নারায়ণগঞ্জ মেইল: নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ গিয়াসউদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। পিআর পদ্ধতি হচ্ছে নির্বাচন নিয়ে সেই নতুন ষড়যন্ত্রের ফাঁদ। একটা দল ৫ আগস্টের পরে মনে করেছিলো তারা ক্ষমতায় চলে এসেছে কিন্তু যতো দিন যাচ্ছে ততই তারা বুঝতে পারতেছে ভোটের মাঠে তাদের গ্রহণযোগ্যতা নেই। তাই তারা পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার জন্য এই নতুন নাটক সাজিয়েছে। কিন্তু বাংলার মানুষ নির্বাচন নিয়ে আর কোনো ষড়যন্ত্র হতে দেবে না। আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবো।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আওতাধীন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির অন্তর্গত ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শনিবার ৫ জুলাই বিকেলে চৌধুরীবাড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
গিয়াসউদ্দিন বলেন, যারা সংস্কারের নামে নির্বাচন বিলম্বিত করতে চাইছেন তাদেরকে বলবো, এই সংস্থার কাজ আরো দুই বছর আগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১ দফা ঘোষণার মাধ্যমেই শুরু করে দিয়েছিলেন। আপনারা যা ২০২৫ সালে করতে চাইছেন, তা আমাদের নেতা তারেক রহমান আরো দুই বছর আগেই শুরু করেছেন। ৫ আগস্টের পর গত এক বছরে অনেক সংস্কার হয়েছে। আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতা পালিয়ে গিয়েছেন। যারা পালাতে পারেননি তাদের অনেককেই গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রশাসনের যেসব কর্মকর্তা কর্মচারী শেখ হাসিনার দোসর ছিলো তাদেরকে চাকরীচ্যুত করা হয়েছে। নতুন অনেকগুলো সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে। এখন একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন সে সকল সংস্কার কাজের গতিকে আরো ত্বরান্বিত করবে। তাই আমি বলবো নির্বাচন নিয়ে কোন তালবাহানা করবেন না।
তিনি আরো বলেন, গত জুলাই আগস্টে ৩৬ দিনের আন্দোলনে এদেশের মানুষ প্রমাণ করে দিয়েছে কোনো স্বৈরাচারী সরকার আর এদেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। কেউ যদি জোর করে ক্ষমতা দখল করতে চায় তাহলে তার পরিণতি সেই খুনি হাসিনা সরকারের চেয়েও ভয়াবহ হবে। তাই সবাই সতর্ক হয়ে যান। এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলবেন না।
গত তিনটি নির্বাচনে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারে নাই। তিনটি অবৈধ নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার গ্রেফতার হয়েছেন এবং তারা স্বীকার করেছেন দিনের ভোট রাতে দেয়া হয়েছিলো। মানুষের ভোটের অধিকারকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছিলো। মানুষ তার পছন্দমত প্রার্থীকে ভোট দিতে চায়। পিআর পদ্ধতি কথা এদেশের মানুষ কখনো শোনেনি। এই নিয়ম সম্পর্কে এদেশের মানুষের কোন ধারণাই নেই। এই নিয়ম ইহুদী-খ্রিস্টান রাষ্ট্রগুলোতে চলমান আছে। আর বাংলাদেশ হচ্ছে একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র। এখানকার মানুষ ধর্মভীরু। এখানে ইসলামী আইন-কানুন চালু না করে জোর করে নতুন কিছু চাপিয়ে দেয়া উচিত হবে না। এই সরকার প্রথমে বলেছিলো ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেবে। পরে বলেছে ফেব্রুয়ারিতে দেবে। এখন যদি নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রকার ছলনার আশ্রয় নিয়ে অধিক সময় ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করে তাহলে দেশের মানুষ আবার রাজপথে নামতে বাধ্য হবে। তাই সুষ্ঠ অবাধ নির্বাচন সকল সমস্যার সমাধান দিতে পারে। দেশের বাকি সংস্কারগুলো নির্বাচিত সরকার এসে সম্পাদন করবে।
৮ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি ডিএইচ বাবুলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন স্বাধীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আয়োজনে আরো উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবার মাসুকুল ইসলাম রাজীব, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন, সহ-সভাপতি জিএম সাদরিল, আসলাম হোসেন, আব্দুল হালিম জুয়েল, মহানগর যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক মমতাজ উদ্দিন মন্তু, মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সাগর প্রধান, যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ অপুসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।