যাবত এই আসনে জনসংযোগ করে আসছেন। সদর এবং বন্দরের প্রায় প্রতিটি এলাকায় তিনি একাধিকবার যাচ্ছেন এবং সাধারণ মানুষের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন। নির্বাচনী প্রচারণায় যেকোনো প্রার্থীর চেয়ে তিনি এগিয়ে আছেন।

বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির নেতা মাকসুদ হোসেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে বন্দরে মাকসুদের রয়েছে একটি নিজস্ব ভোট ব্যাংক। তাছাড়া জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামীলীগের ভোটগুলো তার জন্য রিজার্ভ। তাই এই আসনে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হিসেবে দেখা দিতে পারেন মাকসুদ।

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুফতি মাসুম বিল্লাহ বেশ জনপ্রিয়। ইতিপূর্বে তিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। সংসদ নির্বাচনের জন্যেও তিনি দীর্ঘদিন যাবত নির্বাচনী প্রচার পচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন গণ দাবির পক্ষে রাজপথে স্বেচ্ছা ভূমিকা পালন করে থাকেন তাই ভোটের মাঠে তিনিও একজন হেভিওয়েট প্রার্থী।

নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনে গণসংহতি আন্দোলনের দলীয় প্রতীক মাথাল মার্কায় নির্বাচনী প্রচার প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন। বাম রাজনীতিবিদের একটা বড় অংশ রয়েছে তার পাশে। তাছাড়া দীর্ঘদিন সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় নারায়ণগঞ্জের সুশীল সমাজেও তার রয়েছে ব্যাপার জনপ্রিয়তা। তাই আসন্ন ভোট যুদ্ধে তিনিও যে একটা বড় প্রভাব বিস্তার করবেন তা নির্দ্বিধায় বলে দেয়া যায়।

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ