এবারের দূর্গোৎসবে কিশোর গ্যাংয়ের দিকে বাড়তি নজরদারী থাকবে: এসপি

নারায়ণগঞ্জ মেইল: আসন্ন শারদীয় দূর্গোৎসব সফলভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে মত বিনিময় সভা করেছেন নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম। সোমবার ১২ অক্টোবর সকালে জেলা পুলিশ লাইন্সে এ মত বিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

মত বিনিময় সভায় পুলিষ সুপার জায়েদুল আলম বলেন, নারায়ণগঞ্জ সাম্প্রদায়ীক সম্প্রীতির শহর। এ শহরের রয়েছে সুবিশাল ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রাখতে আসন্ন শারদীয় দূর্গোৎসব সফলভাবে আয়োজন করতে আমরা বদ্ধ পরিকর। নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। সেই সাথে করোনা মহামারির সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিত করার বিষয়েও যত্নবান থাকবে পুলিশ সদস্যরা।

এসপি আরো বলেন, আসন্ন শারদ উৎসবে কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে আমাদের বাড়তি নজরদারী থাকবে। কোথাও কোন পূজা মন্ডপে যাতে বখাটে ছেলেরা কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সে লক্ষ্যে নিয়মিত পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোষাকের পুলিশ সদস্যরাও তৎপর থাকবে। যে কোন প্রকার অপ্রিতিকর ঘটনা প্রতিরোধে আমরা সার্বক্ষণিক আপনাদের সেবায় নিয়োজিত থাকবো।

এ সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন আসন্ন শারদীয় দূর্গাপূজার সার্বিক দিক তুলে ধরে বলেন, এবার পূজা হবে, উৎসব হবে না। শারদীয় দূর্গা পূজা আয়োজনে নারায়ণগঞ্জের মন্ডপগুলোতে যে সকল সমস্যা রয়েছে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। এবারের পূজায় সকলকে কোভিড-১৯ থেকে রক্ষার জন্যে সকলে সচেতন থাকতে হবে এবং অতিরিক্ত জনসমাগম পরিহার করতে হবে। কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে এবারের দূর্গা পূজা পালনের বিষয়ে ২৬টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মেনে সকলে দূর্গা পূজা আয়োজনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। অনেক মন্দির কতৃপক্ষ শংকায় ছিলেন এবারে পূজা অনুষ্ঠিত হবে কিনা। আমাদের কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ সরকারের সাথে আলোচনা করে পূজা আয়োজনের বিষয়ে নিশ্চয়তা দিয়েছেন তবে সেই সাথে ২৬টি নির্দেশনাও দিয়েছেন। আমাদের সকলকে সে নির্দেশনাগুলো কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।


তিনি আরো বলেন, মন্ডপগুলোতে বাদ্য বাজনার ব্যবস্থা রাখা যাবে না, কোন প্রকার অতিরিক্ত লাইটিং থাকবে না। প্রতিটি মন্ডপে স্বাস্থ্য বিধি মেনে শুধুমাত্র ধর্মীয় অচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পূজা পালন করতে হবে। প্রতিমার আয়তন যাতে কোনভাবেই তিন ফুটের বেশী না হয় যাতে করে ৫জনে মিলে উঠিয়ে নেয়া যায়। প্রতিটি মন্ডপে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। আরেকটি বিষয়ের দিকে নজর রাখতে হবে আর সেটা হলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে কোন প্যানিক সৃষ্টি করা যাবে না। কোথাও কোন সমস্যা তৈরী হলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন, প্রয়োজনে নিকটস্থ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন। কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দিয়ে সাম্প্রদায়ীক সম্প্রীতি কোনভাবেই নষ্ট করা যাবে না।


করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকটি ধর্মীয় উৎসব যেমন মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দের পূণ্যস্নান, জগন্নাথদেবের রথ যাত্রা ও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীর আয়োজন সীমিত আকারে পালিত হওয়ায় হিন্দুদের সর্ব বৃহত ধর্মীয় আয়োজন শারদীয় দূর্গা পূজা আয়োজন নিয়ে যারা শংকিত ছিলেন তাদের সেই শংকা দুর হয়েছে। তবে অবশ্যই সকলকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে এবং অবশ্যই সন্ধ্যার আলো থাকতে থাকতেই বিজয়া দশমীর প্রতিমা বিসর্জন করতে হবে।


মত বিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দিপক সাহা, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদিপ কুমার দাশ, মহানগর পূজা পরিষদের সভাপতি অরুন দাশ, সাধারণ সম্পাদক উত্তম সাহা, জেলা পূজা পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সাংবাদিক উত্তম সাহাসহ বিভিন্ন থানা ও উপজেলা থেকে আগত পূজা পরিষদ নেতৃবৃন্দ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

নারায়ণগঞ্জ মেইলে এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।

সর্বশেষ